হারিয়ে গেছি হারিয়ে গেছি হারিয়ে গেছি ওরে, হারিয়ে গেছি অন্ধরাতে শিশির ভেজা ভোরে । হারিয়ে গেছি ভোরের আলোয় আজকে সারা দিন, হারিয়ে গেছি রাতের কালোয় বাজছে সাপের বীণ। হারিয়ে গেছি রক্ত লালে হারিয়ে গেছি ভাই, হারিয়ে গেছি শূন্য মাঝে আর যে আমি নাই ।
আজ থেকে হিসেবের খাতা খুললাম। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের লেনদেন নিয়ে এখানে লিখব।
আমরা কারও কাছ থেকে কি পেলাম ,আমাদের কাছে কে কি পায়,ভালবাসা হিংসা রাগ মমতা এর লেনদেন, মানব সভ্যতা উন্নয়নে যারা অবদান রেখেছে তাদের সাথে লেনা দেনা সবকিছু নেগেটিভ বা কখনো পজেটিভলি দেখব। নেগেটিভকে উল্টিয়ে দেখলেই আপনি পজেটিভটাকে খুঁজে পাবেন।
(লেখার ভাষা এবং প্রকাশভঙ্গি এর জন্য কিছু মনে করলে আমার হিসেবের খাতায় আপনাকে মাইনাস দিয়ে দিব। )
প্রথমে আসি লেখালেখি নিয়ে, ছোট বেলায় লিখতে গিয়ে ইচ্ছা করে পেন্সিল ভাঙ্গেনি এমন মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। আদি মানুষ তো মুখে মুখে কথা বলত,নো কাগজ কলম।
তাদের লেখালেখির দরকার ছিলনা। কত সুখ ছিল তাদের। পাথরে পাথরে গুহার ভিতরে কত মনের কল্পনা মিশিয়ে আলপনা আঁকত তারা। সিংহের হাড্ডির কিছু অংশ খেত আর কিছু অংশ দিয়ে মনের সুখে ছবি আঁকত তারা।
গ্রীকের অতি পন্ডিতরা যেদিন থেকে প্যাপিরাসে লেখালেখি শুরু করল সেদিন থেকে মানব সভ্যতার মৃত্যু শুরু হল।
আর দুজন চীনা ভদ্দোলোক এসে মানব সভ্যতার মৃত্যুর আগুনে খাঁটি বাঘাবাড়ির এক নম্বর গাওয়া ঘি ঢেলে গেল। তাগো নাম হইল T’sai-Lun এবং Tien-Lcheu . প্রথম জন কাগজ এবং পরের জন কালি আবিষ্কার করছে বলে শুনা যায়।
১৮৮৪ সালে নিউ ইয়র্ক এর লুইস ওয়াটার ম্যান ঝরনা কলম আবিষ্কার করেন। ইন্সুরেন্স এ চাকরি কইরা তোমারে কে কইছে আধুনিক ফাউন্টেন পেন তৈরি করবার?নামেও ওয়াটার কামেও ঝরনা ,কি সুন্দর মিল!!!
Laszlo Biro আর John Loud জোরে চিল্লাইয়া কইলো আমরাও আসছি সভ্যতার উপর বলপেনের কালিমা লেপন করবার জইন্য। বলপেন আবিষ্কার কইরা তারা আমাগো সমস্যা আরও বাড়াইয়া দিছে।
রবীন্দ্রনাথ আর কাজী নজরুলের সাথে আমার শত্রুতা সেই ক্লাস ০(শূন্য) থেকে। প্রত্যেক বছর পাশ করি আর ভাবি এবার বুঝি মুক্তি পেলাম, পাইনা!পরে রাগ কইরা গল্পগুচ্ছ পুরাই পইড়া ফালাইছি। নজরুলের কবিতা পড়লে ডর লাগে। সবকিছু ভাইঙ্গা ফালাইতে মঞ্চায়।
আহারে,রবি বাবুর “শেষের কবিতা” একখান কবিতার বই ই।
দারুন,ফাস্ট ক্লাস। প্রত্যেক কবিতা পড়ছি আর দুইঘন্টা করে কাঁদছি। মনে হয় ঠাকুর সাহেব দুই হাত,পা, মুখ সব দিয়াই লেখত। এত কিছু রাগ কইরা পড়লাম তারপরও শেষ হয়না ক্যা?
এই বিজ্ঞান এর কাগজ ,কলম আবিষ্কারের কারনেই আমাদের এত দুর্গতি। এগুলো আবিষ্কার না হলে পরবর্তি অনেক আবিষ্কার হইত না; আর আমি এতক্ষনে হয়তো কোন বড় বটগাছের নিচে শুয়ে মনের আনন্দে বাঁশি বাজাতাম আর বটের পাতার মধ্যে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোন কিশোরীর আবয়ব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতাম।
আমার আবিষ্কার ছিনতাইঃ
ছোটবেলায় জ্যামিতি বক্সের সাথে আমি আতশ কাচ পাই। এর ব্যবহার না জানলেও একদিন আমি আবিষ্কার করি রোদ্রের আলোতে এটা ধরলে আলোকে একপাশে মাঝখানে নিয়ে আসে এটি। গরম হয়ে যায়,হাতের চামড়া পুড়ে যেতে থাকে।
তখন আমার চির শত্রু পিপড়াদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাই এ নতুন আবিষ্কার। এক একটা পিপড়া মরে যায় আর আনন্দে আমার বুক ফুলে উঠে।
তখন অবুঝ ছিলাম বলে একাজ করেছি। আজ যখন বিশ্বে ক্ষমতাসীনদের হাতে প্রতিপক্ষ পিপড়ার মত মারা যায় তখন মনে মনে ভাবি তারা কি অবুঝ ?আমি হিসেব মেলাতে পারিনা। হিসেবের খাতা বন্ধ করে কয়েক মিনিট ছলছল করে তাকিয়ে থাকি লাল খাতাটার দিকে। পিপড়াও লাল,রক্তও লাল,আর লাল আমার হিসাবের খাতা। কিন্তু রক্তের মত লাল বাকি দুটো নয়।
ঐ কাঁচ দিয়ে শুকনো পাতা পোড়াই। আমি ভেবেছিলাম এ আবিষ্কার বুঝি আমিই প্রথম করেছি। পরে জেনেছি আর্কিমিডিস নামের এক ভদ্রলোক বহু বছর আগেই আমার আবিষ্কারকে ছিনতাই করেছে।
ঐ ব্যাটা আবার এক নিয়ম আবিষ্কার করে ইউরেকা ইউরেকা করে চিল্লাইছে আর সবাইকে জানাইছে। আরে ভাই আবিষ্কার করছস ভালা কথা কিন্তু মানুষকে জানানোর কি দরকার ছিল।
ফলাফল হিসেবে আমাগো বইতে আরও একটা সূত্র বাড়লো আর সূত্রের অংক যে কোন ভাবে কোন ল এর সাথে মিলায়া কয় কোটি যে বাড়ল তা সুপার কম্পিউটারও যে হিসাব করতে পারব কিনা আমার সন্দেহ।
“যুদ্ধ মানে শত্রু শত্রু খেলা, যুদ্ধ মানেই আমার প্রতি তোমার অবহেলা”
যুদ্ধে তার দেশ হাইরা গেলে তাকে মেরে ফেলা হয়। আমগো কঠিন ফাড়া কাটা যায়। যদিও বিষয়টা খুব হৃদয় বিদারক।
(আজকের মত হিসাব শেষ।
হিসাবে যারা দোষী সাব্যস্ত হইছে তাগোরে প্রথম বারের জন্য ক্ষমা কইরা দিলাম। পরের বার আর কিছু আবিষ্কার করলে রাষ্ট্রপতির কাছে বিচার নিয়া যামু। ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।