শাহিন সরদার (২৫) আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে বেলাপোল থেকে ঢাকায় ট্রাকে মালামাল পরিবহনের কাজেও জড়িত। পরিবহনে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় ডাকাত আমির হোসেনের (২৫) সাথে। আমিরসহ অন্যান্যদের নিয়ে গড়ে ওঠে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। কাজের সুবাদে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয় তাদের।
পরিবহনের কাজের আড়ালে বিভিন্ন কৌশলে মালামাল ডাকাতি করে যাচ্ছিল সংঘবদ্ধ এ ডাকাত চক্র।
তাদের ধরতে গত দু’দিন টানা অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ১৩ আগস্ট ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থানাধীন কুটুরিয়া গ্রামের দেওয়ান মার্কেটের সামনে মজিবুর রহমানের ভাড়াটিয়া সঞ্জিত কুমারের গোডাউন থেকে ডাকাতি করা ১৪২ বেল্ট ভারতীয় উন্নত মানের ও মূল্যবান সিনথেটিক শাড়ি ও ফেব্রিক্স উদ্ধার করে। সেই সাথে একজন ট্রাক ড্রাইভারসহ তিনজন আন্তঃজেলা ডাকাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার করা মালামালের মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
উদ্ধারকৃত মালামালের মালিক বিপ্লব সাহা,
মেসার্স বিশাল ট্রেড সেন্টার, দোকান নং ১৫, ঈশা খাঁ শপিং কমপ্লেক্স, ৯০/৩, কাকরাইল, ঢাকা। এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। সামনে ঈদের বাজারকে টার্গেট করে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিকরা লাখ লাখ টাকার ভারতীয় বিভিন্ন ধরনের শাড়ি-কাপড় আমদানি করে আসছে। এসব মালামালের বেশির ভাগই আনা হচ্ছে যশোরের বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে।
বেলাপোল থেকে ভারতীয় এসব শাড়ি-কাপড় বাংলাদেশে আসার পর এগুলো বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে আমাদানিকারকরা ঢাকায় নিয়ে আসে।
এই সুযোগটিই নিয়ে থাকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা। ঢাকায় আনার পথে ট্রাক থেকে মালামাল সরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তাদের গোডাউনে রেখে দেয়। ডাকাত দলের ওয়াসিম শিকদার (৩০) অপরাধকণ্ঠকে জানায়, বেনাপোল থেকে যেসব ট্রাকে করে ঢাকায় মালামাল আনার জন্য ভাড়া করা হয়; সেসব ট্রাকের ড্রাইভারের সাথে তাদের যোগসূত্র থাকে।
ঢাকায় আসার পথে যেকোনো সুবিধাজনক জায়গায় তারা মালামাল অন্য একটি ট্রাকে সরিয়ে রেখে মালিককে জানায়, ট্রাক থেকে মালামাল চুরি হয়ে গেছে। কিংবা ট্রাক ড্রাইভারকে বেঁধে রেখে ডাকাতরা মালামাল নিয়ে সটকে পড়েছে।
কখনও কখনও তাদের ভাড়া করা ট্রাকটিকে চুরি করে সম্পূর্ণ মালামালও হাতিয়ে নেয়া হয়। মালামাল রাখার জন্যে ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়ায় তাদের নিজস্ব গোডাউন রয়েছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সাথেও মাঝে মাঝে সমঝোতার মাধ্যমে ডাকাতি করা হয়।
গত ৩ মাসে ওয়াসিম শিকদারের গ্রুপ বড় ধরনের ছয়টি ডাকাতি করেছে। ট্রাক চালক হাবিব (২৮) জানায়, এই প্রথম সে ট্রাকে করে ডাকাতির মালামাল বহন করার কারণে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (দক্ষিণ)-এর অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, এরা আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্য। বিভিন্ন সময়ে এরা মামলামাল পরিবহনের সময় ডাকাতি করে থাকে। তাদের সহযোগী ও মদদদাতাদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।