"My hate to Marcius, Where I find him, were it
At home, upon my brother guard, even there
Against the hospitable Canon, would I
Wash my fierce in his heart..."
হঠাৎ এক একটা গান এমনভাবে মাথায় গেঁথে যায় যে কিছুতেই আর যেতে চায় না। গানের কথাগুলোর অর্থও যেন কেমন !সুরের তেমন বিশেষত্বও থাকে না। তবু চলতে ফিরতে সেই গান মাথার ভেতর বাজতেই থাকে। "যদি ভালোবাসো-ও-ও-ও, তোমার পায়ের তলায় কুকুর হয়ে মুখ ঘসি---"! বাসা থেকে বের হয়ে আমি অন্যমনস্কভাবে হাঁটছি। শীতও নেই গরমও নেই,চমৎকার আবহওয়া।
জিনস আর একটা ফতুয়া পরেছি। এই ফতুয়াটা কয়েকদিন আগে হিমি আমাকে উপহার দিয়েছে,খুব সুন্দর আর মোলায়েম। হাঁটতে হাঁটতে আপন মনে গুন গুন করে গাইছি, "যদি ভালোবাসো-ও-ও-ও, তোমার পায়ের তলায় কুকুর হয়ে মুখ ঘসি---"! সংসদ ভবনের পাশ দিয়ে আমি যাচ্ছি আসাদ গেটের দিকে। একটা আইসক্রীমের দোকান থেকে বেছে বেছে দুই বাটি আইসক্রীম কিনলাম। কাউন্টারে টাকা দিতে গিয়ে আমি মনে মনে গাইছি- "যদি ভালোবাসো-ও-ও-ও, তোমার পায়ের তলায় কুকুর হয়ে মুখ ঘসি---"! এই গানটার বাকি কথাগুলো আমি জানি না, আমার জানার দরকারও নেই।
তারপর আমি একটা রিকশা নিয়ে চলে গেলাম হিমির বাড়িতে।
কলিং বেল না টিপে আমি আঙুল দিয়ে টোকা দিতেই হিমির গলা শোনা গেল- হু ইজ ইট ?আমি বললাম, আজরাইল! হিমি দরজা খুলে দিল, আমি ভেতরে ঢুকে পড়লাম। এখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা, সন্ধ্যা হতে অনেক দেরী। এই সময়টায় হিমির বাসায় কেউ থাকে না। হিমির ঘরে ঢুকতেই সুন্দর একটা পারফিউমের গন্ধ পাওয়া গেল।
আমি মনে মনে আর একবার গেয়ে উঠলাম- "যদি ভালোবাসো-ও-ও-ও, তোমার পায়ের তলায় কুকুর হয়ে মুখ ঘসি---"!পাশের রুম থেকে হিমি বলল, একটু বসো প্লীজ আমি গোসল টা সেরে আসি। আমি রান্না ঘরে গিয়ে ফ্রিজ খুলে আইসক্রীমের বাক্সটা দু'টা ঢুকিয়ে রাখলাম। একটা বড় স্প্রাইটের বোতল থেকে খানিকটা চুমুক দিয়ে রেখে,সিগারেট ধরিয়ে বাথরুমের কাছে এসে বললাম- তুমি তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করো,আমি গোসল করবো।
হঠাৎ দেওয়ালে ঝোলানো টেলিফোনটা বেজে উঠলো। আমি কি টেলিফোনটা ধরতে পারি?আমি যে হিমির ঘরে এসে বসে আছি তা কাউকে জানানো উচিত নয় বলেই আমার মনে হয়।
হিমি কি অবস্থায় আছে, এখন বের হতে পারবে?ঘরে টিভি ছাড়া, ন্যাশনাল জিউগ্রাফী চ্যানেলে সাপ নিয়ে একটা অনুষ্ঠান দেখাচ্ছে। এখন আমার সাপ দেখতে ইচ্ছা করছে না। রিমোট টাও দেখছি না !অনেকদিন আগে হিমি আমাকে প্রশ্ন করেছিল- গুল্লু বলত, কাঠঁঠোকরা এত যে ঠোঁকড়ায় তাতে ওর মাথা ব্যাথা হয় না?আমি বলেছিলাম- না, হয় না। কারণ কাঠঠোঁকরার খুলির চারপাশে অনেকগুলো বায়ু প্রকোষ্ঠ আছে, যা নরম কুশনের কাজ করে। হিমি অনেক বুদ্ধিমতি মেয়ে, কিন্তু সে আমার সহজ প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারে না।
আমি হিমির কাছে জানতে চেয়েছিলাম- বলত, পৃথিবীর ওজন কত?হিমি বোকার মতো আমার দিকে চেয়ে আছে দেখে আমি বললাম, আরে বোকা মেয়ে- ৬৬-এর ডানপাশে ২০টি শূন্য বসালে যে সংখ্যাটি হয় সেটাই পৃথিবীর ওজন।
একটা শাড়ি কোনো রকমে গায়ে জড়িয়ে ভেজা চুল নিয়ে হিমি বেরিয়ে এলো। রিসিভারটা হুক থেকে নামিয়ে দু''একটা কথা শুনেই আমার দিকে তাকিয়ে ফিস ফিস করে বলল, নিশি!ওকে এখানে আসতে বলব?আমি মাথা নেড়ে অসম্মতি জানাই। নিশি হিমির বান্ধবী। ফোনটা রেখে হিমি বললো,নিশিকে আগামীকাল আসতে বলেছি।
তুমি গোসল করবে বললে, যাও, চলে যাও। আমার হয়ে গেছে। একটা নীল রঙের তোয়ালে আছে,সেটা ব্যবহার করো। শার্টটা খুলে ফেলে আমি বাথরুমের দরজার কাছে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমাকে একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করি? একজন সদ্য গোসল সেরে বেরিয়েছে, আর একজন গোসল করতে যাচ্ছে, এই অবস্থায় কি চুমু খাওয়া চলে?ঠোঁটে হাসি চেপে রেখে মাথা নাড়িয়ে হিমি বলল, না, একটুও না!আমি প্রায় দৌড়ে এসে হিমিকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তুমি কিচ্ছু জানো না। যারা হিসেব করে চুমু খায়, তারা অতি বদ লোক।
এরপর তো আমার গোসল করার ইচ্ছাটাই চলে যাচ্ছিল, হিমি জোর করে আমাকে গোসল করতে পাঠালো। বাথরুমের দরজা বন্ধ করে আমি চিৎকার করে গাইতে লাগলাম- "যদি ভালোবাসো-ও-ও-ও, তোমার পায়ের তলায় কুকুর হয়ে মুখ ঘসি---"!
আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখি- হিমি চুল আঁচড়ে নিয়েছে, সুন্দর একটা শাড়ি পড়েছে। সাদা'র মধ্যে নীল পাড়, পুরো শাড়িটাতে ছোট ছোট নীল নীল ফুল আঁকা। হিমি তাকিয়ে আছে টিভির দিকে। তার দু'চোখে এক আকাশ বিস্ময়!সাপের অনুষ্ঠান শেষ, এখন দেখাচ্ছে হিমালয় পর্বত নিয়ে একটা অনুষ্ঠান।
আমি চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে বললাম, হিমালয় পর্বতের যে উচ্চতা আছে তা কিন্তু বাড়ছে প্রতিনিয়ত। প্রতিবছর প্রায় চার মিলিমিটার করে বাড়ছে হিমালয়ের উচ্চতা!সমুদ্র সমতল থেকে হিসাব করলে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্ব্বোচ শৃঙ্গ পাকিস্তান ও চীন সীমান্তের কে-টু পাহাড়। এর উচ্চতা ২৮ হাজার ২৫১ ফুট (৮ হাজার ৬১১ মিটার)। ২০০৪ সাল পযন্ত মোট ২২৪৯ জন অভিযাত্রী হিমালয় জয় করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন প্রায় ১৮৬ জন।
হিমি বলল, তোমার জ্ঞানের কথা বন্ধ করো তো !
হিমি জানালার পর্দা সরিয়ে এক ঝাঁক পাখিকে উড়ে যেতে দেখল গন্তব্যে। আমার দিকে তাকিয়ে তীব্র আবেগময় গলায় বলল, দেখো, দেখো- আমার সারা শরীরে রোমাঞ্চ হচ্ছে!আমি হিমির কোমরে হাত রেখে জানালার কাছে দাঁড়ালাম আর বললাম, চলো আমরা ছাদে যাই! তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকব!আজ ঘরে থাকতে ইচ্ছা করছে না!হিমি বলল, তুমি চা আর নুডুলস খেয়ে নাও। আমি চটপট বানিয়ে দিচ্ছি। এই, তুমি আইসক্রীম এনেছো?তোমার ঠিক মনে আছে, আইসিক্রীম আমার খুব প্রিয়!হিমির সারা মুখে একটা ভালো লাগার আবেশ!
"Of one that loved not wisely , but too well:
Of one not easily jealous; but being wrought.
Perplexed in the extreme; of one whose hand,
Like the base Indian, threw a pearl away,
Richer than all his tribe; of one whose subdu'd eyes
Albeit unused to the melting mood...." ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।