রাতের আকাশের নগ্নতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি কিন্তু পারি না মনের আকাশ দেখতে। কোথ্থেকে শুরু করব বুঝতে পাচ্ছি না। তবে মনে হচ্ছে এভাবে আর হয় না।
১৯/১১/২০১০, পূর্ণিমার রাত। ঝকঝকে আকাশ।
ঘন্টা খানেক ধরে গল্প চলছিল। বাগানে হাটতে হাটতে হঠাৎ কি মনে করে একটা ভুল করে ফেললাম। ভুলটা হল আমার কথাকলি, যাকে ভালবাসার কথা জানিয়ে ফেললাম। সেও সায় দিল।
তারপর অনেক সময় পার হয়ে গেল।
একটা একটা দিন যায় আমাদের পাগলামি বাড়ে, যখন তখন ফোনে কথা হয়, ঝগড়া হয়। হুটহাট করে কেটে দিয়ে ফোন অফ। আবার আগ বাড়িয়ে কথা বলা। গান শোনা, কবিতা শোনা.....আরও অনেক কিছু।
এরপর বুঝতে পারলাম, আমার উপর ওর পুরো অধিকার টুকু দেয়া দরকার।
বা আদায় করা দরকার। নয়ত আমি আর টিকে থাকতে পারব না। এভাবে আর চলা যায় না। এই এতো টুকুতেই সব এলোমেলো লাগে ।
আরও কিছুদিন পর কিছু না ভেবেই বলে বসলাম, আমার সাথে বিয়ে বসবে? যে কোন মেয়ের ধাক্কা লাগার কথা।
কিন্তু ও অন্যরকম। এপাশ ওপাশ করে কথা বলে জানাল," না, সম্ভব না"। তখন মনে হল, সে আমাকে নিয়ে খেলছে। খেলছে শব্দটা একটা ছেলের বিপরীতে একটা মেয়ের জন্যেই মানায়। কিন্তু আমার মনে হল, আমাদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা হয়েছে উল্টো ।
পরে বুঝলাম, তা হয়ত আমার ভুলও হতে পারে। মানসিক ভাবে হোচট খাবার জন্যে হতে পারে।
ভালবাসার পরীক্ষায় আমি কখনও হারিনি ওর কাছে। কিন্তু শেষ মেষ আমিই হেরে বসে আছি তা বুঝতে পারিনি। নিজেকে সামলে সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, অন্য একটা পুরুষ কে গ্রহন করতে পারবে? তুমি কি সে তো তা বুঝবেনা।
এ যুগের ছেলেরা আমার মত অত ভাববে না; ভাবে না। তখন উত্তরে যা শুনেছিলাম, তা বাংলা সিনেমার মত।
শেষ মুহূর্তে আবারও বলেছিলাম, আমাকে ভুলতে পারবে? ও বলল, "না পারব না"। শুধু এটুকুর জন্যেই আমার কেন যেন মনে হল, আমার নিখাঁদ ভালবাসা স্বার্থক।
এরপর একটা একটা করে নির্ঘুম রাত কাটে আমার।
অফিসে বসে বসে ঝিমাই। কাপের পর কাপ চা খাই। আমি এজ ইউজিয়াল ফোন দেই। ফোন ধরে না, ধরলেও মিথ্যা বললে কেটে দেয়। আমি মেনে নেই।
এরপর আমাকে ফোন করতেই বারণ করল।
এদিকে আমার গলায় দলা পেকে ওঠে, কথা বের হতে চায় না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে । শেষে সিদ্ধান্ত নিলাম, ওকে হেল্প করব। তবে অন্যভাবে যাতে বুঝতে না পারে।
ভাবলাম আমি কষ্ট পাচ্ছি ঠিক আছে, সেও তো মানুষ, সেও এতটুকু হলেও কষ্ট পাচ্ছে। হয়ত আমাকে ভুলতে অনেক কষ্ট হবে।
অনেক অনেক ভেবে ওকে আমার ফেসবুক আইডি+পাসওয়ার্ড দিলাম। আমি নতুন নতুন অচেনা মেয়েদেরকে ফ্রেন্ড লিস্টে এড করলাম। রোমান্টিক স্ট্যাটাস, ম্যাসেজ লিখতে থাকলাম।
ব্যপারটা দাঁড় করাতে চাইলাম আমি লুইস। আমি যেন এরকমই। ওকে হারিয়ে যেন আমার কোন দু:খ নেই। সব ঠিক ঠাক চলছে।
১৭ দিন পর আবার ফোন পেলাম।
আমাকে ফোন করতে বলল। গলার কাছে আবার দলা পেকে উঠল। অপেক্ষার সময় আর শেষ হয় না।
শেষে মিসকল পেলাম। কল ব্যাক করলাম।
অনেক কথা জমে আছে। কিন্তু কোন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে শুধু শুনে যাই, শুনতে শুনতে হারিয়ে যাই। ওকে নতুন করে ভালবাসি। যখন খেয়াল হল, তখন কেন যেন মনে হল, গত ৪ বছর সময়ে ৩ বার যে মেয়েটির সাথে দেখা করেছি, কথা বলেছি, সে মেয়েটি যেন এখনকার এই মেয়েটি নয়।
এ যেন অচেনা কেউ। কিন্তু আমার ভালবাসা সব ঐ মেয়েটির জন্যে, যাকে একদিন আদর করে নাম দিয়েছি কথাকলি। সে জানেনা এখন আমার কি অবস্থা। আমিও জানাতে চাই না। কারন আমি একজন হেরে যাওয়া মানুষ।
কথাকলি: আজ আমি যা করছি, সব তোমার জন্যে, তোমার মনে ঘৃনা জন্মাবার জন্যে। আমাকে ঘৃনা না করলে তুমি আমাকে সহজে ভুলতে পারবে না। আমাকে ভুলতে না পারলে অন্য যে সংসারে তুমি যাবে, সেখানে মানিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হবে। আমার কষ্ট আমার সহ্য হবে, তোমারটুকু নয়। তোমাকে কি পরিমান যে ভালবাসি, বলে বোঝাতে পারব না।
তুমি আমার এই ভালবাসাকে পাগলামি বলো না। তোমাকে ভালবাসি বলেই আমার এ পাগলামি। এই পাগলামিতে ভেঙ্গে পড়েও সুখি হব। আমার সুখের সংজ্ঞা তোমার চেয়ে ভাল কেউ জানে না।
যদি কখনও আমার এই লেখা পড়ো সেদিন আমাকে ক্ষমা করো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।