দেশ সামসুদের নিয়েই গঠিত। তাই সামসুদের নিয়ে ভাবতে হবে, সামসুদের কথা শুনতে হবে । বাংলাদেশে মানুষের জীবনের, রক্তের দামটা কতো কম, এ বছর যেন বার বার করে সেটা আমাদের স্মরণ করতে হচ্ছে। তাজরিন গার্মেন্ট্সে ১০৮ জন মানুষকে খুন করার পরে লিখেছিলাম, আমাদের কাছে এসব এতই সামান্য ঘটনা যে লাশ প্রতি ক্ষতিপূরণের আনফিশিয়াল লিস্ট পর্যন্ত রেডি থাকে (লাশপ্রতি একটা ছাগল, কিংবা ২০ হাজার টাকা মাত্র, এরকম)।
এবারে এক নিমেষে ৮০ জনের লাশ আর আরো কতো শত শত সম্ভাব্য মৃত্যুর ঘটনায় মনে হচ্ছে, বরং উল্টাটা চিন্তা করা যেতে পারে, অনেকটা এরকম -
- গার্মেন্ট্স মালিকের ঝকঝকে পাজেরো - ২০টি লাশ।
- ভবন মালিকের প্রাসাদ - ৪০ টি লাশ।
- গার্মেন্ট্সের এই হতভাগ্য শ্রমিকদের হাতে তৈরী একেকটি শার্ট - ১টি লাশ।
- বিজিএমইএ ভবন - ১৫০০ লাশ।
- মন্ত্রীদের চাঁদা ফান্ড/গদি - ২০০০ লাশ।
- দেশের শনৈ শনৈ উন্নতি, চায়ের কাপে আমাদের ঝড় তোলা, ফেইসবুকে ফাটিয়ে ফেলা - ১০ হাজার লাশ।
প্রতি ২/৩ মাসে এরকম একটা ঘটনা ঘটবে, আমরা দায়সারাভাবে ফেইসবুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে এই শ্রমিকদের নিয়ে আহাজারি করবো, বলবো, "আর কতো?", কিন্তু পরে সুযোগ পেলেই গার্মেন্ট্সের শ্রমিকদের ভুলে যাবো, কিংবা অর্থহীন বিষয়ে তর্কে-বিতর্কে কাটাবো সারাদিন। আর এই লাশের পাহাড়ে তৈরী হবে প্রাসাদ, কেনা হবে নতুন পাজেরো, গদি, কিংবা উন্নত মধ্য আয়ের একটি দেশের সোনার পাথরবাটি ...
কাজেই দোষটা কার সেটা না খুঁজে আসুন নিজেদের দিকেই দেখি, ভেতর থেকে পরিবর্তন আনি। এই ৮০টা পরিবার, কিংবা ৮০০টা পরিবার রাতারাতি পথে বসে গেলো, এদের জন্য পিটিশনে সাইন করি কিংবা এদের বাচ্চাদের জন্য, এদের জীবনযাপনের জন্য একটা ব্যবস্থা করি।
আর এই মুনাফাখোর গার্মেন্ট্স মালিক, ত্রুটিপূর্ণ ভবনের অনুমোদন দেয়া রাজনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কিংবা দলীয় নেতাদের বলি, আজ রাতে এই কয়েকশ লাশের মিছিলে পারবেন তো ঘুমাতে? কিংবা কাল, অথবা পরশু?
- রাগিব হাসান
মুল লেখাটি দেখতে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।