১. রাজ্জাক সাহেব , "আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না, ওকে আজরাইলের (পুলিশ) হাতে তুলে দিন "। বাংলা সিনেমা'র বহল ব্যবহৃত সেই বাক্যটি ইদানিং কালে এমন রূপ দাবি করে । ছিনতাইকারী'র হাতে পড়লে হয়ত রেহাই মিলে, কিন্তু পুলিশের হাতে পড়লে আর রেহাই নাই। কারণ, ছিনতাই কারী'ও মানুষ, কিন্তু পুলিশ? না, ওরা এখন শুধুই পুলিশ, মানুষ মোটেই নয়।
২. জাতি হিসেবে আমরা কত ভদ্র, চিন্তা করাটাই একটা দুরহ ব্যাপার! জাত ভদ্রলোকইংরেজ রা একজন যুবকের পুলিশের গুলিতে নিহত হবার জের ধরে গত চার দিন যাবত লঙ্কা কান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে খোদ লন্ডন এর বুকে।
অথচ আমাদের দেশে হয়ত প্রতি ১ কিনবা ২ ঘন্টায় একজন অমনতরও ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আমরা পত্রিকা পড়ি, অনলাইন এ বড়জোর একটা মন্তব্য লিখি, ব্লগ এ চিল্লাচিল্লি করি, ব্যাস, ওই পর্যন্তই। এমনকি ফ্যালানি'র মত কাউকে বন্ধু দেশের সীমান্ত রক্ষীরা যখন 'tareget practice' শেষে গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখে , তখনো আমাদের দৌড় ওই পর্যন্তই। লিমন এর পা যায়, মিলন এর জীবন যায়, কাদের ভুলে যায় স্বাভাবিক জীবন-পরিক্রমা , আমরা তবু সেই নির্বিকার।
৩. তবে আমরা নির্বিকার হলেও যার দায়িত্ব সে ঠিকই পালন করে, সাহারা খাতুন আজই নির্দি্ধায় বলে দিয়েছেন " আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো"।
অথচ মিলন এর মা থানায় তার ছেলের লাশ সনাক্ত করেছে ৫ টি লাশ থেকে। কোনো একটা দিনে যদি একটি থানাতেই ৫ টি লাশ জমা হয়, সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এমন পরিতৃপ্তি'র ঢেকুর তোলা অবশ্যই শোভা পায়! অন্য কথায় ডক্টর হাসিনা'র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হবার জন্যে হয়ত এটাই সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। তার আরো কিছু বাণী উল্লেখ না করলেই নয়। যেমন ২৯-০৭-২০১১ তে উনি বলে দিয়েছেন, "সরকার দুর্নীতিমুক্ত!" দুর্নীতিগ্রস্থ কিনবা ব্যর্থ রাষ্ট্রের তালিকায় প্রথম দিকে স্থান যে ঠিক কি করে আসে, সেটার জবাব জানতে ইচ্ছে করে। ফেলানি'র ঘটনায় বন্ধু রাষ্ট্রের মান নিয়ে টানাটানি লাগলে উনি যেমন বলে দিলেন , ‘বিএসএফের হাতে নিহত ফেলানী বাংলাদেশি নয়।
তারা ভারতীয়। তার পরও সরকার পরিবারটির জন্য অনেক কিছু করেছে। আমি নিজে তাদের বাড়িতে গিয়েছি। ’ ঠিক বোঝা গেল না, একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি করে ভারতীয়ের বাড়ি তে গেলেন কোনো রাখ ঢাক ছাড়াই। আর ভারতীয়রা তাদের লোকজন মারলে তার মাথা বেথাই বা কেন হলো।
এক্ষেত্রে আরেকজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী'র উল্লেখ না করলেই নয়, যিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন তার সেই অমর বাণী দিয়ে , " we are লুকিং ফর শত্রু"। তিনিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের তত্ত্বাবধান করেছেন, দেশের সবগুলো বড় বড় দুর্নীতি'র পৃষ্টপোষকতা'র মাধ্যমে। পালাক্রমে ক্ষমতায় আসা দুই দলের একমাত্র সমঝোতা, "আগের সরকার এর দুর্নীতি নিয়ে শুধু গলাবাজি হবে, কিন্তু বিচার নিয়ে মাথা ঘামাবো না' । অলিখিত এই চুক্তি'র মাধ্যমে দুর্নীতি'র চরম নজির স্থাপন করেও আর সব মন্ত্রী রেহাই পেয়ে যায়, সেখানেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ধরা পড়ে যান। (এমনকি, যেখানে কেও কেও পদ ফিরে পায়, তার দুর্নীতিতে বিশেষ পারদর্শিতা'র কারনে, যেমন জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী)
৪. শেখ হাসিনা অপ্রত্যাশিত ভাবে বাবা-মা, ভাই, বোন হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।
গৃহবধু খালেদাও একইভাবে হারিয়েছেন তার স্বামীকে । মেধা'র বিচারে এক কাতারে দাড়ানো এই দুই অর্ধ-শিক্ষিতা বিধবা নারী'র ইতিহাসের আলোকে নিজেদের অবস্থান বিচার করার ক্ষমতা কোনো দিনই ছিল না, হবেও না। খালেদা'র দেশের চেয়ে হাজার গুন চিন্তা জিয়া'র কলঙ্ক তারেক কে নিয়ে, আর এক নাম্বার দেশপ্রেমিক (পাগলে কি না বলে) হাসিনা'র চিন্তা আল্লাহই ভালো জানেন। আমরা তাদের অসময়্চিত অপূরণীয় ক্ষতি'র জন্যে সহানুভূতিশীল, তবে শীগ্রই এই উন্মাদ কিনবা নির্বোধ দুই নেত্রী'র পদলেহন করে যারা আখের গুছিয়ে নিচ্ছে, তাদের হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করতে না পারলে, পরবর্তী প্রজন্ম দুরে থাক, আমাদের কেই আফ্রিকা'র বর্বরতার চেয়েও বড় কিছু দেখে যেতে হবে । পিলখানা হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে ইদানিং কালে পাবলিক এর হাতে নিরীহ মানুষ এর সন্দেহজনিত চলাফেরার জের হিসেবে স্রেফ লাশ হয়ে যাবার মধ্যে দিয়ে এটা প্রতিদিনই স্পষ্ট হচ্ছে।
মানুষ ক্ষমতা নিয়ে দুই বিধবা'র চুল টানাটানি দেখতে আগ্রহী হয়, কারণ তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন, সন্তান লালন, শিক্ষিত করণ অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তারা মরিয়া হয়ে হতাশা প্রকাশ করছে অমানবিক কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে। পরিশেষে আবারও শুরু তে ফিরে যাই.........এক সময় পুলিশ দুষ্কৃতিকারীকে জনগনের কাছ থেকে নিয়ে যেতেন আইনএর আওতায়। আর আজ পুলিশ ভালো মানুষকে ছেড়ে দিচ্ছে গণ-ধোলাই এর আওতায়। তবুও কি আমাদের বোধদয় হবে? যে দুই দলের সহচর রাজাকার কিনবা স্বৈরাচার, আর ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায়ের ৯৯% নেতা দুর্নীতিপরায়ন, আমরা কি তাদের পানেই চেয়ে থাকব? নাকি আমরা এ ব্যাপারে একমত হতে পারি যে, এখন আসলেই সময় হয়েছে , এই রাজাকার, স্বৈরাচার দের সহচর দেশপ্রেমহীন লুটেরাদের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে নতুন কিছু করার ? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।