অনুভুতিহীন জীবনের অপেক্ষায়... http://www.raatmojur.com/
মেয়েটার বয়স টেনেটুনে ষোলো। প্রেমে পড়ার আর চুটিয়ে প্রেম করার বয়স এটা। তবু সে বসে আছে বিষন্ন।
এমন কেন হলো? - নিজেই ভাবে মেয়েটা। প্রেমে সে পড়েছে একেবারে সবকিছুর মাত্রা ভেঙেই।
তাও এমন একজনার, যাকে দেখছে একমাত্র ছবিতেই, একটা মাত্র ছবি, সেও কেমন ঝাপসা গোছের। সামনাসামনি ওকে দেখেনি সে কখনো। শুধুই ফোনে কথা বলা।
মা'র ওপর মনটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। কি দরকার ছিলো বিয়েটা এমন করে ভেঙে দেবার? মা'ই তো বলেছিলো, "ভালো ছেলে, একটু জেনেশুনে নিস"।
তাই তো সে ফোন করে ভাব করে নিয়েছিলো ছেলেটার সাথে। এখন তবে কেন পিছিয়ে আসা?
ওর দোষ ও খুঁজে পায়না আঁতিপাঁতি করেও, খুঁজে পায়না ছেলেটার কোনো দোষও। মাকে কে জানি বলেছে ছেলে নাকি পাগল, তাই বিয়ে বন্ধ। তাইতো ভেস্তে গেল সবটা। এ কেমন নিয়ম? ওর মনের একটুও দাম নেই? ভালোবাসার? আর পাগল বল্লেই হলো! ওতো জানে ছেলেটা পাগল না, একটু বোকা আর ঘরকুনো।
চোখ বেয়ে নিঃশব্দে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু গড়ায় গালে। কোনোদিন বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়নি মেয়ে। পড়াশুনোতে খুব ভালো না হলেও ভালোই। ছেলেদের সাথে আজন্ম আড়ি ছিলো মায়ের কড়া শাসনের কারনে। ছেলেবেলা থেকেই মা ওকে নিজের মত মতন করে গড়ে নিয়েছে।
যেখানে আর দশটা মেয়ে বন্ধু বান্ধবদের সাথে হৈচৈ করে বেড়ায় ও শিখেছে ঘরকন্না। মায়ের আঁচল ধরে বড় হয়েছে ও।
ছেলেটার সাথে মোটে কয়েকদিনের কথা জীবনটা বদলে দিয়েছে ওর। যে মেয়ে শাড়ী পড়তে জানতো না, সে এখন ঘরে শাড়ী পরে ঘুর ঘুর করে। হিন্দি চটুল গান আর বাজেনা ঘরে, প্রেমের উপন্যাসগুলোর ওপর ধুলো জমে।
একদম বদলে গেছে ও, সেই ক'টা দিনেই। আগে খুব ভয় পেতো সবকিছুতেই, মনে হতো ও ছোট্টো মেয়েটা, বড় হয়নি কখনো। আর এখন দৃপ্ত ভাবে দৃড়তার সাথে নিতে পারে সবকিছুই। বৃষ্টি ওর দুচোখের বিষ ছিলো একসময়, এখন ও বৃষ্টিকে ভালোবাসতে জানে।
সেদিন ও জেদ করে বলেছিলো, কাউকে না জানিয়ে ছেলেটার কাছে চলে যাবে।
ছেলেটা বলেছিলো, "তুমি এখনো আঠেরো হওনি। " চোখ ফেটে জল এসেছিলো ওর। গলার কাছে কষ্টের মতন কি যেনো একটা শক্ত দলা পাকিয়ে ছিলো অনেক্ষন।
জানালা দিয়ে বৃষ্টির দিকে তাকায় মেয়েটা। জানে, "সে" এখন ভিজছে কোথাও।
ছেলেটা অসম্ভব বৃষ্টি পাগল। বৃষ্টি হলে ভেজা "ওর" চাই ই চাই। আস্তে এগিয়ে গিয়ে জানালা দিয়ে হাতটা বের করে বৃষ্টির স্পর্শ অনুভব করতে চায় মেয়েটা। মনে মনে ভাবে, ওর হাত ছুঁয়ে ঝরা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো কোনোদিন হয়ত আবার বৃষ্টি হয়ে ছেলেটাকে ছুঁয়ে দেবে।
ছেলেটা তখন সন্ধের আঁধারে জনমানুষহীন একটা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে।
ভারী চশমা খুলে, মেঘলা আকাশের দিকে চেয়ে। টপ টপ করে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা ওকে আচ্ছন্ন করে রাখে। মনে হয় মেঘের চাদরে মুড়ে রাখে ওকে বৃষ্টির ফোঁটারা। আলিঙ্গনের ভঙ্গিতে দু'হাত আকাশের দিকে ছোঁড়ে ছেলেটা, অপেক্ষা করে, বৃষ্টি আর মেঘমালার আলিঙ্গনের জন্যে। ওর শরীর বেয়ে রাস্তায় নেমে যায় বৃষ্টিরা, মেঘমালার অশ্রুফোঁটার দল।
আর ঠিক তখনই সেই মেয়েটা জানালার বাইরে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির ফোঁটা ছুঁয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে প্রার্থনা করে মেঘ হয়ে যাবার। ।
ঠিক দু'বছর পরে ওদের আমরা একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখবো। সেদিন ওদের মনে বিষন্নতা নয়, থাকবে অনাবিল স্বর্গীয় হাসি, আর বৃষ্টি ও মেঘমালার জন্য অনন্ত ভালোবাসা।
বিঃদ্রঃ সময়ের দাবী - সাম্প্রতিক সাধারন মানুষের ওপর পুলিশের নির্যাতন বেড়েই চলেছে... ব্যার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই
* ব্যাজের ইমেজ পোষ্টের চাইতে বড় আসতাছে তাই লিংক করে দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।