ফেলানি হত্যার ঘটনায় করা রিট খারজ!
গতকালের সেই খবরটি
গতকালের অসাধারণ ও অবিশ্বাস্য খবরের পর সেই প্রতারক শিক্ষকের আবার প্রতিবাদ।
--------------------------------------------------------------
দৈনিক মানবজমিনের প্রতিবেদন:
রোববার ‘বৃটিশ ল’ ডিগ্রির ভুয়া ইউনিভার্সিটি’ শীর্ষক মানবজমিন-এ প্রকাশিত রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়েছেন চ্যান্সেরি একাডেমী অব ইংলিশ ল’র অধ্যক্ষ ড. খাজা ইকবাল। প্রতিবাদলিপিতে তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন বৃটিশ কাউন্সিল তাকে প্রায় ৩ মাস আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। জানতে চেয়েছিল তারা কিভাবে ঢাকায় বসে পরীক্ষা নেন। প্রতিবাদলিপিতে ড. ইকবাল বলেন, ২৬ জন শিক্ষার্থীকে যে ডিগ্রি দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা।
এ ধরনের হিসাব হাস্যকর। তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কোন অভিযোগ করার প্রশ্নই ওঠে না। এ কোর্স শেষ করে যে বার-অ্যাট ল’তে চান্স পেয়েছে এ রকম প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। সমাবর্তনের জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন ফি ধার্য করিনি। আমি ইংল্যান্ডের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ছিলাম।
উইলিয়ামসবার্গ ইউনিভার্সিটি পরিচালিত হয় ইউডিপি’র অধীনে। সুতরাং উইলিয়ামবার্গ ইউনিভার্সিটি পেতে হলে ইউডিপিতেই খুঁজতে হবে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রতিষ্ঠানটি উইলিয়ামসবার্গ ইউনিভার্সিটির ইন্টারনাল প্রোগ্রাম চালুর নামে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পরই অনুসন্ধান করা হয়। রিপোর্ট তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ড. খাজা ইকবালসহ তিনজনের সঙ্গে কথা হয়। একাধিকবার তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় উইলিয়ামসবার্গ ইউনিভার্সিটি যে তাদের ইন্টারনাল প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন দিয়েছে সে ধরনের কোন কাগজপত্র আছে কিনা।
তারা কেউ এ ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এছাড়া তারা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে কোন ওয়েবসাইটের ঠিকানাও দিতে পারেননি। আবার বলেছেন, সেপ্টেম্বর থেকে ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে। কয়েক বছর ধরে প্রোগ্রাম চালু করেছেন অথচ তাদের কাছে কোন কাগজপত্র নেই। প্রশ্ন উঠেছে, কিসের ভিত্তিতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ডিগ্রি দিচ্ছেন।
খাজা ইকবাল নিজেই বলেছেন, মোট ৬ হাজার পাউন্ড নেয়া হয় উইলিয়ামসবার্গ ইউনিভার্সিটির কোর্স শেষ করতে। তাদের নিজস্ব খাতে ভর্তির জন্য এককালীন নেয়া হয় ১ লাখ ১০ হাজার এবং প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে। সে হিসাবেই ২৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ কত টাকা নেয়া হয়েছে তার মোট হিসাব দেয়া হয়েছে। তারা নিজেরাই বলেছেন, ২৬ জন শিক্ষার্থীকে সমাবর্তনে ডিগ্রি দেয়া হয়েছে। এছাড়া এবছরও ১৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।
তাদের কথোপকথনের সব বক্তব্য মানবজমিন-এর কাছে রয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ঢাকার বৃটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, এ নামের কোন ইউনিভার্সিটি নেই ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। বৃটিশ সরকারের অনুমোদিত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য জানা যায় এমন লিংকও প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছে। ওই লিংকে গিয়ে ৭৪ পৃষ্ঠার একটি লিস্ট পাওয়া গেলেও উইলিয়ামসবার্গ নামের কোন ইউনিভার্সিটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আর খাজা ইকবাল নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট দাবি করেন।
অথচ সুপ্রিম কোর্টের বার এসোসিয়েশনের তথ্য ও অনুসন্ধ্যান কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি মেম্বারশিপ পেয়েছেন ২০০৭ সালের ২৮শে মার্চ। তিনি কোথায় প্র্যাকটিস করেন, কোন ভবনে বসেন তা জানতে তাকে ফোন করা হলে তিনি উত্তরে বলেছেন, তিনি এখন কোর্টে যান না।
খাজা ইকবালের বিরুদ্ধে জিডি: প্রতারণার অভিযোগে ড. খাজা ইকবালের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় গতকাল রাতে জিডি করেছেন দু’জন শিক্ষার্থী। জিডি নম্বর ১৪৬৬ । থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিউটি অফিসার এএসআই ইকবাল বলেন, রেহেনা আলী ও তার স্বামী রোবায়েত আহমেদ নামের দু’জন শিক্ষার্থী প্রতারণার অভিযোগে জিডি করেছেন। তিনি বলেন, জিডিতে তারা উল্লেখ করেছেন, অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করাকালীন খাজা ইকবাল প্রতারণা করে তার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান। তিনি উইলিয়ামসবার্গ ইউনিভার্সিটির (ম্যানচেস্টার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্নাল প্রোগ্রাম চালু করার দাবি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে নেই বলে তারা উল্লেখ করেছেন জিডিতে। ৩ পৃষ্ঠার জিডিতে খাজা ইকবালের নানা অনিয়ম ও প্রতারণার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।