সিরিয়াস হওয়ার চেষ্টা করছি... আমাদের স্কুলের রাজ্জাক স্যার !
ভয়াবহ এক মারাত্মক স্যার। “সামাজিক বিজ্ঞান” নামের উদ্ভট এক প্রকার বিষয় পড়াতেন।
অবশ্য সম্পর্কে উনি আমার বাবার বাপের বউয়ের বড় ভাই ! এক কথায় দাদু। আদর করে উনাকে আমি মাস্টার দাদু বলেই ডাকতাম।
উনার শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিলও প্রতি ক্লাসের দেওয়া পড়া ঠিকঠাক বুঝিয়ে দিতে না পারলে, বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে হাত দুটিকে গগনের দিকে ঈশারা করে উনার হাতে বেশ কয়েকটা কাঁচা বাঁশের কুঞ্চির ছোঁয়া খেতে হতো।
পূর্বে বিষয়টি আমার এলাকার সাবেক ছাত্রদের মারফৎ জেনেছিলাম।
এবার ক্লাস নাইনে উঠার পর সৌভাগ্য নামের গোপন এক দুর্ভাগ্য হল তার ক্লাস করার। প্রথম ক্লাস হল, পরিচিতি পর্ব এবং পড়া নেওয়ার মধ্যে। দ্বিতীয় ক্লাস এ পড়া দেওয়ার পালা।
পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উনি অল্পক্ষণের মধ্যেই জানতে পারলেন, কারোই পড়া হয় নি।
এতে প্রথমের দিকে অবশ্য আমি মনে মনে খুশীই হইলাম যে, কারোই যখন পড়া হয়নি তখন হয়তো উনি কাওকেই মারবেন না।
ওমা একটু পড়েই উনি সবাইকে বেঞ্চের উপর পূর্বের পজিশন (বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে হাত দুটিকে গগনের দিকে ঈশারা করে) অনুযায়ী দাঁড়াতে বললেন এবং এক এক করে উনার টেবিলের কাছে যেয়ে কাঁচা কুঞ্চির আশীর্বাদ নিয়ে আসতে বললেন।
পর্যায়ক্রমে আসলো আমার পালা। আমি মারের তীব্রতায় কাঁদো কাঁদো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে উনার কাছে যেতেই উনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুই যা ” !
বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে যদি এখন আমি আমেরিকার নাগরিকত্ব পাই, তখন যে খুশী হবো ঠিক তার চেয়েও ঐ সময় খুব বেশী খুশী হয়েছিলাম।
যতই দূর সম্পর্কের হোক, উনি আমার দাদু জন্যই হয়তো ঐদিন উনি আমাকে মারল না !!
আজ চাকরিজীবন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এই রেফারেন্স নামের ব্যাপারটার ছড়াছড়িতে হটাত করেই আজ উপলব্ধি করলাম ঐ দিনের ক্লাসের কথা।
এখন মনে হচ্ছে, ঐটাও বুঝি রেফারেন্স ই ছিলও।
এই রেফারেন্স রাজ্যর বিনাশ ঘটবে কবে, কেউ কি বলতে পারেন ????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।