আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজত বনাম তালেবান

লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। ধার্মিক, পরমতসহিষ্ণু। যে কোনো কারণেই হোক, হেফাজত এখন জাতীয় ফ্যক্টরে পরিণত হয়েছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগসহ ভারতীয় কতিপয় মিডিয়া হেফাজত-বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য ও মন্তব্য প্রচার করে যাচ্ছে। তাদের মতে, আগামী নির্বাচনে প্রগতিশীলতার দাবিদার ‘আওয়ামী জোট’ বিজয়ী না হলে দেশে জামায়াত-হেফাজতের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পাবে।

এতে করে দেশটা তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। জামায়াত ধর্মবাদী দল, তারা গণতন্ত্রপন্থী হওয়ার পরেও তাদের ব্যাপারে দেশে-বিদেশে এক ধরনের এলার্জি আছে। আর ‘আদি পাপ’ স্বাধীনতাবিরোধী তকমা তো আছেই। এর মাঝে হেফাজতের ১৩ দফা ও কার্যক্রমের খবরাখবর বিশ্বমিডিয়ায় যেভাবে প্রচারিত হচ্ছে, তাতে হেফাজতের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক না থাকলেও তারা রাজনৈতিক নিয়ামক হিসাবে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশটা যে গোঁড়া ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে, তাও চাউর হচ্ছে প্রবলভাবে।

হেফাজতে ইসলাম গুটিকয় ধর্ম-সংশ্লিষ্ট দাবি নিয়ে মাঠে নামলেও এ দাবিগুলোর সাথে রাজনীতির মিশেল থাকায় এবং তৃণমূল পর্যায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে তাদের সমর্থন থাকায় এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল, হেফাজত সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যাভিমুখী কোনো সংগঠন নয়। দীর্ঘ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পোড়খাওয়া মানসিকতা তৈরি হয়, তা তাদের নেই। আর তাই দেশে-বিদেশে তাদের বিরুদ্ধে মুখরোচক যে-সব কাহিনি ও মন্তব্য ঘুরে বেড়াচ্ছে, তার বিরুদ্ধে যৌক্তিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চোখে পড়ছে না। হেফাজত-বিষয়ে নেতিবাচক আলোচনাগুলো ঘুরপাক খেতে খেতে জনসমাজের একাংশের মাঝে বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়ে যাচ্ছে।

অবশ্য এটা সত্য যে, হেফাজতভক্ত বৃহত্তর সাধারণ জনসমাজ হেফাজতবিরোধী কোনো প্রচারণায় কান দেয় না, দেবেও না। তবে দেশের বাইরেকার আন্তর্জাতিক ‘রাজনীতি খেলোয়াড় গোষ্ঠী’ এ নিয়ে জল ঘোলা করার সুযোগ পাচ্ছে। সামনে কে ক্ষমতায় আসবে, এখনো নিশ্চিত নয়। কিন্তু হেফাজত-সংশ্লিষ্ট নেতিবাচক আলোচনা-পর্যালোচনা ও প্রচারণার বিরুদ্ধে যুক্তিযুক্ত বিশ্লেষণ ও অবস্থান অবশ্যই দরকার। তাদের স্পষ্ট করে বলা উচিত যে, ধর্মসংশ্লিষ্ট যে-সব বিধিবিধানের কথা তারা বলছেন, তা কোনোভাবেই মানব-জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহের সঙ্গে সাংঘার্ষিক নয় এবং কোনো নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে নয়।

আবার তালেবানি শাসন ও প্রশাসনের ব্যাপারে তাদের অবস্থানটা কোথায়, তাও স্পষ্ট করে বলা দরকার। তাদের নিষ্ক্রিয়তায় বা নীরবতায় অন্য কেউ লাভবান হোক, সে পক্ষের হোক আর বিপক্ষের, তা বড় ব্যাপার নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল নিজেদের পরিচিতিটা স্পষ্ট থাকা। সার কথা হল, তারা যেহেতু ধর্মীয় একটি মহলের প্রতিনিধিত্ব করে, উপরন্তু তাদের আর্থিক অবস্থা নড়েবড়ে, তাই এ ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা তাদের ভবিষ্যৎ-জীবনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্যই নিজেদের অবস্থানকে রাজনীতি-নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ করাটা জরুরি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.