রওয়েতে দু’দফা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দফায় ৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র।
রাজধানী অসলোর কেন্দ্রস্থলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে সন্ত্রাসীরা ঘটিয়েছে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ। এ বিস্ফোরণে মারা গেছে অন্তত ৭ জন। আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন।
আহতদের অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নরওয়ের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
অপরদিকে, অসলো শহরের বাইরে একটি দ্বীপে সরকার দলীয় লেবার পার্টির যুব ক্যাম্পে পুলিশের ছদ্মবেশে গুলি চালিয়েছে এক যুবক। এখানে গুলিতে ১০ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশ।
তবে একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনাস্থলে ২০টির বেশি দেহ পড়ে থাকতে দেখার কথা জানালেও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে এর সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
প্রধানমন্ত্রী ইয়েন স্টোলটেনবার্গ এ ঘটনাকে ‘খুবই গুরুতর’ বলে অভিহিত করেছেন।
নরওয়ের গণমাধ্যমে বলা হয়, ইউটোয়েইয়া দ্বীপে পুলিশের ছদ্মবেশ পরা এক বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে।
পুলিশ ওই বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ককেশীয় বলে জানিযেছে পুলিশ।
দু’দফা হামলার ঘটনার দায়দায়িত্ব কেউ স্বীকার না করলেও পুলিশ বলছে দু’টি সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে।
নরওয়ে পুলিশ বলছে, বোমা থেকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এরই মধ্যে এ হামলার ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক’ বলে অভিহিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর থেকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় নেটওয়ার্কজট দেখা দিয়েছে। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে মোবাইল ফোন কম ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সন্ত্রাসীদের ঘটানো বিস্ফোরণে হতাহত ছাড়াও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের।
যে সরকারি ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রী নিজে অক্ষত আছেন। প্রধানমন্ত্রী তখন ১৭ তলা ্ওই ভবনটিতে ছিলেন না বলে জানিয়েছে একটি সংবাদ সংস্থা । তার মন্ত্রিসভার অনসব সদস্যও অক্ষত ্ও নিরাপদ আছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্টোলটেনবার্গ। তবে তিনি এ মুহুর্তে কোথায় আছেন তা তিনি জানাতে রাজি হননি।
বিস্ফোরণস্থলের পাশেই রয়েছে নরওয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড পত্রিকার কার্যালয়। ্ওই পত্রিকার ক্ষয়ক্ষতির কোনো বিবরণ্ও তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
কর্মকর্তারা বলছেন, কিছু লোক এখনো ্ওই ভবনসহ আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোতে আটকা পড়ে আছেন। সেগুলোতে এখনো আগুন জ্বলছে।
হমলার দায় কেউ এখনো স্বীকার করেনি বা তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে এ ব্যাপারে সন্দেহও করা হচ্ছে না।
হামলার পেছনে কোনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠির হাত আছে কীনা এ মুহূর্তে তা স্পষ্ট নয়।
টিভি ফুটেছে দেখা গেছে, বিস্ফোরণস্থলের চারপাশের রাস্তায় ধ্বংসস্তূপ। এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আেেছ বিধ্বস্ত দরজা জানালার ভাঙ্গা কাচ। ভবনগুলোতে আগুন আর ধোঁয়ার এক নারকীয় পরিবেশ। ফুটেছে একটি দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ছব্ওি দেখা গেছে।
রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে যাবার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় টেলিভিশন এনআরকে। আরও বিস্ফোরণ ঘটতে পারে এ আশংকায় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অকুস্থল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়েছেন।
বড় ধরণের ্ওই বিস্ফোরণে ব্যাপাক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অসলোর পুলিশের সহকারি চিফ কনস্টেবল (সহকারী আইজি) এগিল ভ্রেক্কে বিবিসিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বল্ওে তিনি জানান।
অসলোতে সাংবাদিক আসগির ইউলুন্ড জানান, বিস্ফোরণের সময় রাস্তায় প্রচুর মানুষ ছিলেন।
অফিস শেষে মানুষ বাড়িঘরে যাওয়ার প্রস্তুুত নিচ্ছিলেন। অনেক মানুষের মুখ রক্ত মাখা দেখা গেছে এবং অনেকেই গুরুতর জখম হয়েছেন।
তবে হাতহতের খবর নির্দিষ্ট করে কেউ জানাতে পারেননি।
ওসলোকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ শহরগুলোর একটি বলে বিবেচনা করা হয়। এই বিস্ফোরণের পর এখন সেই সনাতন ধারণা পাল্টাতে হবে বলে উল্লেখ করছেন স্থানীয়রা।
আল কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের অভিজ্ঞতা নরওয়ের থাকলেও এমন হামলার ঘটনা ঘটেনি।
গত সপ্তাহে একজন নরওয়েজীয় আইনজীবী ইরাকি বংশোদ্ভূত একজন ধর্মপ্রচারকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি তাকে জোর করে দেশে পাঠিয়ে দিলে নরওয়ের রাজনীতিকদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরপর দু’টি সন্ত্রাসী হামলার পর গোটা দুনিয়ার চোখ এখন নরওয়ের দিকে।
সূত্র: বিবিসি ও বাংলা নিউজ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।