মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সিপিবির সাধারণ সম্পাদক হায়দার আকবর খান রনো ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ছিলেন বলেই পাকিস্তানি ‘প্রেতাত্মারা’ তাহেরকে বাঁচতে দেয়নি।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি মিলনায়তনের এই আলোচনা সভায় তাহেরের ভাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
তাহের সংসদ আয়োজিত ওই সভায় বক্তব্যে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তাদের বর্তমান আন্দোলনে জাসদ নেতা তাহেরের ‘রক্তঋণ’ স্বীকার করেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর টালমাটাল রাজনৈতিক অবস্থায় ক্ষমতার কেন্দ্রে আসা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার আবু তাহেরকে কথিত সামরিক আদালতে অবৈধ বিচারের নামে হত্যা করেছিলেন বলে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে।
গোপন ওই আদালতে বিচারের পর ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ফাঁসিতে ঝোলানো হয় মুক্তিযুদ্ধে পা হারানো তাহেরকে।
তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, কর্নেল তাহেরকে মেজর জিয়ার নেতৃত্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছিল। এখন এটি প্রমাণিত। তাহেরের বিচার যে একটা সাজানো নাটক ছিল, তা এখন আইনিভাবে প্রতিষ্ঠিত।
“কর্নেল তাহের আজীবন রাজাকার-আল বদর-আল শামসদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছেন, কিন্তু জেনারেল জিয়াউর রহমনের কাছে আমরা পরাজিত হয়েছিলাম। তিনি বাংলাদেশে একটি স্বৈরশাসন সংগঠিত করেছিল এবং তা চাপিয়ে দিয়েছিল।
”
জামায়াতসহ পাকিস্তানি ভাবধারার দলগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য জিয়াকে দায়ী করে ইনু বলেন, “পাকিস্তানিরা যদি জামায়াত-রাজাকারদের জন্মদাতা পিতা হয়, তবে জিয়া ছিলেন দ্বিতীয় জন্মের পিতা। আর খালেদা জিয়া এখন রাজাকারদের মাতার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ”
তাহের সংসদের সহ-সভাপতি হায়দার আকবর খান রনো বলেন, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেনের মতো ইতিহাস কর্নেল তাহেরকেও চিরকাল মনে রাখবে। যারা তাহেরকে খুন করেছিল, তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মা ভিন্ন অন্য কিছু না।
“কর্নেল তাহের ছিলেন প্রগতির ধারক।
প্রতিক্রিয়াশীল জিয়াউর রহমান তাই তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে না, পারেও নি। ”
সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “জিয়াউর রহমান তাহেরকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের ফিরিয়ে আনার জন্য। তাদের এই অপচেষ্টা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ”
জাসদের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য শিরিন আক্তার বলেন, “প্রজন্মের পর প্রজন্ম সত্যের জন্যই লড়াই করে। যে তাহের জনতার সে তাহের মরে না।
”
কথিত ওই আদালতে তাহেরের সঙ্গে কারাদণ্ডে দণ্ডিত অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, “বিচারের অনেক আগেই জিয়াউর রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদণ্ডই দেয়া হবে। পূর্বপরিকল্পিতভাবেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ”
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান বলেন, “যে উদ্দেশ্যে কর্নেল তাহেরকে জীবন দিতে হয়েছিল, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণজাগরণ মঞ্চের সব কর্মী দেশের সর্বত্র কাজ করে যাচ্ছে। ”
আদর্শিক ‘মেরুদণ্ডহীনতার’ কারণে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্তে মেরুদণ্ড সোজা রাখা খুবই জরুরি।
”
সভায় কর্নেল তাহেরকে নিয়ে পুনর্মিত ওয়েবসাইট www.col-taher.com বা www.col-taher.org উদ্বোধন এবং শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।