প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতারণা শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কোটি কোটি টাকার ফাঁদ। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যে দু’টি দেশ তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জানা যায়, নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন নাম দিয়ে সুইস চলচ্চিত্রনির্মাতা ও সংগ্রাহক বার্নার্ড ওয়েবার এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর সঙ্গে সুইস সরকারেরও সম্পর্ক আছে।
পর্তুগালের লিসবনে তারা তাদের প্রথম প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা করেন ২০০৭ সালের জুলাই মাসে। তারা দাবি করেন, প্রায় ১০ কোটি ভোটার এসএমএস ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় ভোট দিয়েছিলেন। ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি সংস্থা অনলাইন ভোটিংয়ের মাধ্যমে ওই তালিকা ২০০৭ সালে প্রকাশ করে। ওই তালিকায় পিরামিড ছিল না। তাতে দক্ষিণ আমেরিকার তিনটি, এশিয়ার তিনটি ও ইউরোপের একটি প্রাচীন নির্মাণকে ভোটাভুটি করে আশ্চর্য বানিয়ে দিয়ে তারা সপ্তাশ্চর্যের পুরনো তালিকাটি বদলে দিতে চেষ্টা করেছিল।
পুরনো তালিকায় ছিল দ্য কলোসাস অব রোডস, গির্জার পিরামিড, ব্যাবিলনের শূন্যোদ্যান, আলেক্সান্দ্রিয়ার বাতিঘর, হ্যালিকার্নেসাসের সমাধি, অলিম্পিয়ার জিউসের মূর্তি এবং ইফেসাসে আর্টেমিসের মন্দির। এই আশ্চর্যগুলোর সব ক’টি এখন আর দেখা যায় না। তাই নতুন তালিকার উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। আর এখানেই নানা প্রশ্ন। পিরামিড বাদ পড়ার পর অনেকেই এটিকে নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
একটি সুপ্রাচীন স্থাপত্য হঠাৎ ব্রাজিলের রিডিমারের মতো একটি কুদর্শন ঢ্যাংগা মূর্তির কাছে বাদ হয়ে যাবে এটা কেউ মেনে নিতে পারেননি। অ্যাংকরভাট নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। অনেকে বলেছেন, চীনের প্রাচীরের চেয়ে অ্যাংকরভাট অনেক বেশি দাবিদার ছিল আশ্চর্য হিসেবে ঘোষিত হওয়ার। প্রথম দিকে, বিভিন্ন ছোট ছোট দেশ এই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে বিরাট আগ্রহ দেখায়। তবে একপর্যায়ে তাজমহল কম ভোট পেয়ে বাদ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে ভারতে এ নিয়ে বিরাট হৈচৈ শুরু হয়।
মিডিয়ায় গুরুত্ব দেয়ায় ভারত থেকে কোটি কোটি ভোট পড়তে থাকে। জর্ডানের রানী নিজে প্রচারণায় নেমে পড়েন এবং ৭০ লাখ লোকের দেশ জর্ডান থেকে এক কোটি ৪০ লাখ ভোট পড়ে পেট্রার পক্ষে। ব্রাজিলের ফোন কোম্পানিগুলো ফ্রি এসএমএস ও কল করতে দিয়ে তাদের রিডিমার স্ট্যাচুকে জিতিয়ে দেয়। ভারতেও একই রকম কাণ্ড হয়। শুরুতে মনোনয়ন দেয়ার সময় ইউনেসকো তাদের সহযোগিতা করলেও পরে তারা ঘোষণা দিয়ে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
ইউনেসকো থেকে বলা হয়, এই প্রতিযোগিতা একটি ব্যক্তিগত উদ্যোগ। এর সঙ্গে ইউনেসকোর কোন সম্পর্ক নেই। প্রথম প্রতিযোগিতার পর প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, এই কাজে আয়োজকদের কোন আর্থিক লাভ হয়নি। বরং তারা এটা বিভিন্ন দাতাদের সহযোগিতায় সম্পন্ন করেছে। তবে তারা নানা রকম প্রচারণা স্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
তারা ভোটের সংখ্যা প্রকাশ করেনি এবং টাকা পয়সার হিসাবের বিষয়েও নীরব ছিল। এর পরপরই তারা শুরু করে দেয় প্রাকৃতিক আশ্চর্য নির্বাচনের প্রতিযোগিতা। শুরুতে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সুন্দরবন- দু’টোই তালিকায় থাকলেও পরে তারা সুন্দরবনকে রেখে কক্সবাজারকে বাদ দেয়। অথচ প্রথমে তারা সুন্দরবনকেই বাদ দিতে চাইছিল। কেননা এটি দু’টি দেশে অবস্থিত এবং দু’টি দেশ থেকে সরকারিভাবে যৌথ মনোনয়ন না পেলে তারা এটাকে তালিকায় রাখবে না বলে জানিয়েছিল।
এটি ছিল কৌশল। এসএমএস ও টিভি স্বত্ব বিক্রির জন্য ভারত অনেক বেশি লোভনীয়। তাই ভারতকে এই খেলায় ঢোকানোটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশে তারা এই এসএমএস ভোটিংয়ের আয়োজন করছে। পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই প্রতিযোগিতার জন্য এসএমএস পাঠানোর বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, প্রতিটি সিম থেকে বিশটি এসএমএস পাঠালে বাংলাদেশ ১০০ কোটি ভোট পাবে।
এই প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা ভোটের কম-বেশি দিয়ে বিজয়ী নির্বাচন করেন বলে স্বীকার করেন না। ভোটের সংখ্যাও প্রকাশ করেন না। প্রতিটি এসএমএসের জন্য খরচ হবে দুই টাকা। এ হিসাবে আয় হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এর থেকে ৬৮ পয়সা পাবে আয়োজক সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন।
এভাবে মোট ৬৮ কোটি টাকা পাবে তারা। সরকার আবার এই এসএমএসের জন্য ভ্যাট মাফ করে দিতে চেয়েছে। ফলে সরকারের ক্ষতি হবে ৩০ কোটি টাকা। ১৬৩৩৩ নম্বরটিতে এসএমএস পাঠাতে হবে। কিন্তু এ নম্বরটির মালিক কে বা কারা সে বিষয়ে সরকার নীরব থেকেছে।
নম্বরটির মালিক কোম্পানিগুলো হলে তারা পাবে বাকি ১৩২ কোটি টাকা। আর নম্বরটির মালিক কোন ব্যক্তি হলে তিনি ১৩২ কোটি টাকার কমপক্ষে ৪০ ভাগ পাবেন। এর পরিমাণ ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মালদ্বীপ সরকার এরই মধ্যে এ প্রতিযোগিতা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করেছে। ২৪শে এপ্রিল তাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আয়োজকেরা তাদের কাছে প্রায় ৫ লাখ ডলার ফি দাবি করায় তাদের পর্যটন মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে। তারা এই প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে আশ্বস্ত হতে পারেনি। ইন্দোনেশিয়াও এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এই আয়োজকেরা পুরস্কার বিতরণীর সব খরচ বহন করে হোস্ট নেশন হতে চাপ দেয়। সরকার রাজি না হওয়ায় তারা কমোডো ন্যাশনাল পার্কের প্রস্তাবকারী হিসেবে মন্ত্রণালয়ের নাম কেটে দেয় এবং এটিকে বাদ দেয়ার হুমকি দেয়।
তাদের মন্ত্রী জিরো ওয়াচিক এই সংগঠনের বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টার দায়ে মামলা করার কথাও বলেছেন। সংস্থাটি ইন্দোনেশীয় সরকারের কাছে চেয়েছিল ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার। এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের লাভের পরিমাণ অতি অল্প। প্রথমত এই সংগঠনের কোন আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। এর মূল অফিস সুইজারল্যান্ডে হলেও কোন অফিস ঠিকানা নেটে নেই।
রয়েছে স্পেনের একটি ঠিকানা। ওয়েবসাইটে নিজেদের বিষয়ে বক্তব্যও অস্পষ্ট। সংস্থাটির অর্জিত অর্থের পরিমাণও হিসাববিহীন। শুধু বাংলাদেশ ও ভারত থেকে এসএমএস আসবে ২০০ কোটির বেশি। এই টাকা থেকে কত ভাগ তারা ব্যয় করবে বিজয়ী দেশগুলোতে, তার কোন বর্ণনা নেই।
উল্টো তারা টাকা চাইছে। মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে সরকারিভাবে অন্তত ১৫ লাখ ডলারের কথা বলেছে। বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ ১০০ কোটি টাকারও বেশি। এ সংস্থা না বললেও সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ বন। ইউনেসকো একে এরই মধ্যে পৃথিবীর সম্পদ বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সংগঠনটির কর্মকর্তারা দুবাই গিয়ে সেখানের একটি দ্বীপকে এই প্রতিযোগিতায় এনেছেন। তারা দেশে দেশে ঘুরছেন। সেভেন ওয়ান্ডার্স সংগঠনটি যারা ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রচারণা চালিয়ে এরই মধ্যে স্বীকৃত কিছু প্রাকৃতিক আশ্চর্যকে প্রতিযোগিতায় নামিয়ে পয়সা কামাচ্ছেন। বিস্তারিত জানতে Click This Link I Click This Link এবং Click This Link এই লিংক দেখুন।
লেখাটা মানবজমিন থেকে শেয়ার করা।
লিখেছেন..আব্দুন নূর তুষার
লেখাটার লিনক...http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&view=article&id=14756:2011-07-20-16-25-31&catid=49:2010-08-31-09-43-32&Itemid=83প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতারণা শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কোটি কোটি টাকার ফাঁদ। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যে দু’টি দেশ তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জানা যায়, নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন নাম দিয়ে সুইস চলচ্চিত্রনির্মাতা ও সংগ্রাহক বার্নার্ড ওয়েবার এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর সঙ্গে সুইস সরকারেরও সম্পর্ক আছে।
পর্তুগালের লিসবনে তারা তাদের প্রথম প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা করেন ২০০৭ সালের জুলাই মাসে। তারা দাবি করেন, প্রায় ১০ কোটি ভোটার এসএমএস ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় ভোট দিয়েছিলেন। ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি সংস্থা অনলাইন ভোটিংয়ের মাধ্যমে ওই তালিকা ২০০৭ সালে প্রকাশ করে। ওই তালিকায় পিরামিড ছিল না। তাতে দক্ষিণ আমেরিকার তিনটি, এশিয়ার তিনটি ও ইউরোপের একটি প্রাচীন নির্মাণকে ভোটাভুটি করে আশ্চর্য বানিয়ে দিয়ে তারা সপ্তাশ্চর্যের পুরনো তালিকাটি বদলে দিতে চেষ্টা করেছিল।
পুরনো তালিকায় ছিল দ্য কলোসাস অব রোডস, গির্জার পিরামিড, ব্যাবিলনের শূন্যোদ্যান, আলেক্সান্দ্রিয়ার বাতিঘর, হ্যালিকার্নেসাসের সমাধি, অলিম্পিয়ার জিউসের মূর্তি এবং ইফেসাসে আর্টেমিসের মন্দির। এই আশ্চর্যগুলোর সব ক’টি এখন আর দেখা যায় না। তাই নতুন তালিকার উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। আর এখানেই নানা প্রশ্ন। পিরামিড বাদ পড়ার পর অনেকেই এটিকে নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
একটি সুপ্রাচীন স্থাপত্য হঠাৎ ব্রাজিলের রিডিমারের মতো একটি কুদর্শন ঢ্যাংগা মূর্তির কাছে বাদ হয়ে যাবে এটা কেউ মেনে নিতে পারেননি। অ্যাংকরভাট নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। অনেকে বলেছেন, চীনের প্রাচীরের চেয়ে অ্যাংকরভাট অনেক বেশি দাবিদার ছিল আশ্চর্য হিসেবে ঘোষিত হওয়ার। প্রথম দিকে, বিভিন্ন ছোট ছোট দেশ এই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে বিরাট আগ্রহ দেখায়। তবে একপর্যায়ে তাজমহল কম ভোট পেয়ে বাদ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে ভারতে এ নিয়ে বিরাট হৈচৈ শুরু হয়।
মিডিয়ায় গুরুত্ব দেয়ায় ভারত থেকে কোটি কোটি ভোট পড়তে থাকে। জর্ডানের রানী নিজে প্রচারণায় নেমে পড়েন এবং ৭০ লাখ লোকের দেশ জর্ডান থেকে এক কোটি ৪০ লাখ ভোট পড়ে পেট্রার পক্ষে। ব্রাজিলের ফোন কোম্পানিগুলো ফ্রি এসএমএস ও কল করতে দিয়ে তাদের রিডিমার স্ট্যাচুকে জিতিয়ে দেয়। ভারতেও একই রকম কাণ্ড হয়। শুরুতে মনোনয়ন দেয়ার সময় ইউনেসকো তাদের সহযোগিতা করলেও পরে তারা ঘোষণা দিয়ে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
ইউনেসকো থেকে বলা হয়, এই প্রতিযোগিতা একটি ব্যক্তিগত উদ্যোগ। এর সঙ্গে ইউনেসকোর কোন সম্পর্ক নেই। প্রথম প্রতিযোগিতার পর প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, এই কাজে আয়োজকদের কোন আর্থিক লাভ হয়নি। বরং তারা এটা বিভিন্ন দাতাদের সহযোগিতায় সম্পন্ন করেছে। তবে তারা নানা রকম প্রচারণা স্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
তারা ভোটের সংখ্যা প্রকাশ করেনি এবং টাকা পয়সার হিসাবের বিষয়েও নীরব ছিল। এর পরপরই তারা শুরু করে দেয় প্রাকৃতিক আশ্চর্য নির্বাচনের প্রতিযোগিতা। শুরুতে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সুন্দরবন- দু’টোই তালিকায় থাকলেও পরে তারা সুন্দরবনকে রেখে কক্সবাজারকে বাদ দেয়। অথচ প্রথমে তারা সুন্দরবনকেই বাদ দিতে চাইছিল। কেননা এটি দু’টি দেশে অবস্থিত এবং দু’টি দেশ থেকে সরকারিভাবে যৌথ মনোনয়ন না পেলে তারা এটাকে তালিকায় রাখবে না বলে জানিয়েছিল।
এটি ছিল কৌশল। এসএমএস ও টিভি স্বত্ব বিক্রির জন্য ভারত অনেক বেশি লোভনীয়। তাই ভারতকে এই খেলায় ঢোকানোটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশে তারা এই এসএমএস ভোটিংয়ের আয়োজন করছে। পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই প্রতিযোগিতার জন্য এসএমএস পাঠানোর বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, প্রতিটি সিম থেকে বিশটি এসএমএস পাঠালে বাংলাদেশ ১০০ কোটি ভোট পাবে।
এই প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা ভোটের কম-বেশি দিয়ে বিজয়ী নির্বাচন করেন বলে স্বীকার করেন না। ভোটের সংখ্যাও প্রকাশ করেন না। প্রতিটি এসএমএসের জন্য খরচ হবে দুই টাকা। এ হিসাবে আয় হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এর থেকে ৬৮ পয়সা পাবে আয়োজক সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন।
এভাবে মোট ৬৮ কোটি টাকা পাবে তারা। সরকার আবার এই এসএমএসের জন্য ভ্যাট মাফ করে দিতে চেয়েছে। ফলে সরকারের ক্ষতি হবে ৩০ কোটি টাকা। ১৬৩৩৩ নম্বরটিতে এসএমএস পাঠাতে হবে। কিন্তু এ নম্বরটির মালিক কে বা কারা সে বিষয়ে সরকার নীরব থেকেছে।
নম্বরটির মালিক কোম্পানিগুলো হলে তারা পাবে বাকি ১৩২ কোটি টাকা। আর নম্বরটির মালিক কোন ব্যক্তি হলে তিনি ১৩২ কোটি টাকার কমপক্ষে ৪০ ভাগ পাবেন। এর পরিমাণ ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মালদ্বীপ সরকার এরই মধ্যে এ প্রতিযোগিতা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করেছে। ২৪শে এপ্রিল তাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আয়োজকেরা তাদের কাছে প্রায় ৫ লাখ ডলার ফি দাবি করায় তাদের পর্যটন মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে। তারা এই প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে আশ্বস্ত হতে পারেনি। ইন্দোনেশিয়াও এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এই আয়োজকেরা পুরস্কার বিতরণীর সব খরচ বহন করে হোস্ট নেশন হতে চাপ দেয়। সরকার রাজি না হওয়ায় তারা কমোডো ন্যাশনাল পার্কের প্রস্তাবকারী হিসেবে মন্ত্রণালয়ের নাম কেটে দেয় এবং এটিকে বাদ দেয়ার হুমকি দেয়।
তাদের মন্ত্রী জিরো ওয়াচিক এই সংগঠনের বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টার দায়ে মামলা করার কথাও বলেছেন। সংস্থাটি ইন্দোনেশীয় সরকারের কাছে চেয়েছিল ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার। এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের লাভের পরিমাণ অতি অল্প। প্রথমত এই সংগঠনের কোন আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। এর মূল অফিস সুইজারল্যান্ডে হলেও কোন অফিস ঠিকানা নেটে নেই।
রয়েছে স্পেনের একটি ঠিকানা। ওয়েবসাইটে নিজেদের বিষয়ে বক্তব্যও অস্পষ্ট। সংস্থাটির অর্জিত অর্থের পরিমাণও হিসাববিহীন। শুধু বাংলাদেশ ও ভারত থেকে এসএমএস আসবে ২০০ কোটির বেশি। এই টাকা থেকে কত ভাগ তারা ব্যয় করবে বিজয়ী দেশগুলোতে, তার কোন বর্ণনা নেই।
উল্টো তারা টাকা চাইছে। মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে সরকারিভাবে অন্তত ১৫ লাখ ডলারের কথা বলেছে। বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ ১০০ কোটি টাকারও বেশি। এ সংস্থা না বললেও সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ বন। ইউনেসকো একে এরই মধ্যে পৃথিবীর সম্পদ বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সংগঠনটির কর্মকর্তারা দুবাই গিয়ে সেখানের একটি দ্বীপকে এই প্রতিযোগিতায় এনেছেন। তারা দেশে দেশে ঘুরছেন। সেভেন ওয়ান্ডার্স সংগঠনটি যারা ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রচারণা চালিয়ে এরই মধ্যে স্বীকৃত কিছু প্রাকৃতিক আশ্চর্যকে প্রতিযোগিতায় নামিয়ে পয়সা কামাচ্ছেন। বিস্তারিত জানতে Click This Link I Click This Link এবং Click This Link এই লিংক দেখুন।
লেখাটা মানবজমিন থেকে শেয়ার করা।
লিখেছেন..আব্দুন নূর তুষার
লেখাটার লিনক...http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&view=article&id=14756:2011-07-20-16-25-31&catid=49:2010-08-31-09-43-32&Itemid=83 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।