শ্রীপুরের সিংগারদিঘী গ্রামের সি-গাল নামক একটি পিকনিক স্পটে সাভারের আশুলিয়া থেকে বনভোজন করতে আসা পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে গ্রামবাসীর দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ উভয়পক্ষের দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
রাত ১১টা পর্যন্ত পিকনিক স্পটে আটকা পড়া প্রায় ৮ হাজার শ্রমিককে ঘিরে রেখেছে হাজার হাজার জনতা।
গুরুতর আহত ৭০/৮০ জনকে মাওনা চৌরাস্তার আলহেরা, বিল্লাল মাস্টার, নোভা, একে মেমোরিয়াল, শ্রীপুর উপজেলা হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে পোশাক কারখানার শ্রমিক ও গ্রামবাসীসহ ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা মাওনা ইউনিয়নের সি-গাল পিকনিক স্পটে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আশপাশের চার-পাঁচ গ্রামের লোকজন বনভোজনে আসা শ্রমিকবাহী ৭০টি বাস ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে প্রায় দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে রাত ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চার-পাঁচ গ্রামের বিক্ষুব্ধ লোকজন শ্রমিকদের পিকনিক স্পটে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
শ্রমিকদের বরাত দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকার আশুলিয়া এলাকার টুঙ্গাবাড়ি, কাঠগড়া ও জামগড়া গ্রামে অবস্থিত গ্রিনলাইফ গ্রুপের পোশাক তৈরির ৫টি কারখানার প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শ্রমিক কর্মচারী নিয়ে শুক্রবার সকাল ৯টায় সী-গাল পার্কে বার্ষিক বনভোজনে আসেন।
দিনভর আনন্দ উল্লাসে তারা বনভোজন শেষে সন্ধ্যায় সি-গালের প্রশস্ত মাঠে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কারখানার কর্তৃপক্ষ।
এ সময় কারখানার গেট থেকে এক শ্রমিকের একটি মোবাইল ছিনতাই হয়। শ্রমিকরা একজন ছিনতাইকারীকে হাতে নাতে ধরে ভেতরে নিয়ে যান। এলাকার ৫/৬ জন ছেলে আটককৃতকে ছাড়িয়ে আনতে পার্কের ভেতরে যেতে চান। শ্রমিকরা বাধা দিলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয় ।
পরে এলাকার ছেলেরা অনুষ্ঠানস্থল থেকে ২ শ্রমিককে ডেকে নিয়ে বেদম পেটুনি দেন।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত লোক একত্রিত হয়ে পার্কের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। শ্রমিকরা অনুষ্ঠান শেষ করে প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। পরে সিংগারদিঘী গ্রাম ছাড়াও আশেপাশের কপাটিয়াপাড়া, চকপাড়া, আক্তাপাড়া, সিংদিঘীসহ ৫/৬ গ্রামের হাজার হাজার লোক একত্রিত হয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী শ্রমিক বহনকারী ৯৬টি গাড়ির মধ্যে ৭০টি গাড়িই ভাংচুর করে।
এ সময় কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু ফয়সাল মোসাব্বের সাইমন, সিইও পাকিস্তানের নাগরিক জাওয়াদ জালাল সাকিব, কর্মকতা মিলন, লুৎফর রহমান, এলাকার কাউসার মাহমুদ, আবুল হোসেন, হাবিব, কুদ্দুসসহ শতাধিক শ্রমিক ও এলাকাবাসী আহত হন। তখন সি-গালের ভেতরে থাকা নারী-পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশু সন্তানসহ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। সীমানা প্রাচীর টপকে পালানোর সময় আহত হন অনেকেই।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।