একজন সুখী মানুষ ১৮৯৩ খ্রীষ্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত parliament of world Religions সারা বিশ্বে আন্তধর্মীয় সংলাপ, সম্প্রীতি ও তুলনামুলক ধর্মের ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহের জন্ম দেয় এবং অনেকে এ বিষয়ে গবেষণায় উদ্যোগী হন। এর ফলে বিগত এক শতকে পৃথিবীর প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাশ্চাত্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে comparative Religion বা Religious Studies এর স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
তুলনামুলক ধর্ম হচ্ছে প্রাচীন ও আধুনিক এবং ঐতিহাসিক ও প্রাগৈতিহাসিক সবরকমের ধর্মের বস্তুনিষ্ঠ ও তুলনামূলক আলোচনা। বিভিন্ন ধর্মের মৌলিক রীতি নীতি ও বিশ্বাসসমূহকে পর্যালোচনা করে এদের মধ্যকার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহকে খুজে বের করা এর কাজ।
তুলনামুলক ধর্ম বিভিন্ন ধর্মের যথার্থ সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নির্ধারণ করে এদের মূল্যায়ন করে এবং নির্ণয় করে সাদৃশ্যের গভীরতা আর বৈসাদৃশ্যের সুক্ষ্ণতা ও ব্যপকতা।
প্রশ্ন করেঃ এই বৈসাদৃশ্য কি বিভিন্ন ধর্মের সৌহার্দের পথে অন্তরায়? জানতে চায়ঃ সব ধর্মের কোন মৌলিক ও সাধারণ ভিত্তি আছে কি? সাধারণভাবে নির্ধারণ করতে চায় ধর্মের স্বরুপ, উৎপত্তি, অগ্রতি এবং বিভিন্ন ধর্মের রীতি নীতি ও পদ্ধতি।
তুলনামূলক ধর্ম বিভিন্ন ধর্মের ভিতরকার যে পার্থক্য তাকে উপেক্ষা করে না, ধর্মে ধর্মে যে পার্থক্য আছে তাকে এড়িয়ে চলে না; ব্রং দূর করতে চায় বিরোধকে। আর সে কারণেই এ সব পার্থক্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ও ব্যাখ্যা করে। পার্থক্য নিয়ে ঠাট্টা, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ বা পরিহাস করে না।
বলা হয়ে থাকে, কোন মানুষ কি তার নিজের ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মকে সত্যিকার ভাবে জানতে পারে? অর্থাৎ কোন একটি ধর্মের অনুসারী না হয়ে কি সে ধর্ম সত্যিকার অর্থে জানা যায়? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে, কোন একটি বিশেষ ধর্মের অনুসারি না হলেই যে সে ধর্ম সম্পর্কে ভালভাবে জানা যাবে না, এমন কোন কথা নেই।
কোন একটি ধর্মকে জানতে হলে, সে ধর্মের অনুসারী হলেই ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান তুলনামূলকভাবে সহজ, অনুসারী না হলে একটু কষ্টসাধ্য। কিন্তু অসম্ভব নয়।
তবে এক্ষেত্রে নাস্তিকেরা এগিয়ে, উনারা সব ধর্মই জানেন এবং ধর্মের উদ্ভব সম্পর্কেও এবং সর্বশেষে ঈশ্বরকেই খুজে পাননি তাই নাস্তিক। এমন নয়কি?
অনেকের মতে ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা অযথা তিক্ততা, ঘৃণা ও বিদ্বষের জন্ম দিতে পারে। আর সে কারণে এ জাতীয় আলোচনা পরিহার করাই শ্রেয়।
এধরণের চিন্তা কি ঠিক? কারণ বর্তমান বিশ্বের যে সার্বিক পরিস্থিতি তাতে ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতা অসম্ভব নয়। কারন এখন নাস্তিকরার প্রসার দিন দিন বাড়তেছে ধর্মের ক্ষতিকারক দিক গুলো বিবেচনা করে।
তবে এখনো ধার্মিকেরা যা করতে পারে শান্তিপূর্ণ-সহাবস্থানের জন্য তা হলো নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ ও সহানুভুতিশীল তুলনা।
বস্তুত নিরপেক্ষ ও সহানুভুতিশীল তুলনা ছাড়া বিভিন্ন ধর্মের ভিতরকার বিরোধের কারণ খুজে বের করা কঠিন এবং ধর্মের তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমেই মূল ঐক্য (base unity) খুজে বের করা সম্ভব।
যে এই খুটি নাটি জানবে অবশ্যই নিজের ধর্মের খারাপ বিষয় গুলো নিয়ে চিন্তিত থাকবে ফলে Metaphysics এর দিকে ধাবিত হবে।
মানে সৃষ্টি কর্তা থাকবেন, কিন্তু বিশেষ কোন ধর্মের থাকবে না। অথবা সংশয়বাদী হয়ে নাস্তিকের দিকে ধাবিত হবেন।
এই ভেবে ধুরন্দর ধার্মিকেরা সাধারন ধার্মিকদের কে নিয়ে ব্যবসা করার একটা সুযোগও পাবেন।
আপনাদের কি ধারণা?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।