[img|http://ciu.somewherein.net/ciu/image/109861/small/?token_id=0663b094cd90bf7a1e512182fa5b2bea
দেশ যখন বিভক্ত হয় তখন বুঝতে হয় এই বিভক্তি মানুষে মানুষে যা দেখা যায় না, পরিমাপও করা যাই না। এই বিভক্তি মতাদর্শে, আদর্শগত অবস্হানে যেমনটি হয়েছিল ৪৭ কিংবা ৭১-এ। সাধারণত দেশে অনেক মতাদশের্র লোক থাকে, ভিন্ন ভিন্ন আদশর্গত সহঅবস্হান থাকে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ পরিস্হিতিতে, যখন পরিস্হিতি চরম আকার ধারণ করে তখন ভিন্ন ভিন্ন মতের বিপক্ষে তৈরি হয় দুইটি মত, সহঅবস্হানের বিপক্ষে তৈরি হয় দুইটি অবস্হান, সাধারণ অবস্হার বিপক্ষে নেমে আশে জরুরি অবস্হা।
দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত: ছাগুতে আর ঘাগুতে......... অতিসংগত কারণে আমি আমার অবস্হানও পরিস্কার করে নিয়েছি।
নিশ্চয় এতক্ষণে বুঝে গেছেন, আমি একজন ছাগু.......। তাই যারা ঘাগু দলের অন্তভুক্ত তাদের প্রতি বিনিত অনুরোধ আমার এই পোস্ট পড়া থেকে বিরত থাকবেন কেননা পোস্ট পড়া শেষে মন্তব্যের ঘরে যে ভাষা ব্যবহার করবেন তা আমার রুচিবোধ নস্ট করবে আর প্রশ্নবিদ্ধ হবে আপনার জন্ম কিংবা বংশ পরিচয়।
এই ধরণের বিশেষ/জরুরি পরিস্হিতি তৈরী হয় কোন একটি বিশেষ ঘটনা থেকে হতে পারে সেটি অতি আশাব্যাঞ্জক কিংবা নেক্কারজনক। যেমনটি হয়েছিল ৯/১১ এর টুইনটাওয়ার হামলা কে কেন্দ্র করে। এধরণের ঘটনাটিকে তাৎক্ষণিক অতি-আশাব্যাঞ্জক কিংবা নেক্কারজনক ধরে নিয়ে ঘটে যায় যুগান্তকারি পরিবতর্ন কিন্তু ঘটনার সত্যতা উন্মোচিত হয় অনেক পরে ততদিনে নদির সব পানি ঘোলা হয়ে সব মাছ মরে যায় এমনকি স্রোতশীনি নদী শুকিয়ে হয়েযায় বিরাণভূমি।
যেমনটি হয়েছিল ৯/১১ এর টুইনটাওয়ারে হামলাকে (হমলাকারিরা আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে পরিপুস্ট হয়েছিল) পুজি করে। সন্ত্রাস দমনের নামে আমেরিকা এবং পশ্চিমা মিডিয়া যৌথভাবে সারা বিশ্বকে দ্বিধাবিভক্ত করেছিল আর সেই পথধরে সন্ত্রাস দমনের নামে আফগানিস্তানে চালানো হয়েছিল বর্বর হামলা, আবগানিস্তানকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে আমেরিকার (বুশ প্রশাসনের) অবস্হান ছিল: "Either you are with us or against us. Either you are in favour of terrorism or against terrorism."
নিরপেক্ষ দুবর্ল শেকড়হীন দেশগুলো স্বাভাবিকভাবেই অবস্হান নিয়েছিল সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে। পরবর্তিতে দেখাগেল ৯/১১ এর ঘাড়ে ভর করে সন্ত্রাসদমনের নামে আফগানিস্হানের তেলসম্পদ দখল করাই ছিল আমেরিকার মুল উদ্দেশ্য।
তেমনি একটা যুগান্তকারি আশাজাগানিয়া জাগরণ ছিল শাহবাগের গণজাগরণ। আনেকেরই হয়ত মনে আছে সেদিনের স্লোগান ছিল, "অন্য কোন দাবি নাই রাজাকারের ফাসি চাই, চাই চাই ফাসি চাই, রাজাকারের ফাসি চাই"
এই সরকারের অত্যাচারে ক্লান্ত নিশ্পেশিত দিশেহারা মানুষ সেদিন শুধু ফুসেই উঠেছিল না, ঘর থেকে বাহির হয়েছিল রাজপথে।
সরকারের সীমাহীন দুরনীতি যখন পর্যবসিত হয়েছিল ভন্ডামিতে (কাদের মোল্লার ফাসির বায়ের মধ্যে দিয়ে), রাজাকারের ফাসির কথা বলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসে, শেষমেশ জামাতের সাথে আপোষ !! মানি না, মানি না !! জেগে উঠলো আমজনতা, বই-খাতা-ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধ জীবনের শৃণ্খল ভেঙে দলে দলে তরুন প্রজন্মের জোয়ার নেমে এসেছিল রাস্তায় !! জমাট বাধা রক্ত ক্রোধে-ক্ষোভে তরল হতে শুরু করেছিল !! তৈরী হয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্হান নেয়ার একটি প্লাটফর্ম !! অবতীর্ন হয়েছিলে একটি পরীক্ষায়.... একটিই পরীক্ষা.. রাজাকারের ফাসি,,,,যুদ্ধঅপরাধির ফাসি !! এই আন্দলন ছিল বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে !! সেদিনের সেই জাগরণ ছিলে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারি এবং আশাব্যাঞ্জক ঘটনা !!
কিন্তু........ "হ্যা কিন্তু" যারা নের্তৃত্ব নিয়ে নিল (ক্রেডিট চুরি করার মত করে) তারা একটি বিষয়ে পরীক্ষার কথা বলে প্রশ্নপত্রে সংযোজন করলো ৬ টি বিষয়, এই ঘরমুখো তরুনরা প্রথম ধাক্কা খেল সেখানে!! পুরো সমাবেশটার আওয়ামীকরণ করা হলো অতি সূক্ষভাবে ধিরে ধিরে !! সমাবেশ চলে গেলো বর্তমান সরকারের পক্ষে!! আপামর জনসাধারণের আবেগকে পুজি করে সবাইকে নিয়ে আনা হলো ১৮দলীয় জোটের ছাতার নীচে !! শেষপযর্ন্ত পুরো জাতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হলো।
আজ গণজাগরন কে কেন্দ্র করে:
> ১৮ দলীয় জোট চাচ্ছে জামাতকে বিচ্ছিন্ন ও নিশ্চিন্ন করে ১৪ দলীয় জোট কে দুর্বল করতে এবং সময়ক্ষেপন করে দলীয় সরকারের মাধ্যমে আগামি নির্বাচন করে ফায়দা লুটতে
> বিএনপি চাচ্ছে গনজাগরনকে দলীয় মোড়কে পুরে আওয়ামীলিগের ব্রান্ডিংকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে নিজেদের আন্দলনকে চাংগা করতে
> জামায়েত গনজাগরনকে নাস্তিক-মুরতাদীয় জাগরণের আখ্যা দিয়ে রাজাকার নেতাদের মুক্ত করার পায়তারা করছে
> এরশাদ মামা মুসলমানদের সস্তা সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় রত ( কারণ গণজাগরন মন্চের নারীরা ততটা আবেদনময়ী নয়)
শাহবাগের গণজাগরণকে পুজি করে স্বাধিনতার চেতনার নামে সমগ্রজাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করা হলো। হয় আপনি এই চেতনার পক্ষে অথবা বিপক্ষে, হয় আপনি ছাগু অথবা ঘাগু (দুস্ট মানুষেরা বলে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির ) !! ক্রমেই এইখান থেকে প্রতিয়মান হলো শুধু রাজাকাররাই নয়, যারা জাতীয়তাবাদের চেতনায় বিশ্বাস করে কিংবা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে সবারই অবস্হান এই চেতবার বিপক্ষে !!
এখন আন্দলনের মূল স্লোগান কি ছিল আর এখন কি ?
অন্য কোন দাবি নাই রাজাকারের ফাসি চাই থেকে হয়ে গেল ধর্মভিত্তিক-রাজনৈতিক দলের নিধন চাই সবশেষ জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হাবে-এটাই এখন মুল এজেন্ডা !! কিন্তু কেন ?
সকল ক্ষমতার মালিক কে ? একমাত্র এবং একমাত্র আল্লাহ ! আমার ভাগ্য, জীবন ও জীবিকার মালিক আল্লাহ ! : এই বিশ্বাসে অটল এবং অবিচল থাকায় যদি আমাকে সাগু হতে হয় তবে আমি ছাগু। ইসলামিক জীবন ব্যাবস্হায় বিশ্বাস এবং স্বাধিনতার চেতনাকে পরস্পর বিরোধি অবস্থানে থাকতে হবে কেন?
গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে এ দেশের রজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয় জনগনের দারা এবং নীতিগতভাবে আমি মনেকরি এটাই বর্তমান বিশ্বে সেরা শাসণ কাঠামো (যদিও আমি মনে করি বাংলাদেশের এই মহুর্তে প্রয়োজন একজন সৎ এবং দেশপ্রেমিক একনায়ক)
একদিকে গনজাগরণ মন্চ যেমন খোলস ছেড়ে বের হতে শুরু করলো, অন্যদিকে জামাত শিবিরও তাদের লুকায়িত সংকাকে পেছনে ফেলে নেতাদের মুক্তির নামে রাজাকারের ফাসির বিপক্ষে অবস্হান মজবুত করতে শুরু করলো। দেশ ও দেশের মানুষ প্রকাশ্যে দিধাবিভক্ত আজ: স্বাধিনতার চেতনাধারী এবং চেতনাবিরোধী, দেশপ্রেমিক এবং দেশদ্রোহী, ইসলামের পক্ষে এবং বিপক্ষের শক্তি !!
আর এই সুযোগ কে পুজি করে সরকারের সব অপকর্ম চাপা পড়ে গেল, অতিসম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া কয়েকটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলও সুযোগ পেল সরকারের প্রতি কৃতঞতা প্রদশর্নের।
চেতনার পতাকা বহনের নামে শুরু হলো গণহত্যা- আর একটি মানবতা বিরোধি অপরাধে কলংকিত হলো দেশ !!
কেন গনহত্যা: ?
যেই লোকগুলান মারা গেল, তাদের অপরাধ তারা শিবির করে, তাদের অপরাধ তারা মিছিল করতে এসেছিল ! এই সকল নিরস্ত্র মানুষের হাতে ইটা এনং বাশ তুলে দিয়েছে এই সরকার। আজকে যদি শাহবাগের আন্দোলনকারীরা রাস্তায় স্লোগান দেয়ার সাথে সাথে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, গুলি চালায় তবে তারাও হাতে যা পাবে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে কেননা প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আমি তো মনে করি জামাত-শিবিরের নেতা কর্মিরা যথেস্ঠ সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে ! দোলীয় কোন্দলে যখন আওয়ামী ঘাগুরা দেশীয় এবং বিদেশি আগ্নেআস্ত্র নিয়ে একে অন্যের ওপর ঝাপিয়ে পড়ছে, তখন জামাত-শিবিরের কর্মিরা পুলিশের "দেখামাত্র গুলি" আচরণের বিপক্ষেও কোন ধারালো কিংবা আগ্নেআস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেনি। গত একবছরের পত্রিকা দেখলেই বোঝা যাবে কারা বেশি সহিংস !! শিবিরের সহিংশ চেহারা দেখার এবং দেখানোর জন্যই তো সরকার সাতজন নিরীহ পুলিশ সদস্যের বলি চড়ালেন। আওমীকায়দায় জামাত-শিবির মাঠে নামলে কি হতো তা সহজেই আনুমেয় (জামাত-শিবির কতটা সহিংস হতে পারে তা কারো অজানা নয়) !!
জামাত শিবির একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যাদের মদদ দিয়ে পুস্ট করেছে বিএনপি ও আওয়ামিলীগ।
যতক্ষন পর্যন্ত তারা নিষিদ্ধ নয়, তাদেরও মত প্রকাশের অধিকার আছে, মিছিল করার অধিকার রয়েছে, যারা বাধা দিবে তারাই বেআইনি কাজ করবে। সুতরাং আইন ভংগ করেছে সরকার, তাদের উপর গুলি চালিয়ে গনগ্রেপ্তার করেছে- এখনকার সরকার তাই মানবতাবিরধী অপরাধে অপরাধি (যাদের প্রচনায় মানবতা ভুলন্ঠিত হয় যেমনটি হয়েছিল ১৯৭১ সালে গোলাম আজম গং দের দ্বারা )!!
সরকার একদল মিছিল করলে পাহারা দিবে আর আরেকদল মিছিল করলে গুলি চালাবে, এ কোন দেশে বাস করছি আমরা !!
রাজাকার সব দলে রয়েছে, সকল রাজাকারের বিচার চাই। যে দলে বেশি রয়েছে সেখান থেকে বেশি লোক শাস্তি পাবে সেটাই তো স্বাভাবিক। জামাত-শিবির শুরুতে চুপ করেই ছিল কিন্তু আজকের সরকারই পায়ে পা দিয়ে ঝগরা করার মত করে তাদেরকের বর্তমান অবস্হায় নিয়ে এসেছে !!
আর বিএনপি ব্যাস্ত আছে হিসেব কষতে, কোনদিকে গেলে আমার লাভ হবে, আবার ০৫ বছরের জন্য মধুর হাড়িখানা উপরে ঝুলিয়ে হ্যাঁ করে তলায় বসে থাকব।
বিপদনামা: বিপদ হয়েছে সেই সকল তরুনদের যারা সাগু হইতেও চাই না আবার ঘাগু হইতেও চাই না !!
এইসকল রাজনীতি (কুলষিত) বিমুখ জনসাধারণ এবং তরুনসম্প্রদায় যারা শাহবাগের জাগরণে যোগ দিয়েছিলেন তাদের অবস্হা আজ সবচেয়ে খারাপ: ভিক্ষা চাই না মা কুত্তা (দুই-পক্ষেরই) সামলান অবস্হা।
তাই সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ দেশটাকে বাপের টাকশাল বা ছেলের আয়েশের জায়গা না বানিয়ে সামনে এগিয়ে নেয়ার চিন্তা করুন আর নিরীহ মানুষ মারা বন্ধ করুন, পুলিশ পরিবারদের প্রতি দয়া করুন !! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।