I deem them mad because they think my days have a price... বলতে পারেন আমরা বাঙ্গালীরা কোন সময় সবচেয়ে ফুরফুরে থাকি??উত্তর খুজতে গেলে অবশ্যই ঈদ, পুজা,পহেলা বৈশাখ এইরকম কিছু শব্দ চলে আসবে যেগুলো আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ইচ্ছেমত পোলাও ,কোরমা,বিরিয়ানির সাথে বাইরে ঘুরাঘুরি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা এইসবকিছুই এই দিনগুলোকে বছরের অন্য দিনগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা আর স্পেশাল করে রেখেছে। দেশ কাল আর সময় ভেদে মানুষের এই উৎসব আর উৎসব পালনের ধরন-ধারন হয় এক্কেবারেই আলাদা। হাজার জায়গায় চলে লাখ রকমের উৎসব আর কোটি মানুষের মিলনমেলা। চলুন দেখে নেয়া যাক পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু উৎসব ---
The carnival of rio de janiro :
প্রথমেই বলে রাখি জাতি হিসেবে ব্রাজিলিয়ানরা কতটা শৌখিন টা জানতে হলে রিও-এর এই কার্নিভালে আপনাকে যেতেই হবে।
পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসব বলা হয় এটিকে। এই উৎসবের ইতিহাসও কিন্তু বেশ পুরনো। এটি মুলত ১৬৪১ সাল থেকে চলে আসছে যখন ব্রাজিলের বিত্তবানরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ইউরোপ থেকে মাস্কারেইড পার্টি ভাড়া করে আনত। তাই পুরো উৎসবে এখনো কিছুটা ইউরোপীয় ফ্লেভার রয়েছে। কি হয় এই উৎসবে??উৎসবের আগে প্রস্তুতি নিতে থাকা হাজারো সাম্বা স্কুল থেকে বের হয় সাম্বা ব্লক প্যারেড।
প্রত্যেকটি প্যারেড ই মিউজিক আর গানের তালে চলতে থাকে ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা ড্যান্স। পুরো শহরের রাস্তায় লাল নীল হাজারো রঙের মেলা বসে। আর মানুষজন মাতিয়ে নাচে গানে মাতিয়ে রাখে পুরো রিও ডি জেনিরো কে। ও ভালো কথা এই উৎসবটি হয় ফেব্রুয়ারীর ১৩ -১৬ তারিখ।
Carnival of Venice:
মুলত পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে শুরু হলেও এই কার্নিভালটি গত শতাব্দীতে এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে সারাবিশ্বের মানুষের কাছে।
Ash Wednesday এর দু সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয় এই উৎসবটি। এই কার্নিভালের একটি জিনিস আমার কাছে অনেক থ্রিলিং মনে হয়েছে। সেটি হল কার্নিভাল চলাকালিন সময়ে সবাই মুখোশ পরে রাস্তায় নামে এবং নিজের সকল রকম identity লুকিয়ে রাখে। এইখানেই পৃথিবীর অন্যসব উৎসবের থেকে carnival of venice এর স্বাতন্ত্র্য। এই কার্নিভালে সমাজের মাস্কের আড়ালে সবাই নিজেদের আসল পরিচয় গোপন করে রাখে এবং সমাজের শ্রেণীবিভেদ ভুলে একই কাতারে চলে আসে।
কার্নিভালে মানুষের মুখোশ ইদানিংকালে অনেক রকম হলেও এই কার্নিভালের ঐতিহ্য হল সাদা একটি লম্বাটে নাকওয়ালা মাস্ক যেটি পরিধানকারীর পুরো মুখ ঢেকে রাখে অনায়াসে। উৎসব চলাকালীন সময়ে ব্রোথেল, থিয়েটার আর ওয়াইনবার গুলো মানুষ আর বাহারি রকমের মাস্কে একাকার হয়ে থাকে। উৎসব চলাকালীন সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০০০০ ভিজিটর ভেনিসে আসে। অবাক করার মত কাণ্ড!!
Carnival of Santa Cruz de Tenerife
এটি স্পেনের একটি উৎসব কিন্তু দেশের সীমা ছাড়িয়েও এটা ইদানীংকালে পুরো বিশ্বেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইনফ্যাক্ট, কেউ যদি কার্নিভালগুলোকে রেটিং করতে চায় তবে রিও ডি জেনিরো কার্নিভালের পরপরই একে রাখতে হবে।
এই কার্নিভালের দুটি অংশ। একটি official carnival অন্যটি carnival in the street.মুলত শুক্রবার সকাল থেকেই এটি শুরু হয় প্যারেডের মাধ্যমে যেটিতে হাজারো মানুষ আসে রংবেরঙের পোশাক পড়ে। আস্তে আস্তে পুরো শহরের লোকজন আসতে থাকে আর বড় হতে থাকে প্যারেডের দৈর্ঘ্য। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই আয়োজন, চলতে থাকে লোকাল অর্কেস্ট্রা এবং ক্যারিবিয়ান মিউজিকের সাথে মানুষের উৎসব।
পহেলা বৈশাখঃ
এত উৎসবের মাঝে যদি এই উৎসবের নাম না থাকে তাহলে আমার মনে হয় বড় অবিচার হয়ে যাবে।
এসো হে বৈশাখ ,এসো এসো—এই গানের সাথে সাথে মানুষ যেভাবে বৈশাখের প্রথম দিনে রমনা বটমূলে ছুটে যায় তা কেবলই বাঙ্গালীর প্রানের বিশুদ্ধ আবেগ। পান্তা ,ইলিশ, লালসাদা শাড়ির ললনাদের ভিড় আর বাবার হাত ধরে রাখা ছোট্ট ছেলের রঙ্গিন নকশামাখা গাল আর কোথায় দেখা যায় এই বৈশাখ ছাড়া?? আমাদের এই বৈশাখ উদযাপনটা carnival of rio de janiro , Carnival of Venice অথবা পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন উৎসবের চেয়ে কম যায়না কোন অংশে। এযে আমাদের বাঙ্গালীর প্রানের মিলনমেলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।