good
এবার কলম্বিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করলো আর্জেন্টিনা। এর আগে চলতি কোপায় নিজেদের প্রথম খেলায় বলিভিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল সার্জিও বাতিস্তার দল।
আর্জেন্টিনার এই ড্র এখন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিল। কোচ সার্জিও বাতিস্তার মূল একাদশ নিয়ে আগে থেকেই সমালোচনা হচ্ছিল। কলম্বিয়ার সঙ্গে বুধবারের ম্যাচটি ড্রয়ের পর কোচের পদটা তাই কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গেলো বাতিস্তার জন্য।
সার্জিও অ্যাগুয়েরো, গঞ্জালো হিগুয়াইন ও দিয়েগো মিলিতোর মতো খেলোয়াড়দের 'বেঞ্চ' এ রেখে মূল একদশ সাজানোর খেসারত আবারও দিলেন বাতিস্তা। তা পছন্দেও দুই খেলোয়াড় এজেকুয়েল ল্যাভেজ্জি ও এভার বানেগার ব্যর্থতাই এমন প্রশ্নের সম্মুখীন করকে তাকে।
ড্র নয় বরং হারটাই আর্জেন্টিনার প্রাপ্য ছিল। রক্ষণের ভুলে দুটো সহজ সুযোগ পেয়েছিলো কলম্বিয়া। আক্রমণভাগের ব্যর্থতায় গোলগুলো থেকে বঞ্চিত হয় কলম্বিয়া।
আর গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো দু'বারের গোলের হাত থেকে বাঁচান আর্জেন্টিনাকে।
পুরো খেলায় মাত্র একটি পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করেছিল এবারের কোপার স্বাগতিক দেশটি। কিন্তু এজেকুয়েল ল্যাভেজ্জির কারণে সে সুযোগটাও হাতছাড়া হয়ে যায়।
প্রথম দশ মিনিট অবশ্য অন্যকিছুরই আভাস দিচ্ছিল। বলের দখলে আর্জেন্টিনাই এগিয়ে ছিল।
ল্যাটিন ছন্দের তালে ৭ মিনিটের সময় গোলের সুযোগও সৃষ্টি কওে তারা । বলিভিয়ার বিপক্ষে মূল একাদশে সুযোগ না পাওয়া জাবালেতা মাঝমাঠ থেকে দৌড়ে এসে কলম্বিয়ার বক্সে বল পেয়ে যান। কিন্তু তাল রাখতে না পেরে বল বাইরে মেরে দেন।
আর্জেন্টিনা চেপে ধরায় সে সময় রক্ষণ সামলে প্রতি আক্রমণে গোলের চেষ্টা করে কলম্বিয়া। রক্ষণকে সুরক্ষিত রেখে প্রথম পনেরো মিনিটে তিনটি ফ্রি-কিক আদায় কওে তারা।
একটি ফ্রি-কিকও অবশ্য কাজে আসেনি।
১৮ মিনিটে বাঁ-প্রান্ত থেকে ক্যাম্বিয়াসোর দারুন 'ক্রস'টি কোনোমতে রক্ষা করেন কলম্বিয়া গোলরক্ষক লুইস মার্টিনেস।
২০ মিনিটের সময় প্রতি আক্রমণে আর্জেন্টিনার বক্সে বল পান কলম্বিয়ার তারকা খেলোয়াড় রাদামেল ফ্যালকাও। সতীর্থ রামোসের জায়গা বুঝে আলতো করে বলটা ভাসিয়ে দেন রামোসের দিকে। আগুয়ান রামোসের সামনে তখন গোলরক্ষক রোমেরো ছাড়া কেউ নেই।
কি যে হলো কোস্টারিকার বিপক্ষে জয়সূচক গোলদাতা রামোসের। বলটা বারের উপর দিয়ে পাঠিয়ে নিজেই অবাক হয়ে গেলেন!
৬ মিনিট পর ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোজটি পায় কলম্বিয়া। গ্যাব্রিয়াল মিলিতোর জঘন্য ভুলে আবারও রোমেরোকে একা পান রামোস। তাকে কাটিয়ে বেরিয়েও যান রোমেস। কিন্তু রক্ষণ সেনা বুর্দিসো কোথা থেকে যেন উদয় হন।
দলকে বাঁচাতে ডি-বক্সে রামোসকে ফেলে দেন তিনি। সঙ্গে নিজের নিয়ন্ত্রনও হারান। পরিষ্কার পেনাল্টি। কিন্তু বল তখন মরেনোর পায়ে। কলম্বিয়াকে 'অ্যাডভান্টেজ'র সুযোগ দিয়ে খেলা চালিয়ে যান রেফারি।
মরেনোর দিকে তখন গোলপোস্ট হাঁ করে চেয়ে আছে। সবাইকে অবাক করে বলটি গোলপোস্টের বাইরে মেরে বসেন মরেনো। পাড়ার ফুটবলেও সহসা কেউ এমন ভুল করে কি না সন্দেহ আছে।
নিশ্চুপ মেসি ৩১ মিনিট পর জ্বলে ওঠেন। রক্ষণ চেরা পাসে ল্যাভেজ্জিকে গোলের উপলক্ষ্য বানিয়ে দেন বিশ্ব সেরা এ খেলোয়াড়।
কিন্তু কলম্বিয়া গোলরক্ষক মার্টিনেজের গায়ে মেরে মূল একাদশে নিচের স্থানটাকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করেন নাপোলির ল্যাভেজ্জি।
প্রথমার্ধের শেষ তিন মিনিট আর্জেন্টিনার উপর দিয়ে ছোঠখাট ঝড় বইয়ে দেয় ফ্যালকাওয়ের কলম্বিয়া। কিন্তু কাঙ্খিত গোলের দেখো পাইনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধেও চলতে থাকে আর্জেন্টিনার হতাশাজনক ফুটবলের প্রদর্শনী। বল দখলের লড়াইয়ে তারা এগিয়ে থাকলেও সুন্দর ফুটবলের অনুপস্থিতি ছিল।
এলোমেলো আক্রমণগুলো খেঁই হারিয়েছে কলম্বিয়ার রক্ষণে গিয়ে। নিরুপায় কোচ সার্জিও বাতিস্তা ৬০ মিনিটের সময় ল্যাভেজ্জি ও ক্যাম্বিয়াসোর বদলে মাঠে নামান আগের ম্যাচের গোলদাতা সার্জিও অ্যাগুয়েরো ও ফার্নান্দো গ্যাগোকে।
অ্যাগুয়েরো নামতেই আর্জেন্টিনার খেলায় প্রাণ ফিরে আসে। দল হিসেবে খেলতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। জায়গা বানিয়ে আক্রমণগুলোকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টাও তাদের মধ্যে দেখা যায়।
মাঝমাঠে থেকে আক্রমণের বলগুলো বানিয়ে দিচ্ছিলেন মারাদোনার জামাই অ্যাগুয়েরো।
গোলের চেষ্টায় রক্ষণ খালি হয়ে যাওয়ায় ৬৬ মিনিটে গোল প্রায় হজম করে ফেলেছিল মেসির দল। পাবলো আরমেরোর বাঁকানো শট গোলরক্ষক রোমেরোকে ফাঁকি দিলেও পোস্টে হাওয়া লাগিয়ে বেরিয়ে যায়।
৭২ মিনিটে আরেক ব্যর্থ এভার বানেগার বদলে মাঠে নামেন গঞ্জালো হিগুয়াইন। শেষ ১৮ মিনিট গোলের তাড়নায় একের পর আক্রমণ করে গেছে স্বাগতিক আর্জেন্টিনা।
কিন্তু অনুজ্জ্বল মেসি, তেভেজ, জানেত্তিরা কলম্বিয়ার জমাট রক্ষণ ভাঙ্গতে পারেননি।
এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রাপ্তি অ্যাগুয়েরো ও হিগুয়াইনের একক ফুটবল প্রদর্শনী। আরেকজনের কথা না বললে ভুল হবে। তিনি হলেন সার্জিও রোমেরো। খেলার শেষ মুহূর্তে গুদিরেজের শট না থামালে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তো ১৪ বারের কোপা চ্যাম্পিয়নরা।
গ্যালারী ভর্তি দর্শকের দুয়ো খেয়ে অপমানিত হয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা দল।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ কোপার অতিথি কোস্টারিকা।
কোস্টারিকাকে কি হারাতে পারবে এই আর্জেন্টিনা? শেষ আটে কি জায়গা পাবে বাতিস্তার দল?
প্রশ দুটোর উত্তর আপাতত জানা নেই। তবে এই আর্জেন্টিনার গা থেকে যে 'ফেভারিট'র তকমা সরে গেছে, এটা এতক্ষনে জানা হয়ে গেছে সবার।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।