আপাতত ঘুরপাক খাচ্ছি!
১। অসমাপ্ত কবিতা
অসমাপ্ত কবিতার উপর ঘুমিয়ে পড়ে
দিন যায় ক্ষণ যায় আমার
শব্দেরা যেন বড্ড বাউন্ডুলে হয়ে গেছে
তারা ভুলে যাওয়া বন্ধুর মত
কাছে কিবা দূরে কোথাও হারিয়েছে
নয়ত প্রাত:ভ্রমন কিংবা
সান্ধ্যভ্রমনে বেড়িয়েছে
আমাকে তাদের মনেই পড়ে না
আমার বড্ড একলা নিরালা।
প্রিয়তমাকে নিবিড় নির্জনে পেয়ে
কথা কি ফুরায় বলো
কথার ফোয়ারায় কত রজনীতো
উদ্ভাসিত হলো
কত সহস্র অলিখিত কবিতা
পথ হারালো
পথ হারালো।
হারানো কবিতা ফিরে পাওয়ার ব্যাকুলতা নেই
নেই চলে যাওয়া স্রোতের টান
হাল ধরেছি জীর্ণ তরীর
আবার আসুক ঝড় তুফান।
২।
মানচিত্র
আমি কি জন্য লিখি
কার জন্য লিখি
দুঃখ নেই
কষ্ট নেই আমার
নেই মন ভুলানো বাতায়ন
তবে কি জন্য লিখবো
কার জন্য লিখবো
কি হবে ছাইপাশ লিখে।
হাতের ব্যাধিতে হাত চেনেনা হাত
বুকের ব্যাথায় রাত হয়ে যায় কাত
মনবেদিতে ফুল হাসেনা
প্রজাপতি কাছে আসেনা।
আবার তো সেই সকাল হবে
দাঁত মেজে ফিটফাট হবো
বাবু সাজবো
অফিসে যাবো
দিন গত হবে
পরশু তরশু গত করে
সবার মত দেহ গুটাবো।
কি হবে খাতার
পৃষ্ঠা কমিয়ে
কলম দমিয়ে
হাহাকার জমিয়ে।
তবে
একটা কিছুর জন্য তো
লিখতে পারি
আমার মায়ের ছেঁড়া আঁচলের
শাড়ি নিয়ে
যে আচলের বাতাসে
অন্ন সুপ্রসন্ন হতো,
দু কলম লিখতে পারি
বাবার সেই তেল কুচকুচে
সাদা পাঞ্জাবীটা নিয়ে
যে পাঞ্জাবীর ফুটো গলে
আমার জীর্ণ পৃথিবী
দেখা যেত।
মনে পড়ে
রোজ শুক্রবার
আমি আর বড় বোন নাহার
জুম্মার নামাজ
সমাপ্তির অপেক্ষায় থাকতাম
বাবার পাঞ্জাবীর পকেট পুরে
আসতো হরেক তোহফা
হরেক আশীর্বাদ।
সেই সব আশীর্বাদ
আজ আর নেই,
নেই মা-বাবা কেউ
বোনটা স্বামীগৃহে
রোগ-শোকে
পাথর দিন গুনছে,
বাবার সেই ফুটো পাঞ্জাবী
মায়ের ছেঁড়া শাড়ী
আজ আমার দেশের মানচিত্র।
৩। বিভেদের মতবাদ
গুনীদের মত
সরল ভঙ্গীতে জটিলতর
কিংবা মিহিসুরের মন্ত্রবলে
কথা বলতে শিখিনি
কোন অস্ত্র নেই আমার।
জীবনের বিদীর্ণ দর্পনে মুখ চেয়ে
কোন আলো চোখে পড়েনা
সব আলো নিভে গিয়ে
এক জমাট আগ্নেয়পথের দেখা পেয়েছি
সেই পথে পা রাখতে গিয়ে
তুমি বললে
এ পথ ঈশ্বরের পথ
এ পথে শুধু নির্দেশিতরাই যায়।
ধন্যবাদ মহামান্য
বিভেদের মতবাদটা তাহলে
তোমার কাছ থেকেই উৎসারিত।
৪। সুন্দরের বসত
সুন্দর এসে বাসা বেঁধেছে
খড়ের চালে হরিৎ ডালে
শ্যামগাঁয়ের তটিনী চিবুকে
এই বিস্তীর্ণ বাংলার বুকে।
সুন্দর এসে বাসা বেঁধেছে
পড়ন্ত বিকেলে গাঁয়ের বধূর মুখে
পূর্ণিমা চাঁদে আলোকিত ভূমে
যেখানে নির্জনতা স্নিগ্ধ আদরে চুমে।
রূপমাধূর্যের গুন কদমফুল
হলুদ সরষে ক্ষেতের
সুরভী নিয়ে উড়ন্ত মৌমাছি
যেন ঘরে ঘরে
অমৃত বেঁচে থাকার
নব বারতা পৌঁছায়।
এখনো রাত হলে
ডাহুকের আর্তনাদ ভেসে আসে
লক্ষীপেঁচার অশনী শংকেত শুনে
দুঃখিনী নারী জীর্ণ শাড়ীতে
জরাজীর্ণ সন্তানকে বুকে আগলে রাখে
প্রতি নিরন্ন দিবসের কথা ভুলে
শূন্য চিত্তে অষ্ট প্রহর গুনে।
'আমার সোনার বাংলা'
তুমি আছো আমার মা মাটির বুকে
সরল মানুষ সরল জীবনের
প্রচ্ছন্ন সুখে দুঃখে।
ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।