আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিগারেট থেকে সব নেশার শুরু

আমাদের বশুবাড়ীর ঘাটের ঐতিয্য আর রক্ষাকরা গেলনা সেখানে াখেন এখন বাজে লোকেরা আড্ডা মারে। চাই মাদকমুক্ত বাংলাদেশ ইমদাদুল হক মিলন অনার্স পড়ার সময় সিগারেট ধরলাম আমি। তখন একটু একটু করে লেখক হচ্ছি। ডানহিল নামের নরম ধরনের, লাল রঙের চওড়া প্যাকেটের একটা সিগারেট ছিল। সিগারেটের নেশা যাঁদের খুব তীব্র, তাঁরা ওই সিগারেটটা মোটেই পছন্দ করেন না।

কবি রফিক আজাদ আমাকে বলতেন, ‘কী একটা সিগ্রেট খাও মিয়া? ভাতের মতন লাগে!’ তিনি পছন্দ করতেন ফাইভ ফিফটি ফাইভ, বেনসন অ্যান্ড হেজেজ। আমি ডানহিল খেতাম মাইল্ড ধরনের বলে। পরবর্তীকালে যখন পাকা সিগারেটখোর হয়ে উঠেছি, তখন খেতাম বেনসন। তার আগে দুই বছর ছিলাম জার্মানিতে, তখন খেয়েছি মার্লবোরো। সেটা খুবই কঠিন সিগারেট।

একটা খেলে খবর হয়ে যায়। আমার প্রিয় বন্ধু অভিনেতা, বিজ্ঞাপন নির্মাতা এবং আরো বহু পরিচয়ে পরিচিত আফজাল হোসেন, সানাউল আরেফিনথওরা কেউ সিগারেট খায় না। আফজাল ও আরেফিন মাত্রা বিজ্ঞাপনী সংস্থার দুই স্বত্বাধিকারী। ওদের নয়াপল্টনের অফিসে প্রায় প্রতিদিন আড্ডা দিতে যাই। ১৯৮৭ সালের কথা।

ওরা গল্পগুজব করে, চা খায় আর আমি অবিরাম সিগারেট টানি। তখন আমার ব্র্যান্ড বেনসন। আফজাল একদিন বিরক্ত হয়ে গেল’এত সিগারেট খাস কেন?’ খুবই সরল আঙ্গিকের একটা হাসি দিয়ে বললাম, খেতে ভাল্লাগে। আরেফিন বলল, ‘সিগ্রেট তুই ছাড়তে পারবি?’ হ্যাঁ। ইচ্ছা করলেই পারব।

আফজাল বলল, ‘তুই পারবি ঘোড়ার আণ্ডা। তোর কোনো মনের জোর নাই। সিগারেট তুই জীবনেও ছাড়তে পারবি না। ’আফজালের গলায় ভালো রকমের শ্লেষ ছিল। আমার খুবই প্রেস্টিজে লাগল।

তখনো হাতে সিগারেট জ্বলছে। অর্ধেকও খাওয়া হয়নি। আফজালের চোখের দিকে তাকিয়ে সেই সিগারেট অ্যাসট্রেতে গুঁজে দিলাম। যা, ছেড়ে দিলাম। জীবনে আর সিগারেট খাব না।

তারিখটা পরিষ্কার মনে আছে। ২০ অক্টোবর ১৯৮৭। আমার প্রতিজ্ঞা দেখে আফজাল-আরেফিন দুজনই খুব হাসাহাসি করলথ’আরে রাখ, এইসব নাটক অনেক দেখছি। কে একজন বিখ্যাত মানুষ বলেছিলেন না, সিগারেট ছাড়া খুবই সহজ। জীবনে কতবার ছেড়েছি আমি! তোর হবে সেই দশা।

কালই আবার খেতে শুরু করবি। ’এই একটা েেত্র মনের জোরটা আমি সত্যি সত্যি দেখাতে পারলাম। প্রচণ্ড জেদও হলো। বন্ধুদের আমি দেখিয়ে দেব, দ্যাখ, সিগারেট আমি ছাড়তে পেরেছি। সত্যি, ছাড়তে পেরেছি।

তারপর আজ পর্যন্ত আমি আর সিগারেট ধরিনি। সত্যি সিগারেট ছাড়ার পর প্রথম প্রথম যখন নেশাটা মাথাচাড়া দিত, পকেটে চুইংগাম রাখতাম। চট করে একটা চুইংগাম মুখে পুরে চিবাতে থাকতাম। অন্যকে সিগারেট খেতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চোখ সরিয়ে নিতাম। কেউ অফার করলে অ্যাভয়েড করতাম।

কাজটা একটু কঠিন। প্রথম কয়েক দিন বেশ অসুবিধা হয়। প্রথম কয়েক দিন আমি তো স্বপ্নেও সিগারেট খেয়েছি। তারপর ধীরে ধীরে সব ঠিক। একসময় দেখি, অন্যে সিগারেট খেলে বিরক্ত লাগে, সিগারেটের ধোঁয়া সহ্যই করতে পারি না।

তার মানে, সিগারেট ছাড়ার একমাত্র অস্ত্র মনের জোর। যেকোনো নেশা পরিত্যাগ করার একমাত্র অস্ত্র মনের জোর। মনের জোরে নেশার জগৎ থেকে ফিরে আসা অবশ্যই সম্ভব। আর সিগারেট থেকেই সব নেশার শুরু। সুতরাং সিগারেটে আসক্ত হওয়া যাবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।