এতটুকু বুঝি জীবনের কাছে আবেগ নস্যি।
আমার বাবা প্রচন্ড ধুমপায়ী...... ছোট বেলায় বাবা বাড়ীতে গেলে মোড়ের দোকান থেকে সিগারেট আনার কর্মটুকু আমি সাদরে পালন করাতাম, কারন সিগারেট আনার বিনিময়ে ভালই উপরি পেতাম যা দিয়ে বন্ধুদের সাথে দাপটের সাথেই চলতে পারতাম।
তো আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ি তখন সবে-বরাতের রাতে এলাকার বন্ধুদের সাথে মসজিদে গেলাম...পরে মসজিদ থেকে বের হয়ে চাঁদের আলোয় ব্ন্ধুদের সাথে হাঁটতে থাকলাম। এমন সময় এক পুংটা বন্ধু বলল চল আজ সবাই সিগারেট খাই..... এরই মধ্যে দেখা গেলো সবাই সায় দিলো, আমিও সায় দিলাম।
কিন্তু সিগারেট সরবরাহের দায়িত্ব পড়লো আমার ও ঐ পুংটা বন্ধুর উপর কারন দুজনের বাবাই ধুমপায়ী,,,,, কি আর করা? দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়ে বাবার সিগারেটের প্যাকেট চুরি করে নিয়ে আসলাম।
সবাই মিলে এক অন্যরকম উত্তেজনায় সিগারেট ধরাতে লাগলাম! সিগারেট ধরিয়ে যেই না টান দিলাম, সাথে সাথেই আমার কাঁশি পেল! এটা যেন তেন কাশিঁ নয় মনে হচ্ছে মৃত্যু পথযাত্রী কোন যক্ষা রোগীর কাঁশি। আমি লক্ষ্য করলাম আমার মতো সবাই প্রায় কাঁশতেছে... সেদিন সিগারেট ছুড়ে পেলে দিলাম।
এর পর থেকে বাবার সিগারেট আনার কর্ম পালনে আমি সম্মতি দিলাম না। বরং সিগারেট ত্যাগ করার জন্য বাবাকে চাপ দিলাম....কিনস্তু বাবা সিগারেট ভালা পায় তাই সিগারেট ছাড়তে পারে নাই। আমিও কিছু বলি না, বাবার ভালো লাগলে খাক আমার কি?
কিন্তু কিছু দিন আগে বাবাকে ডাক্তার দেখালাম, ডাক্তার রিপোর্ট দেখে আমাকে একলা ডেকে বললেন..তুমি কি সিগারেট....??????? আমি বললাম না স্যার আমি সিগারেট প্রছন্দ করি না।
ডাক্তার আমাকে বললেন যে ভাবেই পারো তোমার বাবার সিগারেট প্রান করা বন্ধ করো।
এর পর আমি বাবাকে আল্টিমেটাম দিলাম বাবা তোমাকে সিগারেট ছাড়তেই হবে। তোমার জন্য সিগারেট হারাম...কিন্তুু কে শুনে কার কথা? বাবাতো নাছোড় বান্দা, বাবা লুকিয়ে সিগারেট খাওয়া শুরু করে আমিও বাবাকে পাহারা দেওয়া শুরু করি। এবং বাবা আমার হাতে ধরা খায়.. আমি এবার বাবাকে বলি তুমি যদি আবার সিগারেট খাও তাহলে আমিও তোমার সাথে সিগারেট খাবো। বাবা কিছুই বলে নাই...।
আমিও কথা মতো এক প্যাকেট '''বেনসন ও একটা লাইটার কিনে সাথে রাখি। এরই মধ্যে বাবা আমার সামনে হাতে সিগারেট অবস্থায় ধরা খায়। আমিও বাবাকে বলি ''' বেয়াদপী মাপ করো বাবা.. তুমি আমাকে শেষ পর্যন্ত এই সিগারেট খাওয়াতে বাদ্য করলা.....আমি অত্যন্ত ঘৃনার সহিত তোমার সামনে সিগারেট ধরাচ্ছি। বলেই প্যাকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরিয়ে পেললাম এবং টান দেওয়ার পরই শুরু হলো যক্ষা রোগীর মরন কাঁশী!! বাবা তো আমার কান্ড দেখে ঠাডা(বীজলী) পড়া ব্যক্তির মতো জড় পধার্থ হয়ে গেলো। আমি যখন আবারও সিগারেট টান দিবো তখনই বাবা বলে উঠলো যাও আজ থেকে আমি আর সিগারেট খাবো না।
আমিও বলালাম বাবা তোমাকে আমি পর্যবেক্ষনে রাখলাম......ততদিন পর্যন্ত আমার সাথে সিগারেট ও লাইটার থাকবে। .......আমিও বাবার পেছনে স্পাই লাগিয়ে রেখেছি.......খবর পাওয়া মাত্র বাবার সামনে গিয়ে সিগারেট টানতে হবে।
আমি বাবার সাথে বেয়াদপীর জন্য সত্যিই লজ্ঝিত......আসলে এছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিলোনা.....এটাই ছিলো আমার....সর্বশেষ এন্টিবায়োটিক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।