মনজুর আহমদ গোয়াইনঘাট থেকেঃ আজ থেকে তামাবিল সীমান্তে আবারও শুরু হচ্ছে জয়েন্ট বাউন্ডারী ওয়ার্কিং গ্র“প এর জরিপ কাজ। বৈঠকে বাংলাদেশী জরিপ টিম প্রায় ৩ একর ভূমি ছেড়ে দিতে পারে বলে একটি সূত্র আভাস দিয়েছে । সূত্র মতে, উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার পর জরিপ কাজ শুরু হচ্ছে। জমি ছেড়ে দেয়া নিয়ে তামাবিলে কয়লা ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আগামী ৩০জুন পর্যন্ত সীমান্তে জরিপ কাজ চলবে বলে জানা গেছে।
পাদুয়া সীমান্তে ১২৭০ থেকে ১২৭১ এর ৭এস নং পিলার পর্যন্ত তিনটি খুঁটি বসিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে বাংলাদেশের ভূ-খন্ড ভরতকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর আজ আবারও সিলেট‘র বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থল বন্দর তামাবিল সীমান্ত এলাকার ১২৭৫নং পিলারের ১এস থেকে ৭এস পিলার পর্যন্ত অতি মূল্যবান বাংলাদেশী ভূ-খন্ড ৩ একর ভূমি বাংলাদেশী জরিপ টিম ছেড়ে দিতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে । জরিপ টিমের সাথে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি এড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে তামাবিল স্থল বন্দরের প্রায় ৩ একর ভূমি ভারতকে বুঝিয়ে দেবে বলে স্বীকার করেছে একটি সূত্র। এর বাইরে ওই সূত্র আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, সীমান্ত সমস্যাটি দীর্ঘ দিনের।
বিষয়টি ঝুলন্ত না রেখে সকল মহলের গ্রহণযোগ্য সমাধান হোক-এটা আমরা সকলে প্রত্যাশা করি। যাতে করে উভয় রাষ্ট্রে সীমান্তবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালে সীমান্ত নির্ধারণ করা হয়। এখন আর সীমান্ত নির্ধারণের প্রশ্নই উঠে না। তবে উভয় দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত যা হবে-এ বিষয়ের উপরে আমার বলার কিছু নেই।
দু‘টি রাষ্ট্রের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই বলা যাবে না। কারো ব্যক্তি স্বার্থে সীমান্ত সমাধান হচ্ছে না। এর বেশী কিছু বলতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় দু‘টি জরিপ কাজ করছে। তবে এতে কোন সফলতা আসেনি।
স্থানীয় জরিপ টিমের টিম লিডার সহকারী পরিচালক (জরিপ) মোঃ দবির উদ্দিন আলাপকালে জানান, আমি এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না। তবে যা করছি উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে করছি। আমাদের কাজ কর্ম দেখে বুঝে নিন আমরা কি করছি।
উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালে ইন্ধিরা- মুজিব স্বারিত চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ যৌথ জরিপের মাধ্যমে স্থায়ী ভাবে সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়। (এল বি এ) ল্যান্ড বাউন্ডারী এগ্রিমেন্ট - এ উল্লেখ আছে চুক্তি স্বারের ৬ মাসের মধ্যে অপদখলীয় ভূমি কোন প্রকার তিপূরণ ছাড়াই হস্তান্তর করতে হবে।
বাংলাদেশ তা মানলেও ভারতীয়রা এখনও তা মানেনি। যার ফলে প্রতিনিয়ত সমস্যা লেগেই আছে। জানা যায়, ২০০২ সালে সীমান্তে উভয় দেশের মাঠ পর্যায়ে যে জরিপ কাজ হয়েছে-উল্লিখিত ১০টি স্থানের জমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ড হয়। তখন ভারত কোন প্রতিবাদ করেনি।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট কয়লা আমদানী কারক গ্র“পের সভাপতি এমদাদ হোসেন জানান, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক।
কোন অপশক্তি আমাদের এ স্বাধীন মানচিত্রকে কলুষিত করুক-আমরা তা চাই না। তিনি বলেন, তামাবিল স্থল বন্দর থেকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছে। এ স্থল বন্দরের কিছু জায়গা ভারতকে ছেড়ে দিলে সীমান্তের নিরাপত্তা বিঘিœত হবে, পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাবে, কয়লা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক তির স্বীকার হবে, হাজার হাজার পাথর, বালু ও কয়লা শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে এবং সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। তিনি আরও বলেন, আমরা বর্তমানে শান্তিতে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছি। হঠাৎ করে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কোন মহলই মেনে নিতে পারবে না।
তামাবিল স্থল বন্দর রার্থে প্রয়োজনে সীমান্তবাসীকে নিয়ে দূর্বার আনন্দোলন গড়ে তুলা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
News Source
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।