আমি নতুন কিছু লিখবো শেল গ্যাস ॥ উঠে আসবে পাথরের সত্মর থেকে
শেল গ্যাস, দেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। উৎপাদনশীল ৰেত্র থেকে কিভাবে নতুন পদ্ধতিতে শেল গ্যাস উত্তোলন করা যায় তা নিয়ে চিনত্মাভাবনা শুরম্ন হয়েছে। উন্নত কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকা তার গ্যাস চাহিদার শতকরা ৫০ ভাগই শেল গ্যাস দিয়ে মিটিয়ে থাকে। আমেরিকার সহায়তা নিয়ে চীন এবং ভারতও সম্প্রতি শেল গ্যাস উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরম্ন করেছে।
বাংলাদেশেও শেল গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম গত জানুয়ারিতে হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে শেল গ্যাসের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করে দেন। ওই কমিটিতে পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি), বাপেঙ্রে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জিএসবির একজন সদস্য ছিলেন।
সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে কমিটি সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আগামী সোমবার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে 'বাংলাদেশে শেল গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা' বিষয়ক উপস্থাপনা করবে হাইড্রোকার্বন ইউনিট।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কমিটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাংলাদেশেও শেল গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল।
তবে কি পরিমাণ গ্যাস পাওয়া সম্ভব সে বিষয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। শেল থেকে গ্যাস আহরণে বিশেষ কারিগরি দৰতা থাকা জরম্নরী। পৃথিবীর যেসব গ্যাস কোম্পানি শেল গ্যাস আহরণ করে তাদের এসব কাজে আহ্বান জানাতে কমিটি বিশেষভাবে সুপারিশ করেছে।
বাংলাদেশের জন্য ধারণাটি একেবারে নতুন হওয়ায় কেউ কেউ এর বিরোধিতা করলেও কমিটি মনে করছে, প্রতিবেশী দেশ ভারত তাদের ৰেত্রে শেল গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই জোরেশোরে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। আমাদের এখানেও প্রক্রিয়া শুরম্ন না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে আমেরিকান কোম্পানি গ্যাস উত্তোলনের কাজ করছে। চাইলে সহজেই পিএসসির মাধ্যমে শেল গ্যাস আহরনের বিষয়ে অগ্রসর হওয়া যায়। জ্বালানি মন্ত্রণালয় শীঘ্রই এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরম্ন করবেন বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, যেসব ৰেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলণ করা হচ্ছে সেসব যায়গায় শেল গ্যাস পাওয়া যাবে এ কারণে নতুন করে ৰেত্র উন্নয়ন বা আবিষ্কারের প্রয়োজন পড়বে না। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর শুধু কূপ খনন করলেই চলবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য জানান, বাংলাদেশের ৰেত্রগুলোতে তিন হাজার মিটার থেকে তিন হাজার ২০০ মিটার বা তার চেয়ে কিছুটা নিচে গিয়ে গ্যাস আহরণ করা হয়। এর নিচের কোন সত্মরে এখনও অনুসন্ধান চালানো হয়নি। সঙ্গত কারণে ভূপৃষ্ঠের তলদেশের ওই সব স্থানে কিছু আছে কি না তা জানা যায়নি। তিনি জানান, খনি উন্নয়নে কারিগরি জ্ঞান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের আরও গভীর থেকে খনিজ আহরণ করা সম্ভব হবে। পৃথিবীর অনেক দেশই পাঁচ হাজার মিটার গভীরতা থেকেও খনিজ আহরণ করছে।
তিনি বলেন, আমরা এই তিন হাজার বা তিন হাজার ২০০ মিটার যেতে গিয়েও মাটির একটার পর একটা সত্মর ড্রিলিং করে যাই। কিন্তু এই সত্মরগুলোতে কি আছে বা নেই তা কখনও অনুসন্ধান করি না। এসব সত্মরে অনুসন্ধান চালিয়েই মূলত শেল গ্যাস আহরণ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত বালু থেকে গ্যাস আহরণ করি আর শেল গ্যাস হবে পাথরেরর ফাঁকে ফাঁকে থেকে যাওয়া গ্যাস।
কমিটির অপর এক সদস্য জানান, শেল গ্যাস মানে শেলের মধ্যে লুক্কায়িত গ্যাস।
বাংলাদেশেও এই গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব নিয়ে দেশে এর আগে কোন গবেষণা না হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শেল গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। যেহেতু বর্তমানে ব্যাপক গ্যাস সঙ্কট চলছে তাই কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও শেল গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া উচিত। তেল বা কয়লার চেয়ে শেল গ্যাসের দাম কম পড়বে বলে মনে করেন তিনি। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সঙ্কটের কারণে সব উৎস থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আমাদের এখানেও এসব কাজ শুরম্ন করা উচিত।
বাংলাদেশে এখন উৎপাদনশীল কূপের সংখ্যা ৭৯টি। এর মধ্যে দেশী গ্যাস কোম্পানির রয়েছে ৪৮টি আর আইওসিগুলোর রয়েছে ৩১টি কূপ। কূপগুলো প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করছে। শেল গ্যাস উত্তোলনে কার্যকর পদৰেপ নিলে সহসাই গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।