চারপাশে আত্মমুগ্ধ আদিমতাবোধ, আর গ্রন্থিবদ্ধ চিন্তা; সেখান থেকে মুক্তির পথ খুঁজি...
[ব্লগের শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য শিশুতোষ গল্প]
দিনের প্রথম আলোয় মৌমিতাকে লাল মোরগটি ডেকে তোলে। তখনও বাড়ির সবাই প্রায় ঘুমিয়ে, শুধু দাদু ওঠেন। মৌমিতার সাথে লালমোরগটির বেশ ভাব। প্রথম যেদিন ডিম ফুটে বেড়িয়েছে, মৌমিতা সেদিন থেকেই লাল মোরগটিকে খুব আদোর করে। এখন মোরগটি অনেক বড় হয়েছে, তার মাথার উপর বেশ বড় একটি লাল টায়রা, সেটা নিয়ে সে মাথা উচু করে চলে।
লাল মোরগের টায়রাটাকে
লাগছে যেন মুকুট এক,
অনেক বড় পুচ্ছ যে তার
ডানার সাথে উড়ছে দেখ্ ।
মৌমিতা তার মোরগটির নাম রেখেছে টুকটুক। সে সারাদিন মৌমিতার সাথে সাথেই থাকে, খেলা করে। খুব ভোরে সে মৌমিতাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। কুক্কু রু-উ-ক্কু।
কুক্কু-রু-উ-ক্কু। তার মানে, উঠে পড়। উঠে পড়। মৌমিতাও তখন ঘুম থেকে উঠে, দাঁত মেজে, মুখ ধুয়ে একদম রেডি; তারপর পড়তে বসে, 'আমি হব সকাল বেলার পাখি'।
মিতুরও একটি মোরগ আছে।
সাদা আর ধুসর রঙের। মিতু বন্ধু হয় মৌমিতার। কিন্তু টুকটুক মিতুর মোরগটিকে একদম পছন্দ করে না। মৌমিতাদের বাড়িতে মিতুর মোরগটি এলেই গলা লম্বা করে দৌড়ে তাড়িয়ে দেয় টুকটুক। মিতুও তার মোরগের একটি নাম রেখেছে, টুনি।
টুনি খুব দুষ্টু। সারাদিন দুষ্টুমী করে ঘুড়ে বেড়ায়। অন্য মুরগী গুলোকে খেতে দেয় না, ঝগড়া করে। টুকটুকও তাই পছন্দ করে না, বন্ধুত্ব করে না। সে অন্যসব মোরগ-মুরগীর সাথে মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করে।
টুনি যদি শব্দ করে ডেকে ওঠে, টুকটুক জোরে শব্দ করে ডাকে, টুনি জোরে ডাকলে টুকটুক আরও জোরে ডাকে।
মৌমিতার দাদীর একটি কালো মুরগী আছে। দাদী সেই মুরগীটিকে খুব আদোর করেন। মুরগীটি প্রতিদিন একটা করে ডিম দেয়। কিন্তু টুকটুক ডিম দেয় না বলে দাদী তাকে একদম দেখতে পারে না।
মোরগ তো ডিম দেয়-ই না। দাদী বলে, আগামী ঈদে তিনি টুকটুককে জবাই করে তাঁর বড় জামাইকে খাওয়াবে। দাদীর বড় জামাই মৌমিতার ফুপা হন, তিনি ঢাকায় থাকেন।
এদিকে দাদীর কালো মুরগীটা প্রতিদিন একটা মাত্র ডিম দেয়। ডিম দিয়ে পাশের বাড়ির খড়ের চালে উঠে, চিৎকার করতে থাকে।
সে সারা গ্রামের মানুষকে জানিয়ে দেয় তার ডিম পাড়ার ঘটনাটি। মৌমিতা তাই ছড়া কাটে।
কট-কটাস্-কট্, কট্-কটাস্-কট্
ডিম পেরেছে মুরগীটা,
বিনোদ বাবুর খড়ের চালে
করছে সে তাই ষ্ফুর্তিটা।
ডিম পেরেছে বেশ করেছে
ধানের ডালায় বসে,
পায়খানা তাই করতে হবে!
দাদুর তক্তপোশে?
একদিন হলো কি, রাতে মৌমিতাদের বাড়িতে চোর এলো। এই কথা টুকটুক বুঝতে পেরে জোরে জোরে কক্-কক্ কক্।
কক্-কক্ কক্, করে ডেকে উঠলো। আর টুকটুকের ডাকে বাড়ির সবাই ঘুম থেকে জেগে উঠলো, তাই চোরও পালিয়ে গেল। দাদীও বুঝতে পারলেন টুকটুক না থাকলে চোর সেদিন সব কিছু চুরি করে নিয়ে যেত।
সমাপ্ত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।