সমাজকে বদলানোর জন্য নিজেকে আগে বদলানো প্রয়োজন। আসুন আমরা সবাই বদলে যাই সত্যের আলোয়।
পরিবারের সবাই শোকে কাতর। বাবুলের মৃত্যুতে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বাবা-মাসহ বাড়ির সবার মাঝেই শোকের ছায়া। এলাকার লোকজনও শোকাহত।
দাফনের চল্লিশ দিনের মাথায় করা হয় চল্লিশার অনুষ্ঠানও। কিন্তু যে বাবলুর জন্য শোক কাতর সবাই পঞ্চাশ দিনের মাথায় গতকাল লিবিয়া থেকে আসে সেই তারই ফোন। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীনগর উপজেলার বীরতার ইউনিয়নের মাশাখোলা গ্রামে। রফিক হাওলাদারের বড় ছেলে বাবুল (৩৮) এক বছর আগে দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে লিবিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে এক চীনা কোম্পানিতে তারা কাজেও যোগ দেন।
লিবিয়ার ওপর ন্যাটো বাহিনীর হামলার শুরুতে বাবুলের দুই প্রতিবেশী দেশে চলে আসেন। কিন্তু ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় বাবুল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে থেকে যান। কয়েক দিন পর বাবুলের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এক মাস পর লিবিয়া থেকে দশটি লাশ আসে বাংলাদেশে। এর মধ্যে নয়টি লাশই আত্মীয়স্বজনরা গ্রহণ করেন।
বোমার আঘাতে বিকৃত চেহারার একটি লাশ পড়ে থাকে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে। অনেক দিন বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গত ১লা এপ্রিল বাবুলের স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৩) হাসপাতালে গিয়ে লাশটি তার স্বামীর বলে দাবি করেন। কিন্তু বাবুলের ভাইয়েরা মাথার চুল কোকড়ানো না দেখে লাশটি তার নয় বলে সংশয় প্রকাশ করেন। গত ৩রা এপ্রিল বাবুলের স্ত্রী আবার হাসপাতালে গিয়ে পেটে অপারেশনের চিহ্ন দেখে জোর দাবি জানালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করে। ওই দিনই জানাজা শেষে বাবুলকে এলাকার রিয়াজুল জান্নাত কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চারদিনের মাথায় আয়োজন করা হয় মিলাদ মাহফিলের। কিন্তু গতকাল লিবিয়া থেকে সেই বাবুলের ফোন পেয়ে সবাই ভড়কে যায়। তখনও বাড়িতে কান্নাকাটি চলছিল। কান্নার শব্দ শুনে বাবুল জানতে চান কেন কান্নাকাটি হচ্ছে। বাড়িতে কোন বিপদ হয়েছে কিনা।
একে একে সবার সঙ্গেই তিনি কথা বলেন। বাবুলের পিতা রফিক হাওলাদার জানান, একজন পিতার কাছে তার সন্তানের মৃত্যুশোক যে কত বড় বোঝা তা আমি বুঝতে পেরেছি। আমার সন্তান বেঁচে আছে, এখন আমি অনেক সুখী। কিন্তু যাকে মাটি দিয়েছি সে না জানি কোন হতভাগা পিতার সন্তান। তিনি আরও জানান, বাবুল বেঁচে থাকলেও অনেক কষ্টে আছে।
আমি রক্ত বিক্রি করে হলেও ঋণ পরিশোধ করবো, তবুও বাবুলকে দেশে চলে আসতে বলেছি। বাবুলের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, বাবুল পিসি ভিসায় সারোয়ার নামে লিবিয়া যান। আর যে লাশটি দাফন করা হয়েছে তার কফিনে লেখা ছিল ফরিদ। কিন্তু কোন ঠিকানা লেখা ছিল না। আমি এপেনডিসাইটিস অপারেশনের চিহ্ন দেখে ধারণা করেছিলাম লাশটি আমার স্বামীর।
সন্তানদের নিয়ে এখন আমি কিছুটা হলেও শান্তিতে ঘুমাতে পারি।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।