লালন তোমার আরশীনগর আর কতদূর? আসলে আমাদের এ দেহটা হল বাড়ি, সে বাড়ির খুবই কাছে মস্তকে পড়শীর আসন। তিনি সব সময় আমাদের সাথে আছেন, যেমন মহানবীর হিজরতের রাতে শত্রুবেষ্টিত হয়ে পর্বতের গুহায় যখন আবু বকরের সাথে ছিলেন তখন আবু বকর ভয় পেলে তিনি বলেছিলেন, ভয় পেয়ো না আমরা দু'জন না তিনজন আছি।
বাড়ির কাছে আরশীনগর
সেথায় এক পড়শী বসত করে
আমি একদিনও না দেখিলাম তাঁরে। ।
গেরাম বেড়ে অগাধ পানি
নাই কিনারা নাই তরণী পারে,
বাঞ্ছা করি দেখব তারে
কমনে সে গাঁয় যাই রে।
।
কি বলব সে পড়শীর কথা,
হস্তপদ স্কন্ধমাথা নাইরে
ক্ষণেক ভাসে শূন্যের উপর
ক্ষণেক ভাসে নীরে। ।
পড়শী যদি আমায় ছুঁতো,
যম যাতনা সকল যেতো দূরে।
সে আর লালন একখানে রয়
লক্ষ যোজন ফাঁক রে।
।
ফকির লালন আক্ষেপ করছেন, তিনি একদিনও এ পড়শীর দেখা পেলেন না। রবীন্দ্রনাথের সোনার তরী কবিতার মত লালনও অকূল পাথারের তীরে বসে আছেন, ইচ্ছা ভবসিন্ধু পাড়ি দিয়ে পড়শীর সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
পড়শীর বর্ণনায় লালন বলছেন, তাঁর হাত-পা, মাথা-মুন্ড কিছু নেই, সে কিছুক্ষণ আমাদের দেহরসে ভাসে আবার কিছুক্ষণ ভাসে শুন্যে। দুঃখ-যাতনা বিনাশী, মৃত্যুহরা এ পড়শী যাকে ছোঁয় বা দেখা দেয় সে অমৃতত্ব লাভ করে।
কিন্তু আমাদের মাঝে থেকেও অন্তরতম এ পড়শী যেন লক্ষ যোজন দূরে। আমাদের সবার ভেতরে পড়শী আছেন, প্রশ্ন হল আমরা তার ভেতরে আছি কি না?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।