দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলার পাশাপাশি সরকারপন্থী শিক্ষকদের রোষানলের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের। এমনকি কর্মসূচি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হচ্ছে।
গত ২৪ এপ্রিল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারের পেছনে দাঁড়িয়ে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক মানববন্ধন করে ক্যাম্পাসে সাংবাদিক না রাখার ব্যাপারে জোর দাবি তুলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বিল্ডিংয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুল গণির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও শাবিপ্রবি সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি কোনো সাংবাদিক দেখতে চাই না। গত সিন্ডিকেট বৈঠকেও আমি একই কথা বলেছি। ’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন সাংবাদিকদের তোষামোদ করার জন্য প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থা করেছে। ১০ বছর আগেই নিষেধ করেছিলাম এখানে কোনো প্রেস ক্লাবের প্রয়োজন নেই। ’
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘অনেকে হলুদ সাংবাদিকতা করে পার পায় বলেই তারা আবার হলুদ সাংবাদিকতা করার সাহস পায়।
’
সমাবেশে ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনুস, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম দিপু ও শাহপরান হলের প্রভোস্ট সৈয়দ হাসানুজ্জামান শ্যামল বক্তব্য রাখেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ এমন একসময়ে সাংবাদিকদের দেখতে না চাওয়ার কথা জানালেন, যার আগের মাসে অপছন্দের রিপোর্ট করার অভিযোগে এক সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬০তম সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয় সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টার বিভাগের শিক্ষার্থী সাংবাদিক মেসবাহুল্লাহ শিমুলের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক মো. ফারুক উদ্দিন ও শুভজিত্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন লেখেন স্থানীয় একটি পত্রিকায়। এই প্রতিবেদনের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
শাবিপ্রবিতে বহিষ্কার ও সাংবাদিক না রাখার হুমকির বাস্তবতা যখন তৈরি হয়েছে, ঠিক একই সময় দেশে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাংবাদিকরাও পড়েছেন তোপের মুখে। বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের পরিণতি দাঁড়িয়েছে হামলা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হওয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জীবনে জাতীয় দৈনিক, বেসরকারি টেলিভিশন ও বার্তা সংস্থার হয়ে সাংবাদিকতা করা একসময় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রচণ্ড নেশার ব্যাপার ছিল। এই নেশার কারণে পরবর্তীকালে অনেকেই পেশা হিসেবেও নিয়েছেন সাংবাদিকতা। দেশের আলোচিত সাংবাদিকদের বেশিরভাগেরই উত্থান ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতার মাধ্যমে।
কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা আক্রান্ত, বিপন্ন ও অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমার ক্যাম্পাস-এর তথ্যানুসন্ধানে উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতার বিপন্নতার করুণ চিত্র—
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ২৬ জন সাংবাদিক। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চারুকলা অনুষদে ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় আহত হন দৈনিক যায়যায়দিনের তত্কালীন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার পলাশ সরকার, দিনকালের জাহেদুর রহমান আরমান, এবিসি রেডিওর আবদুর রহিম দীপু, দৈনিক সংগ্রামের মুহাম্মদ আরীফ হোসাইনসহ ৮ সাংবাদিক। একই বছরের অক্টোবরে কার্জন হল এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে আহত হন বার্তাসংস্থা ইউএনবির বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম জুয়েল আহমেদসহ দুইজন। ২০১০ সালের ৫ এপ্রিল এসএম হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সাদিদ জাহান সৈকতের ক্যাডার বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হন সাপ্তাহিক বুধবারের আহম্মেদ ফয়েজ ও সাপ্তাহিকের আনিস রায়হান।
একই বছরের জুনে সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন এবিসি রেডিওর বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার রামিম হাসান ও সাপ্তাহিক ২০০০-এর স্টাফ রিপোর্টার মুনির মোমতাজ। জুলাই মাসে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের ক্যাডার সোহেল উদ্দীন ও জাহিদ হাসানের হাতে আহত হন সংবাদ সংস্থা শীর্ষ নিউজের তত্কালীন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার তানিন মেহেদি। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কর্তব্য পালনের সময় এএফ রহমান হলে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি রেজা সেকান্দার ও তার সহযোগীদের হামলায় আহত হন ইংরেজি দৈনিক নিউনেশনের তত্কালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার কদর উদ্দীন শিশির। সর্বশেষ ৬ নভেম্বর রাতে এক নারী সাংবাদিককে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ কর্মীদের সশস্ত্র হামলায় আহত হন ৬ সাংবাদিক। চলতি বছরের মার্চে চাঁদাবাজির রিপোর্ট করায় দৈনিক ইনকিলাবের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ফারুক হোসেনকে হত্যার হুমকি দেয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম ও সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বছরের ১৬ মে দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইমন রহমানকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। ১৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে আহত হন এক ফটোসাংবাদিক। ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি পলাশ মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাঈদ জুনায়েদ, দৈনিক শক্তির জাবি প্রতিনিধি ইকবাল হোসাইন সৈকতকে ছাত্রলীগ কর্মীরা মারধর করে। এ ঘটনার এখনও কোনো বিচার হয়নি। এর আগে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রেজাউল হক কৌশিককেও মারধর করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯ সালের ২ জুন ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে দুইজন, ২০০৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দুইজন, ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি একজন, ৯ জুন একজন ও ২০১০ সালের ১ সেপ্টেম্বর এক সাংবাদিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হাতে আহত হন। গত দুই বছরে ক্যাম্পাসের দুটি সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয় বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ২০০৯ সালের মার্চে সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব বন্ধ করে দেয় বর্তমান প্রশাসন। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান গত বছরের ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল পরিচয়পত্র প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের ‘হলুদ সাংবাদিক’ আখ্যা দিয়ে ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সাংবাদিক দরকার নেই’ বলে বিষোদগার করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দুই বছরে পুলিশ ও ছাত্র সংগঠনগুলোর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ সাংবাদিক। ২০০৯ সালের ১৫ মে দৈনিক আমার দেশ-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাশেদ খান মেননকে পেটানোর মাধ্যমে শুরু হয় সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাংবাদিক নির্যাতন। ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ কর্মীরা মারধর করে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি এমদাদুল হককে। একই দিন আরেক সাংবাদিকের মাথা কেটে ফেলার হুমকি দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। একই বছরের ২ আগস্ট দৈনিক কালেরকণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাজীব নন্দীকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে।
ওইদিন পুলিশের মারধরের শিকার হন দৈনিক ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এমদাদুল হক, শীর্ষ নিউজ-এর নাসিমুল আহসান। একই দিন তিন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য বহন ও অগ্নিসংযোগের মামলা দায়ের করা হয়। গত ৬ ডিসেম্বর ডেইলি সানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নির্ঝর মজুমদারকে শাটল ট্রেনে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এর এক মাসের মধ্যেই শাটল ট্রেনে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন দৈনিক ডেসটিনির প্রতিনিধি মাসউদুল আলম এবং দৈনিক খবর প্রতিনিধি হুমায়ুন মাসুদ।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
গত ২০ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘সাংবাদিক বলতে কিছু নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক এবং কোনো ধরনের সংবাদ পাঠানোর প্রয়োজন নেই। ’ সিলেটের স্থানীয় একটি দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক মেসবাহুল্লাহ শিমুলকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে সাংবাদিকদের এভাবেই জবাব দেন উপাচার্য।
আর ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, শাবি থেকে সিলেট প্রেস ক্লাব মাত্র ২ কিলোমিটারের পথ।
এক্ষেত্রে শহরের সাংবাদিকরা এখান থেকে নিয়মিত নিউজ করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টে ছাত্রদের সাংবাদিক বলে আলাদা পরিচয় বহন করার মতো কাউকে অধিকার দেয়নি।
দেশের কোনো আইনে যদি সাংবাদিকদের শাস্তির বিধান দেয়া না থাকে, তারপরেও আমরা দেব।
গত বছরের এপ্রিলে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে আমার দেশ-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক শিমুল এলাহী ও এমইউ শিমুলকে বহিষ্কারের হুমকি দিলেও পরে সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে শোকজ করে প্রশাসন। একই বছর সংবাদ প্রচারের জের ধরে সাংবাদিক কাজী রাকিনকে শোকজ ও হুমকি দেয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ। এমনকি সাবেক প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও জনকণ্ঠের সাংবাদিক সায়েদ আবদুল্লাহ যিশুকে হলের নিজ কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয় ছাত্রলীগ। গত বছরের শেষের দিকে কর্মরত সাংবাদিক হাসান সোহেলকে মারধর করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রেস ক্লাবের বর্তমান আহ্বায়ক নাইমুল করিমের ক্যামেরা ভাংচুর করে। এমনকি প্রেস ক্লাব ভাংচুর ও সাংবাদিকদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলাসহ প্রায়ই মোবাইলে ও প্রকাশ্যে মারধরের হুমকি দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। গত দুই বছরে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলার শিকার হয়েছেন মনোয়ার হুসেন সুজন, রমাপ্রসাদ বাবু, কেএম ইমরান ও সালাউদ্দিন বাপ্পিসহ অনেক সাংবাদিক। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রেস ক্লাবে তালা দিয়ে দেয়। গত ৩ মার্চ সিলেটের একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফারুক উদ্দিনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সাংবাদিকদের কক্ষে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করে ছাত্রলীগ ক্যাডার নাইম-মঞ্জু ও আসাদ-মিঠু গ্রুপ।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
২০০৯ সালের ১৩ মে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এম কেরামত আলী হলের ৩০১ নম্বর রুমে এসে দেশবাংলা পত্রিকার সাংবাদিক আতিকুর রহমান এবং আমার দেশ-এর সাংবাদিক এসএম ইমরানের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর আহত করে। পরের দিন ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদস্বরূপ মানববন্ধন করতে গেলে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা দৈনিক নয়াদিগন্তের সাংবাদিক এসএম রাজুর ওপরও হামলা চালায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গেও সাংবাদিকদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় এবং তিনি তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেন। ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নিউনেশন পত্রিকার সাংবাদিক মাহমুদ হোসাইন, দিনকালের আবু তাহের উজ্জ্বল, সংগ্রামের মহিদুল ইসলাম এবং আমার দেশ-এর এসএম ইমরানের কক্ষ পুড়িয়ে দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। ২০১০-এর নভেম্বরে আবারও দৈহিকভাবে নির্যাতন করা হয় প্রথম আলোর সাংবাদিক মেহেদী হাসান মহসিনকে।
প্রতিবদেনটি তৈরি করতে সহযোগিতা করেছেন আমার দেশ ও সহযোগী দৈনিকগুলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিরা।
আমার কথা হল : তাহলে শিক্ষকের নামে চোরেরা বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতির আখড়া বানাবে তাদের কুকীর্তি তুলে ধরতে যাতে না পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা । বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সচ্ছ থাকে তাহলে সাংবাদিক থাকতে বাধা কোথায়?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।