যে যায় লংকায়, সে হয় রাবন
লাদেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে আমেরিকা দীর্ঘকাল ধরে যা করছে, তা তাঁর ছায়ার বিরুদ্দে যুদ্ধ। তিনি জীবিত না মৃত, তা নিয়েও বিতর্ক ছিল। আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্য পাঁতি-পাঁতি করে খুঁজেও তাঁকে পায়নি। এখন আর তিনি ছায়া নন, কায়া হয়ে উঠলেন। জীবিত লাদেনের চেয়ে মৃত লাদেন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবেন এবং তাঁর মৃতদেহ কবরে শুয়ে এখন পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব দেবে।
লাদেনের নাম হয়ে উঠতে পারে এই যুদ্ধের মূলমন্ত্র।
মার্কিন সেনারা চে গুয়েভারাকে হত্যার পর যেমন তাঁকে বিশ্ববরেণ্য করে তুলেছে, তেমনি তারা লাদেনকেও হত্যা করেছে-এই খবরটি সঠিক হলে তাদের হাতে লাদেন নবজীবন লাভ করলেন।
ওসামা বিন লাদেন এখন 'টেরোরিস্ট' থেকে 'মার্টিয়ার' হয়ে উঠবেন। চে গুয়েভারা জীবিত থাকতে যাঁরা তাঁর রাজনীতি পছন্দ করতেন না, তাঁরাও পরে যেমন চে-র ছবিওয়ালা গেঞ্জি পরে রাস্তায় ঘুরতে দ্ধিধা করেন না; আমেরিকারও শহর-বন্দরে চে-র ছবি, আব মূর্তি বিপুলভাবে বিক্রি হয়, তেমনি অদূর ভবিষ্যতে যদি বিশ্বের অধিকাংশ দেশগুলোতে তো বটেই, আমেরিকাতেও মার্কিন তরুণ-তরুণীদের শরীরের উল্কিতে , সামার ড্রেসে ওসামা বিন লাদেনের ছবি দেখা যায় এবং তাদের কাছে চে গুয়েভারার মতো কোনো এক আদর্শের সিম্বল হয়ে ওঠেন ওসামা, তাহলে বিস্ময়ের কিছু নেই।
একজন ধনবাদী অর্থনীতিবিদ বলেছেন - ধনবাদের বেঁচে থাকার জন্য সব সময়ই তার একজন শত্রু দরকার ।
তিনি আরো বলেছেন, এই শত্রু নিজেকেই সৃষ্টি করতে হয়। ওসামা বিন লাদেন ছিলেন আমেরিকার বুশ পরিবারের বন্ধু এবং তাদের তেল ব্যবসায়ের পার্টনার। কমিউনিষ্টদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমেরিকাই তাঁকে পলিটিক্যাল ইসলামের প্রতীক হিসেবে দীর্ঘকাল দুধ-কলা দিয়ে পুষেছে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে হিটলারকে হারানো সম্ভব হয়েছিল, কিন্তু তাঁকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। তিনি তাঁর বাঙ্কারে বসেই আত্মহত্যা করেছিলেন।
বর্তমান মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ওসামা বিন লাদেনকে (হয়তো) হত্যা করা সম্ভব হয়েছে; কিন্তু তাঁকে পরাজিত করা সম্ভব হয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।