সর্বত্রই দূর্নীতি এবং মানবিক মুল্যবোধের চুড়ান্ত অবক্ষয় আমাদের ধংশ করে দিচ্ছে......
প্রথম পর্বের লিংকঃ Click This Link
খেলাপি ঋণ সম্পর্কে ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। খেলাপি ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে ব্যাংকগুলো বস্তুত ক্যাপিটাল ইনএডুয়েসিতে ভুগছে। বছরের পর বছর সুদের পাহাড় জমে খেলাপি ঋণের বোঝা শুধুই বাড়ছে। খেলাপি ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসার জন্য ঋণ খেলাপিদেরকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে বিশেষ সুযোগ দেয়া যেতে পারে। সুযোগের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সমস্যা হলো, খেলাপি ঋণের বিপরীতে যে বন্ধকী সম্পদ আছে তাও অনেক ক্ষেত্রে নিম্নে, ফেইজভেল্যুর চাইতে অনেক কম। বন্ধকী সম্পদ অবসন দেয়ার ক্ষেত্রেও অনেক দুর্নীতি ও কারসাজির ঘটনা ঘটে। নৈতিক অগ্রহণযোগ্য হলেও ঋণ খেলাপিদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসার ঘোষণা বাস্তবতার নিরিখে অগ্রহণযোগ্য মনে করার কোন কারণ নেই। এরই নাম প্রেগমেটিজম। বেসরকারী ব্যাংকগুলোর পরিচালনা ব্যবস্থা নিয়েও অনেক সমালোচনা আছে।
এইসব ব্যাংক বিলাসপূর্ণ অফিস ও যানবাহন ব্যয়ে অভ্যস্ত। এর ফলে তাদের প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি পায় যেটি তারা ঋণ গ্রহণকারীদের নিকট থেকে চড়া সুদের মাধ্যমে আদায় করার চেষ্টা করে। কাস্টমারদের মনোরঞ্জনের অজুহাত দিয়ে এ কাজটিও অনৈতিক। তদুপরি ইনসাইডেরদের মধ্যে ঋণ বিতরণের অভিযোগও এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে রয়েছে। এরকম অভিযোগও রয়েছে যে, কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ঋণ খেলাপি বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সংস্কারের জন্য বিদেশী পরামর্শক নিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করার পরেও যে সব সংস্কারের পরামর্শ পাওয়া গেছে তা এতই নিম্নমানের যে তার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্কার ঋণের প্রাপ্ত অর্থ এইভাবে অপচয় করার কোনই যুক্তিকতা নেই। এসব সংস্থা সংস্কারের কথা বলে যে ঋণ চাপিয়ে দেয় তা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। দেশে কি এমন কোন জ্ঞানী-গুণী ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ নেই যাদের পরামর্শ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তরণের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো একটি বিরাট সমস্যা যা ত্বক স্পর্শ করার মতো। ব্যাংক ঋণের সুদ কমানোর দাবিটি জনপ্রিয়।
এই পদক্ষেপ নিলে বিনিয়োগ সামান্য পরিমাণে হলেও উৎসাহিত হতে পারে। তবে তার আগে প্রয়োজন নির্বাচিত সরকারের উত্তরণ ঘটিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে বিরাজমান অনাস্থার পরিবেশকে উন্নত করা। দেশে এখন যে হারে মূল্যস্ফীতি বিদ্যমান তার আলোকে বলা যায় প্রকৃত সুদের হার অনেক কমে গেছে। আমানতকারীরাও শূন্য কিংবা ঋণাত্মক সুদ ভোগ করছে। অর্থনীতির ব্যাংকিং ব্যবস্থার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সুদের হার হ্রাস করার নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থার সার্বিক দুর্বলতা চিহ্নিত করার জন্য একটি ব্যাপক ও গভীর জরিপ চালানো প্রয়োজন। এই জরিপে আমানতকারী ব্যাংক প্রশাসন ঋণ গ্রহণকারীসহ সকল মানুষের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।