আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জিয়া তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী ভারতপন্থী সেনা সদস্যদের ফাসী না দিলে তারা হত আজকের মসিউর ও এই চটি ইমাম!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
গোয়েবেলসীয় প্রোপাগান্ডা কি জিনিস কত প্রকার তা আওয়ামী-বাকশালীদের মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা না দেখলে বোঝা যায় না। জিয়া আমলে ডজনেরও বেশী বার সামরিক ক্যু করার চেষ্টা হয়েছিল এবং যাতে বহু সেনা বাহিনীর সদস্য মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছিল। কিন্তু আলীগের ভাষায় নিহতরা নাকি তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ছিল। তার মানে তারা যদি ১৯৮১ সালের পূর্বে সফল হয়ে জিয়াকে ক্ষমতা হতে হটাতে পারত তাহলে বলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয়। অথচ কি পরিপ্রেক্ষিতে জিয়া ক্ষমতায় এল এবং দেশকে অরাজকতা হতে রক্ষা করে বাংলাদেশকে সার্বভৌমত্বের স্বাদ দিল এ কথা আওয়ামী-বাকশালী গং স্বীকার করতে নারাজ।

শেখ মুজিব স্রেফ ১৯৭২ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ হতে সরাতে সামর্থ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তাজউদ্দিনের করা ৭ দফা চুক্তির সিহংভাগই এড়াতে পারেন নি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতীয় দালাল তাজউদ্দিন ৭ টি অসম শর্ত করেছিল; “১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে ভারত সরকারের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার প্রশাসনিক, সামরিক, বাণিজ্যিক, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি সাতদফা গোপন সমঝোতা চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তিগুলো নিম্নরূপ: ১. প্রশাসনিক বিষয়ক: যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকীদের জন্য জায়গা পূরণ করবে ভারতীয় প্রশানিক কর্মকর্তাবৃন্দ।

২. সামরিক বিষয়ক: বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতিবছর এ সম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু’দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ৩. বাংলাদেশের নিজস্ব সেনাবাহিনী বিষয়ক: বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে। ৪. ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধ বিষয়ক: সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান।

এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তি বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে। ৫. বণিজ্য বিষয়ক: খোলা বাজার ভিত্তিতে চলবে দু’দেশের বাণিজ্য। তবে বাণিজ্যের পরিমাণের হিসাব নিকাশ হবে বছর ওয়ারী এবং যার যা প্রাপ্য সেটা র্স্টার্লিং এ পরিশোধ করা হবে। ৬. পররাষ্ট্র বিষয়ক: বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংগে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংগে যেগাগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং যতদুর পারে ভারত বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সহায়তা দেবে। ৭. প্রতিরক্ষা বিষয়ক: বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে ভারত।

” (অলি আহাদ রচিত “জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫”, বাংলাদেশ কোঅপারেটিভ বুক সোসাইটি লি: প্রকাশিত, চতুর্থ সংস্করণ ফেব্রুয়ারী ২০০৪, পৃষ্ঠা-৪৩৩,৪৩৪)। মূলত বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানীর শক্ত প্রচেষ্টায় মুজিব বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী রাখতে সম্মত হন। কিন্তু এটা ছিল নখ-দন্তহীন বাঘের মত। পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া কিছু অস্ত্র এবং রাশিয়ার সামান্য কিছু সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী। বিশাল সমুদ্র সীমা পাহারা দেওয়ার জন্য নামকা ওয়াস্তে কিছু গান বোট।

সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ কিনতে হলেও ভারতের অনুমতি নিতে হত। তার উপর মুজিব ১৯৭৩ সালে চাকমাদের বাঙালী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদের দিকে ঠেলে দেন। পরে তারা ভারত সরকারের সামরিক মদদে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনী গঠন করে। এরপর ১৯৭৫ সালে মাত্র ৪০ দিনের জন্য পরীক্ষার নাম করে ফারাক্কা বাধ চালুর অনুমতি দিলে ভারত একে চিরস্থায়ী ভাবে চালু করে দেয়। চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক গড়া যাচ্ছিল না।

তারপর ১৫ই আগষ্টের পট পরিবর্তনের জের ধরে ৭ই নভেম্বর সিপাহী জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন নিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। আর মাঝখানে আওয়ামী-বাকশালীরা ৩রা নভেম্বর ভারতপন্থী খালেদ মোশারফের ব্যার্থ অভ্যুত্থানের কথা মুখে আনে না। সে যাই হৌক জিয়া ক্ষমতায় এসেই তাজউদ্দিনের সম্পাদিত চুক্তির সবগুলিই অগ্রাহ্য করেন। বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু চীনের সাথে দৃঢ় কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক গড়েন। ফলে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী হয়ে উঠে প্রচন্ড শক্তিশালী যা আজকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ স্থানে আছে।

জিয়ার সময়ই ভারতীয় মদদ পুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী শান্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী দারুণ ভাবে ঘুরে দাড়ায়। তারপর সৌদি আরব, কুয়েত, আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য তেল সমৃদ্ধ দেশ গুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফলে আজকে যে মধ্যপ্রাচ্যে ৩৫-৪০ লক্ষ শ্রমিক কাজ করছে তা জিয়ার অবদান। উল্লেখ্য ঐ ১৯৭৬-৭৭ সালে সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য ৪টি ফ্রিগেট বৃটেন হতে কেনা হয়। ইসলামের চার খলিফা তথা খোলাফায়ে রাশেদীনের নামে নামকরণ করা হয়।

ফলে গভীর সমু্দ্রে বাংলাদেশের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জিয়া ফারাক্কার কু-প্রভাবের কথা তুলে ধরলে ভারত ৩৪ হাজার কিউসেক গ্যারান্টি ক্লজে ৫ বছর মেয়াদী চুক্তিতে বাধ্য হয়। সেই ৭ই নভেম্বর ৭৫ হতে ভারত জিয়ার সার্বভৌম চেতনা ও কার্যক্রমের বিষয় গুলো শত্রুতার দৃষ্টিতে দেখতে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় জিয়ার আমলে ডজনেরও বেশী ক্যু করার চেষ্টা হয়। ১৯৮১ সালে জিয়া ক্যুতে নিহত হলেও সব সময়ই ক্যুতে জড়িতদের বেশীর ভাগই ফাসীতে ঝুলে শাস্তি পায়।

এরা যে সবাই দোষী তা না কিন্তু বেশীর ভাগই দোষী ছিল। কিন্তু সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বার্থে তাদেরকে ফাসী না দিলে জিয়া আরো আগেই মারা যেতেন। এই সকল ক্যু প্রচেষ্টাকারীদের নেপথ্যে ছিল ভারত। ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই একের পর এক ক্যু করার চেষ্টা করছিল। অথচ আওয়ামী-বাকশালীদের দৃষ্টিতে ঐ সকল ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টাকারীরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি।

কেন জিয়া বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে এনেছিলেন তা আওয়ামী-বাকশালী ও ভারতপন্থীদের গত্রদাহের সীমা নেই। ১৯৯৬ সালে প্রতারণা মূলক ৩০ বছর মেয়াদী ফারাক্কা চুক্তি করে বাংলাদেশ শুস্ক মৌসুমে ন্যায্য পানি পাচ্ছে না। উপরন্ত ১৯৯৭ সালে চাকমাদের সাথে অসম শর্তে বাংলাদেশের অখন্ডতাকে হুমকিতে ফেলে তথাকথিত শান্তি চুক্তি করে শেখ হাসিনা। যার দরুণ বিদেশীরা সেখানে বাঙালীদের উচ্ছেদ করে উপজাতি চাকমাদের স্বায়ত্ব শাসন দিতে বলছে। বাংলাদেশের ৫৪টি নদ-নদীর পানি, সীমানা বিরোধ, অসম বাণিজ্য বৈষম্য ইত্যাদির ফয়সলা না করেই ভারতকে একতরফা করিডোর দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছে বর্তমান হাসিনার মহাজোট সরকার।

অথচ ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বলেছিল যে শুধু ভারত নয় নেপাল-ভুটান এমনকি চীনও ভারতের উপর দিয়ে ট্রানজিট পাবে। যাতে তারা চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যাবহার করতে পারে। আর বাংলাদেশ নাকি বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। এখন যখন বাংলাদেশের তরফ হতে নদী পথে ভারতীয় জাহাজ হতে লেভী আদায়ের কথা বলা হল তখন হাসিনার উপদেষ্ট এই চটি ইমাম তা বাতিল করে দিলেন। আর অপর উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলে দিলেন এই ফি চাওয়া নাকি অসভ্যতা।

ইতিমধ্যে ভারত বাংলাদেশকে কোন ধরণের ফি দিতে অনীহা প্রকাশ করেছে। ফলে ভবিষ্যতের সড়ক-রেল ও সমুদ্র বন্দর ব্যাবহারে ভারত বাংলাদেশ কি টোল বা লেভী দিবে তা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। এ নিয়ে কি এই চটি ইমাম ও মসিউর সহ পুরো সরকার রহস্যজনক ভাবে চুপ। গরীব বাংলাদেশ তো আর এই হাসিনা ও তার উপদেষ্টাদের বাপ-দাদার তালুক নয় যে বিনা পয়সায় ভারতকে করিডোর সুবিধা দিবে। অথচ এরাই নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী তথাকথিত স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি।

এখন ভবিষ্যতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় এসে এই মসিউর গংদের বিচার করে মৃত্যুদন্ড দেয় তো আওয়ামী-বাকশালীরা ত্রাহি ত্রাহি করবে যে দেখ বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিদের সাথে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের ফাসী দিচ্ছে। ছোট্ট জায়গার বাংলাদেশ চালাতে হলে প্রয়োজন ভবিষ্যতের গভীর দূরদৃষ্টি। জিয়ার সেটা ছিল। তাই জিয়াকে আম্লীগের যতই নির্দয় মনে হউক না কেন এদেশের সামরিক বাহিনী হতে ভারতপন্থীদের মৃত্যুদন্ড দিয়ে বাংলাদেশের শত্রু কমিয়েছিলেন। নতুবা এরা যদি সফল হত ভারত বহু আগেই বিনা ফিতে করিডোর নিয়ে বাংলাদেশকে সিকিম বানিয়ে দিত।

আর বিএনপির প্রচার এত দূর্বল এবং খালেদা জিয়া ভিতু যে ভারতের নাম নিয়ে সমালোচনা করতে ভয় পান। এখন আর প্রতিবেশী বলার অবকাশ নেই। কারণ এটা ভারত যার সাথে শক্ত না হলে বাংলাদেশের এক আনাও ন্যায্য প্রাপ্য আদায় করা সম্ভব না। আর আওয়ামী-বাকশালী গং ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধের মুখোশ পরে আছে। এই মোনাফেকদের রুখা না গেলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে সিকিম হওয়া নিশ্চিত।


 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.