আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরীদের দেহব্যবসা বৃদ্ধি : নির্বিকার সরকার



২৬ এপ্রিল (রেডিও তেহরান): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরীরা এখন ব্যাপকভাবে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। এই ঘটনা দেশটিতে যে ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে তার সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করছে। অথচ ওয়াশিংটন এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমসের ২৩ তারিখের উপসম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করেছেন নিকোলাস ডি ক্রিস্টোফ। তিনি বলেন, কম্বোডিয়া বা ভারতের মতো দেশগুলোতে অল্প বয়সী মেয়েদেরকে বিচিত্র কৌশল ও প্রতারণার মাধ্যমে পতিতাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য করা হয় ; অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিশোরীরা জেনে-বুঝেই আপত্তিকর পোশাক পরে রাস্তায় নেমে এসে দেহব্যবসায় জড়াচ্ছে বলে মার্কিনীরা মনে করে।

অল্প বয়সী এ সব মেয়েকে বাহ্যত আটকে রাখা হয় না বা তাদের ওপর দৃশ্যত কেউ জোরও করে না বলে মনে হলেও মূলত এ হতভাগী মেয়েরা দালালদের খপ্পরে আটকা পড়ে আছে বলে জানান ডি ক্রিস্টোফ। তিনি জানান, দালালদের খপ্পর থেকে বের হয়ে আসার কোনো ক্ষমতা তাদের নেই; এ ছাড়া, এ সব মেয়ে দেহ বিক্রি করে যে অর্থ আয় করে তার শেষ পয়সাটি পর্যন্ত দালালদের কাছে চলে যায়। নিকোলাস ডি ক্রিস্টোফ আরো জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার জঘন্যভাবে লংঘন করে প্রায় প্রকাশ্যে এ ধরণের গর্হিত ব্যবসা কী করে চলছে তার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে 'গালর্স লাইক আস' নামের বইতে। 'গালর্স লাইক আস'-এর লেখিকা রাসেল লয়েড নিজেও এক সময়ে এ দেহ ব্যবসার শিকার হয়েছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছিলেন।

কীভাবে অল্প বয়সী একটি মেয়ে রাগ বা অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে এসে দালালদের খপ্পরে পড়ে যায় এবং ধীরে ধীরে অন্ধকার পথে পা বাড়াতে বাধ্য হয়, তা তুলে ধরেছেন রাসেল লয়েড। পুলিশ পতিতাবৃত্তির দায়ে অল্প ব্য়সী মেয়েদেরকে গ্রেফতার করলেও সাধারণভাবে দালালদের গ্রেফতার করে না কিংবা কখনো কখনো দালালদের আটক করা হলেও শেষপর্যন্ত মার্কিনী আইনের জটিলতা এবং উপযুক্ত স্বাক্ষীর অভাবে তাদের অপরাধ আদালতে প্রমাণ করা যায় না। এ ভাবে, দালালরা ছাড়া পেয়ে যায়। মার্কিন পতিতালয়গুলোতে মেক্সিকো, রাশিয়া বা কোরিয়া থেকে তরুণীদের পাচার করে আনা হয় বলে মার্কিনীরা বিশ্বাস করেন। সে রকম ঘটনা অবশ্যই ঘটে।

তবে ঘর থেকে পালিয়ে আসা মার্কিন কমবয়সী মেয়েদেরকেও যে এ সব পতিতালয়ে নিয়ে আসা হয় সে কথা তুলে ধরেছেন রাসেল লয়েড তার ‘গার্লস লাইক আস'-এ। মার্কিন তরুণীদের পতিতালয়ে নিয়ে যাবার পাশাপাশি নারী পাচারের ঘটনা যে যুক্তরাষ্ট্রে এখন মারাত্মক সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে এ বইটিতে। মানবাধিকার, শিশু ও নারী অধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে সোচ্চার একটি দেশ। অথচ নিজ দেশে মানবাধিকার, শিশু ও নারী অধিকার লংঘনের বিষয়কে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আদৌ আমলে নেয়নি। প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লংঘনের চিত্র তুলে ধরে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তাতে নিজ দেশের এ সমস্যাটি নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো কথা বলা হয়নি।

শিশু এবং কিশোরীদের দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার মতো মারাত্মক পরিস্থিতি রোধ করা বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে কোনো আইনও আজ পর্যন্ত পাস করেনি যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ ধরণের ব্যবসার সাথে যে সব দালালচক্র জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো অভিযান চালানো হয়নি যুক্তরাষ্ট্রে। #

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.