আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আম্মু আমার জীবনের শেষ কিছুদিন



IF U LOVE TWO PEOPLE AT SAME TIME... CHOOSE D SECOND!! BECAUSE IF U TRULY LOVED D 1ST ONE......................... U WOULDN'T HAVE LOVED ANOTHER আম্মু এই লেখা যখন তোমার কাছে পৌঁছাবে তখন হ্য়ত আমি আর বেঁচে থাকবনা। ২৬ টা বছর অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে। অনেক মিথ্যে বলেছি। দেড় বছর যাকে ভেবে,যার জন্য আজ আমি তোমাকে ফেলে এত দুরে সে আজ আমার নেই। তোমার মনে পরে রাতে যখন আমার রুম থেকে লো ভলিউম গান এর শব্দ আসত তখন তুমি বকা দিতে তখনো ঘুমাই নি কেন? তখন ও আমাকে ঘুম পাড়াত ঠিক ছোট বেলায় তুমি যেমন করে ঘুম পাড়াতে।

আম্মু জান আমি না ওর মাঝে তোমাকে খঁজে পেতাম। যে হাত এ দুধের গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বলতে এক চুমুকে শেষ করবে সেই হাত দিয়ে এক চুমুকে এখন আমি এক এক পেগ শেষ করি। তবুও যে কষ্ট টা কমছে না। চোখ বুজলেই এত দিনের স্মৃতিগুলি বুকের পাঁজড়ে আছড়ে পড়ে,আমি আর নিশ্বাস টেনে তুলতে পারি না। ছোটবেলায় মেয়েদের সাথে মিশতাম না বলে তুমি কত হাসতে আর বলতে আামার ছেলে না হয়ে মেয়ে হওয়া উচিৎ ছিল।

সেই অভ্যাসটা থাকলে আজ আমি এমনটা হতাম না। তুমি আমার বন্ধুর মত ছিলে তাই তোমাকে এসব লিখতে লজ্জা লাগছে না। বৃষ্টির সাথে আামার পরিচয়টা হয় অনেকটা হঠাৎ করে ইয়াহু তে। প্রথম যেদিন চ্যট করি সেদিন ও হাসপাতালে,কারন ওর আব্বু খুব অসুস্থ ছিল। প্রথমদিন ই ওর প্রতি একটা ভাল লাগা তৈরী হয়ে যায়,সেটা হয়ে ছিল ওর আবেগী কথার জন্য।

আল্লাহ কে তখন মনে মনে বলেছিলাম একবার সুযোগ দাও আমাকে এই মেয়েটির পাশে থাকার। আমি জানিনা কেন এমনটা করেছিলাম। দুইদিন চ্যাট হল,তার পর ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করলাম। এটাই ছিল কোন মেয়েকে করা আমার প্রথম ফোন। ফোন এর ভয়েস এও সেই আবেগ আমাকে নাড়া দিয়ে গেল।

আস্তে আস্তে কথা বলার মাএা বাড়তে লাগল। সারারাত ধরে চলত দুজনের হাসি,আনন্দের সাতকাহন। এভাবে কখন যে আমি ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম তা আমি জানিনা। দিন যেতে লাগল,বন্ধুত্ব ভালবাসায় রুপ নিল। আমি ওর মন বুঝতে চেষ্টা করলাম দেখলাম ও কেমন যেন একটু আলাদা।

আমি সেই ভাবেই নিজেকে তৈরী করতে লাগলাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডা কমিয়ে দিলাম,সিগারাট ছেড়ে দিলাম। আমার গিঁটারে ধুলো জমতে লাগল। সকালের ঘুম ভাঙ্গত ওর ফোনে,রাতে ঘুমুতে যেতাম ওর উষ্ন চুম্বনের আচড়ে। এই দেড় বছরে ও অনেক বার দেখা করতে চেয়েছে,আমি করিনি কারন আমি চেয়েছিলাম নিজের পায়ে দাড়িয়ে ওকে দেখব।

আমি চেয়েছিলাম আমাদের ভালবাসা একটু আলাদা হোক। ওকে আমি না দেখেই ভালবেসেছিলাম,এটা একরকম পাগলামী ই ছিল আমার। আম্মু তোমার অনেক ইচ্ছা ছিল আমি অনেক বড় ইন্জিনিয়ার হই তাই আজ সব ছেড়ে ইউ,এস,এ তে পড়তে আসা। সারাদিন ক্লাশ আর অফিস করে এসেই ওকে ফোন দিতাম। সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে যেতাম ওর ভয়েস টা শুনলে।

মনে হত আমার সব কষ্টতো শুধু ওকে পাওয়ার জন্য। দিন যেতে লাগল,আস্তে আস্তে ওর মাঝে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা শুরু করলাম,কেমন যেন একটা উদাসীনতা। আচড়নটা খুব চোখে লাগত,আমি বানিয়ে বানিয়ে অনেক কষ্টের কথা বলতাম কিন্তু ওর নিরল্পিপ্ততা আমাকে অবাক করত,ভাবতাম এই কি সেই বৃষ্টি যে কিনা আমার একটু হাত কেটে গেলে কেঁদে বুক ভাসাত। আমার একটু সন্দেহ হল। একদিন অফিসে বসে ওর আই,পি হ্যাক করলাম।

তার সব কিছুর দুইটি করে আই,ডি দেখে খুব অবাক লাগল যা আমি জানতাম না। আমার অফিসে এসে প্রথম কাজ ছিল ওর চ্যাট হিষ্টি দেখা। একটা বিশেষ আই,ডির সাথেই দেখতাম ঘন্টার পর ঘন্টা চ্যাট। কষ্ট লাগলেও কিছু বলতাম না কারন আমি ঠিকমত সময় দিতে পারতাম না,আর তার বন্ধু থাকতেই পারে। আমি ওর ব্যাক্তি স্বাধীনতায় কখন বাধা দিতাম না।

আস্তে আস্তে তাদের কথোপকথন আর বন্ধুত্বের মাঝে সীমাবধ্ব থাকল না। একজন আর একজনকে জান বলে ডাকতে লাগল। বাসায় এসে যখন ওকে ফোন দিতাম আর আমাকে জান বলে ডাকতো তখন ভাবতাম জান শব্দটার মানে কি?এটা কি কোন নাম?সেই প্রথম থেকে আমাকে যে গান,জোকস,মিউজিক ভিডিও পাঠাত সবই দেখলাম সেই ছেলেকে পাঠাচ্ছে। সেই সব ভালবাসার কথা যা শুধু আমাকেই বলতো। চ্যাট ফ্রেম টাও আগের মত শুধু আমি মানুষটাই বদলে গিয়েছি।

I MISS YOU এই লাইনটার একটা সুন্দর বাংলা আমি ওকে শিখিয়ে ছিলাম,আমি তোমার শুন্যতা অনুভব করছি এই লাইনটাও সে তাকে শিখালো। আমি শুধু অপেক্ষা করছিলাম ও আমাকে সব খুলে বলুক কিন্তু ও কিছুই বললো না। ও একি সাথে দুই জনকে সময় দিতে লাগল। আমি পারছিলাম না সহ্য করতে আবার ওকে কিছু বলতে আর এটাই আমাকে হতাশার আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দিল। আমি অন্ধকারে হারিয়ে যেতে লাগলাম।

আমি অফিসিয়াল কাজে ইউ,এস,এর বাইরে যাই সাত দিনের জন্যে। যাওয়ার সময় যখন ওর কাছ থেকে বিদায় নেই তখন খুব হাসিমুখেই বিদায় দেয় এবং ওকে অনেক খুশি মনে হলো। আমার সাথে সাত দিন যে কথা হবে না তাতে তাকে খুব একটা চিন্তিত মনে হল না। সেই সাত দিন ছিল আমার জীবনটাকে নষ্ট করার শেষ সাতদিন। এই সাতদিন আমি নেট এ বসার অবসর পাইনি।

বাসায় এসে যখন ওর চ্যাট হির্ষ্টি দেখতে শুরু করলাম আমার কপালে ঘাম জমতে লাগলো,পা কঁপছিলো,মনে হচ্ছিল মাথা ঘুরে পড়ে যাব। এতো নোংরা সেই চ্যাট যে ভাষায় প্রকাশ করা যা্য় না। আমি নিজের চোখকেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না এটা আমার সেই নিস্পাপ বৃষ্টিতো?আমার স্বপ্নের হাতে হাতকড়া পড়ল। রাতটা কোন মতে পাড় করলাম। আমি সকালবেলা ঠিকমত গাড়ী ড্রাইভ করতে পারলাম না।

অফিসের কাজে মন বসাতে পারলাম না। বৃষ্টিকে মেলাতে পারছিলাম না। ও নামাজ পড়ত,মাঝে মাঝে রোজা রাখত,সেই মানুষ কিভাবে এত নিচে নামতে পারে। এটা তো সেই মানুষ যে আমার জন্য না খেয়ে বসে থাকত। বিকেল বেলা যখন ফিরছিলাম আমার চোখের সামনে শুধুই ঐ চ্যাটগুলি আসতে লাগল।

দুই দুইবার সিগন্যাল মিস করলাম। খুব অস্থির লাগছিল। আগের রাতে ওর সাথে যখন কথা হয় তখন ওর খুব জ্বর ছিল,আজই জিঙ্গেস করব কিনা বুঝতে পারছিলাম না কিন্তু আমি নিজের সাথে যুধ্ব করে করে ক্লান্ত। সারাদিন এ দেড় প্যাকেট সিগারেট শেষ করলাম তবুও অস্থিরটা কমছিল না। বাসায় এসেই ওকে ফোন দিলাম।

গলার স্বর কেমন যেন অসপষ্ট। নিজেকে শক্ত করলাম। সরাসরি জিঙ্গেস করলাম তুমি কি আমাকে ভালবাস?বৃষ্টি আকাশ থেকে পড়ল। খুব অবাক হয়ে বললো এতদিন পর এই কথা কেন?তুমি ছাড়া আমার কে আছে বল?আমি ওকে সরাসরি জিঙ্গেস করলাম তুমি সুমন কে চিন?ও বলল অনেকদিন আগে চ্যাট হয়েছিল। আমি আবার তাকে জিঙ্গেস করলাম তুমি কি ওকে ভালবাস?ও এ কথা শুনে খুব ক্ষেপে গেল এবং না বলল।

আমি ওকে একটা সুযোগ দিলাম,বললাম তুমি ইচ্ছা করলে তোমার কথা পরিবর্তন করতে পার। কিন্তু ও ওর কথায় অনড় রইল। আমি তখন ১৬৮ পাতার চ্যাট হির্স্টি ওকে পাঠিয়ে দিলাম ও পড়ে শুধু একটা কথাই বলল 'শিট'। তারপর সে বলল দেখ আমি ওকে ভালবাসিনা। আমি বললাম তুমি ওকেও জান ডাকো,আমাকেও ডাকো।

একটা মানুষের কয়টা জান হয়?ও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারল না। আমি অনেক কাদলাম,বৃষ্টিও কাদল আর বলল তুমি আমাকে ফেলে যেয় না। আমি ওকে বললাম তোমার প্রতি আমার যে বিশ্বাস টা ছিল সেটাই আর অবশিষ্ট নেই। আর যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালবাসা থাকতে পারেনা। আম্মু তুমি আমাকে আদর করে বাবু বলে ডাক,কই আর কাউকে তো এই নামে ডাকনা।

যেটা তুমি আমার জন্যে রাখ সেটা তো আর কাউকে দাও না। আমি তো তোমার পরে ওকেই বেশি ভালবাসতাম। ও কেন আমার ভালবাসা অন্যকে দিয়ে দিল?আমার বিশ্বাস কেন নষ্ট করল?আম্মু তুমি মেয়ে না হলে আমি নারী জাতিটাকেই অভিশাপ দিতাম। ওর প্রতি আমার কোন রাগ নেই,আমি ওকে মাফ করে দিয়েছি। ও সুখে থাক কিন্তু আম্মু আমি তো সুখে নেই।

ওর সাথে ১ মাস এর মত কথা হয় না। জনিনা কেমন আছে,আর ওকে ভুলতেই আজ আমি নষ্ট জগৎটাকে আকড়ে ধরেছি। বৃষ্টিরা তো ভালই থাকে আম্মু আমরা কেন কষ্টে থাকি?এত কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা যায় না,আমি তাই চলে যাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা কর আম্মু,তুমি ভাল থেক.....................। তোমার শান্ত পরিশিষ্ট: এটি আমার জীবনের ঘটনা,কল্পনার লেশমাএ নেই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।