গোধুলি ভালবাসায় ভিজে একসারা একাকী একজন।
আজ সারাদিন কেটেছে খুব ব্যস্ততায়। নিজেকে ভাবার সময় দেইনি একটুও। তাই ভালই কেটেছে সারাটা দিন। আম্মু হাসপাতাল থেকে ঘুরে আসার পর থেকে মনটা কেমন যেন ভীত হয়ে পড়েছে।
সেই এক সপ্তাহ আমরা কটি প্রাণ কি আতঙ্কেই যে দিন পার করেছি! আম্মুর যে সময় স্ট্রোক হলো তখন আমি অফিস থেকে বাসায় ফিরছি। ইনষ্টিটিউটে একটা বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজনে খুব ব্যস্ত ছিলাম। আর খুব সফল ভাবেই প্রথম দিনের আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরে আমরা সবাই খুব খুশী ছিলাম। বাসায় ফেরার সময় হেঁটে আসছিলাম। কিছুদুর হেঁটে আসার পরই আমার ছোট বোনের আতংকিত গলা মোবাইলে "তুমি কোথায় ? আম্মু যেন কেমন করছে প্লীজ তাড়াতাড়ি বাসায় আসো"।
আমার মনে হয়েছিল কেউ আমার বুকের ভেতর থেকে সব বাতাস বের করে নিল এক ঝটকায়। কি ভাবে দৌঁড়ে রাস্তা পার করেছি আমি জানি না। এর মাঝে আব্বুকে জানিয়েছি। কেউ নেই বাসায়। আব্বু আর আমি বাইরে।
বাসায় এসে আম্মুকে দেখে কান্না পেয়ে গেছিল। তবুও কাঁদিনি। চাচাতো ভাই আর বোনের এক বান্ধবী ছিল তখন। সবাই মিলে আম্মুকে নিচে নামিয়ে নিয়ে গেলাম। যেই আম্মুর তিন তলা থেকে নামতে অন্তত আধঘন্টা লাগে পায়ের ব্যথার জন্য সেই আম্মুই যে কেমন করে অত তাড়াতাড়ি নেমে গিয়েছিল জানিনা।
আম্বুলেন্সে করে আম্মুকে যখন বারডেমে নিয়ে যাচ্ছি তখন মনে মনে একটা প্রমিজ করেছি নিজের কাছে যে আর কখনও আম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ শুনে বিরক্ত হব না। আম্মু আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে ছিল আর আমি কাঁদছিলাম নিঃশব্দে। কত আদর করেই যে আমার আম্মু আমাদের দুই বোনকে বড় করেছে! কখনো নিজের কোন কষ্ট আমাদের বুঝতে দেয়নি।
খুব ভয় লাগে আজকাল। বেশিক্ষণ বাইরে থাকি না।
অফিস শেষ করেই বাসায় চলে আসি।
আর ভাল লাগছে না লিখতে। মনটা ভাল নেই। আম্মুর জন্য দোয়া করো তোমরা সবাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।