আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"বেগম জিয়ার [শেখ হাসিনার] মনে রাখা উচিৎ, আমারও ভোট দেই। সামনে ইলেকশান আসছে"

থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি। ফেসবুকে অনেক ধরনের ব্যক্তির সাথে আমি সংযুক্ত। আমরা সবাইই তাই। তবে আমাদের অনেক সময় ফেসবুক গ্রুপ বলে কিছু থাকে, যেখানে মোটামুটি এক মতের মানুষেরাই থাকেন। তাই দেখা যায় যে, সবাই সেই গ্রুপগুলোতে লেখালেখি করলেও মুল ফেসবুকে তারা অনেকটাই অনুপস্থিত।

কিন্তু তারপরেও বাইরে যে কিছুই লেখা হয় না, তাও ঠিক না। অনেকেই আছেন, যাঁরা নিয়মিত লেখেন। তার বাইরে কিছু প্রোপাগান্ডাও চলে। যেমন চলছে সাম্প্রতিক কালে। এরই ফাঁকে আজকে একটা কমেন্ট চোখে আসল।

এক ছাত্রী, রাজনীতি ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয়, সে লিখেছে, "বেগম জিয়ার মনে রাখা উচিৎ, আমারও ভোট দেই। সামনে ইলেকশান আসছে"। কথাটা আমার খুব মনে গেঁথে গেছে। লেখা আকারে আমরা যাই ছাপাই না কেন বা প্রকাশ করি না কেন, আমি সব সময়ে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের একটি কথা ভুলতে পারি না। উনি বলেছিলেন, জনগণ যদি পেপারের কলাম পড়ে ভোট দিতে যেত, তা হলে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামি লিগ অবশ্যই জিতে যেত।

জনগণ কি ভাবছে, তা সর্বোচ্চ রাজনীতিবিদদের জানতে হয়। তাদের জনগণের কাছাকাছি যেতে হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন দলের প্রধানগণ উনাদের চারপাশের লোকদের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেন। তা উনারা সরকার পরিচালনায় থাকুন বা বিরোধী শিবিরেই থাকুন। চিত্রটা একই ধরনের।

তার উপরে গেল পঁচিশ বছরে পাচ-বছর-মেয়াদের "লুটপাটের গণতন্ত্র" কায়মে হবার পরে যেন ব্রিটিশদের সেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথার মত কিছু চালু হয়েছে এ দেশে। পাচ বছর পর পর মালিকানা বদল। তফাৎ হল, এখন আমার স্বেচ্ছায় গোলামীর দড়ি পছন্দ করে, সিল মেরে, রাষ্ট্রকে জানিয়ে দেই। আর রাষ্ট্র বেশি সিল পাওয়া লোকগুলোকে একসাথে করে বলে যে ভাই ও বোনেরা, এইবার আপনাদের পালা! সেই হুইসেল বাজাও শেষ, পরে কি হবে, তা ভাব্বার সময় বা ফুরসত উনাদের কারোই থাকে না। সবাই তখন পরবর্তি যতকয় পুরুষ পর্যন্ত চালানো যায়, সেই পরিমাণ দূর্নীতি করা শুরু করে।

এভাবেই দেশ চলছে। জনগণের কিছুই হয় নাই। আমি তো দেখি, জনগণের চাপে না পড়লে সরকার বা রাষ্ট্র কিছুই করে না। আজ বাঙলাদেশ উন্নতি করছে, সরকার প্রধানরা সেই কৃতিত্ব প্রথমে তার সরকারের এবং উনাদের চেলাগুলো সেই কৃতিত্ব সরাসরি সরকার প্রধানকে দিয়ে দেন। জনগণের ভাঁড়ে পড়ে থাকে ফুটা পয়সা।

কিংবা তাও থাকে না অনেক সময়ে। সম্প্রতি তিন দিনে এতোগুলো প্রাণ ঝরে গেল, তার কোন জবাবদিহিতা নেই কোন পক্ষ থেকেই। সহিংসতা করাটা সভ্য দেশের কোন নাগরিকের আচরণ হতে পারে না। আর ধর্মের নামে করাটা তো রীতিমত ধর্ম বিরুদ্ধ কাজ। ইসলামের আদি কালেও শাসকরা ধর্মের ব্যাপারে জোর করেন নাই।

আমাদের এই প্রেক্ষিতে প্রথম চার খলিফাদের উদাহরন দিলে উনাদের খাটো করা হবে। কিন্তু উনাদের পরে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের নামে যে ইসলামি খলিফাতন্ত্র ছিল, তাতেও শাসকরা আমাদের দেশের যে কোন আমলের যে কোন সরকারের চেয়ে অনেক সভ্য ছিলেন। তাঁরা বিচক্ষন ছিলেন। বিচক্ষন ব্যক্তিদের সমাদর করতেন। প্রজাদের কথা শুনতেন।

কেউ কেউ তো ছদ্মবেশে প্রজাদের খেদমত করেছেন বলে অনেক কাহিনীই চালু আছে। শাসকদের অনেক গুণ থাকা লাগে। মেকিয়াভেলির বইয়ে সে সব গুণের কথা বিস্তারিত বলা আছে। আর অতি সংক্ষেপে আছে রবীন্দ্রনাথের "গান্ধারী আবেদন" বা "কর্ন-কুন্তি সংবাদ" নামে একটা কাহিনী কবিতায়। সে সব মানলেও না হয় চলত।

কিন্তু আমাদের দেশে এর কোন কিছুরই বালাই নাই। আছে অশিক্ষা বা কুশিক্ষা, মিথ্যা বলা, চুরি করে বড় লোক হবার বিভিন্ন কাহিনী। নতুন প্রজন্ম আমাদের পুরাতন প্রজন্ম থেকে অনেক মেধাবী, উদ্যোগী, কঠোর পরিশ্রমী। তারা একবার জেগেছে। তারা আবার জাগবে।

আর সেই জাগরণে ভেসে যাবে সব পুরাতনি। লেখার শুরুরে বেগম জিয়রা কথা বলেছি। শুধু উনিই না, শেখ হাসিনার জন্যও কিন্তু একই কথা প্রযোজ্য। তরুণ প্রজন্ম উনাদের কারুকেই ছাড়বে না। আর তখনই হবে আসল পরিবর্তন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।