যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
পল্লবী থেকে ট্যাক্সিতে উঠলাম। মহাখালী যাবো। এটা প্রায় প্রতিবারই হয় চালক জিজ্ঞেস করবেন, ক্যান্টনমেন্ট নাকি বিজয় স্মরণী দিয়ে যাবেন? ব্যস্ততা থাকলে আমি দ্বিতীয় পথটি বেছে নেই। আজকেও জিজ্ঞেস করলো - এবং আমি জানালাম রোকেয়া সরনী দিয়ে যেতে।
কিছুক্ষণ পরে ড্রাইবার জিজ্ঞেস করলো, এই যে রাস্তাটার নাম রোকেয়া সরনী, এই রোকেয়া কে? কোন সংগীত শিল্পী?
একটু বিষ্মিত হলাম।
প্রথমত চালকের কৌতুহলের কারণে, দ্বিতীয়ত তার না জানার কারণে। পরে মনে হলো এ-তো হতেই পারে। দশের মোড়ে রোকেয়া সরনীর ফলকের উপরে পোস্টার লাগানো, নামটা পড়া যাচ্ছে না। আর সে নাম-ফলক থেকে রোকেয়ার পরিচয় উদঘটন করাও অসম্ভব।
বললাম, বেগম রোকেয়া ছিলেন বাঙালী মুসলিম নারী শিক্ষার অগ্রদূত, প্রায় এক-দেড়শ বছর আগে তার জন্ম হয়েছিলো।
তিনিই প্রথম মুসলিম নারীদের শিক্ষার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করেছিলেন, আন্দোলন করেছিলেন।
চালকের নাম মিজান, ২৯ বৎসর বয়স। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছেন, তবে বাংলা-ইংরেজী দেখে দেখে পড়তে পারেন। নীলক্ষেত থেকে রোকেয়ার একটা জীবনী কিনে পড়তে বললাম। মিজান বিবাহিত ও ২ বৎসর বয়সী একটা কন্যা সন্তানের জনক।
তার স্ত্রীও পড়তে জানে। মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার ইচ্ছে আছে। বললো, অবশ্যই সে রোকেয়ার জীবনীগ্রন্থ কিনবে।
ঢাকা শহরের বেশীরভাগ সড়কের নামকরণ করা হয়েছে এই রাষ্ট্র, জাতি ও ভূখন্ডের নানা কীর্তিমানদের স্মরণে। যার বেশীরভাগের পরিচিতি বেশীরভাগ মানুষেরই অজানা, আর নতুন প্রজন্ম তো একেবারে অজ্ঞ।
এসমস্ত সড়কের নাম-ফলকে এইসব খ্যাতিমান মানুষের ছোট্ট একটা জীবনীও টাঙানো যেতে পারে। ইতিহাস সম্বন্ধে সচেতনতা হয়তো বৃদ্ধি পেতে পারতো। মিজানের মত হাজারো মানুষের কৌতুহল নিবৃত্ত হতে পারতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।