ম্যাডাম জিয়া, আপনার জন্য দুটি অনুরোধ রয়েছে। এক, আপনি একটু চিন্তা করে দেখুন, কার জন্য আপনি আজ রাস্তায়? দুই, আপনি কার বুদ্ধিতে রাস্তায় নামলেন? উত্তরটা সবারই জানা। এ মুহূর্তে আপনার দাবী, যুদ্ধাপরাধীদের যে কোনো ভাবেই হোক বাঁচাতে হবে। কারণ, ওরা না থাকলে আপনাকে খুব একা একা লাগে। মঞ্চটা যেন ফাঁকা।
আরও খোলাসা করে বললে, ওরাই আপনার ক্যাডার বাহিনী। এখন রাস্তায় আপনার পাশে আপনার দলের লোকজনকে খুবই কম দেখি। যাদের দেখি তারা ওদেরই লোক। একাত্তরে ওরাই ছিলো পেটোয়া বাহিনী, যাদের হাতে আমাদের দেশের লাখো মা বোনেরা লুণ্ঠিত হয়েছিলো। তবে আমরা এও জানি, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন।
আচ্ছা তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন, আর আপনার কর্মকাণ্ড যদি তাঁর গোচরে যেত তিনি কী আফসোসটাই না করতেন। এর জন্য কি তিনি যুদ্ধে নেমেছিলেন। নাকি আপনিই সবচেয়ে ভালো জানতেন জিয়াউর রহমান আসলে এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি। আপনারই সবচেয়ে ভালো জানবার কথা। তা না হলে দেশের লাখো মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার বিপক্ষে যাদের অবস্থান ছিলো, যাদের জন্য দেশের তিরিশ লাখ তাজা প্রাণ আজ শহীদ, দু-লাখ মা বোনের সম্ভ্রম আজ বিসর্জিত, আপনি তাদের হয়ে মাঠে নেমেছেন! কী আশ্চর্য আপনার কর্মকাণ্ড! আমরা এও জানি, আপনার দুর্নীতিবাজ দু’ছেলেকে রক্ষার জন্য দেশব্যাপী রোর্ড মার্চ শুরু করেছেন।
এই যদি হয়, তবে আর কী থাকলো! দেশকে পরপর চারবার দুর্নীতির শিখরে দেখেছি আপনার শাসনামলে, যার অর্ধেকটাই আপনার গুণধর সন্তানের কারণে। তবে, আপনার জন্য সুখবর আছে, জনগণ যদি আপনাকে চায়, আপনার ছেলেদেরকে আবার সেই দুর্নীতির সুযোগ করে দিতে তারা এতটুকু কার্পণ্য করবে না। তবে একটা অনুরোধ করবো আপনাকে, আপনি আর বলবেন না দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধ নাই! মুজাহিদ আর নিজামী যুদ্ধাপরাধী নয়! আপনার এ বাণী যে আমাদের লাখো মানুষের হৃদয়ে কেবল ঘৃণার নয়, অভিশাপেরও জন্ম দিয়েছে। কারণ আমরা জানি, আপনি মিথ্যা বলছেন। কেবল ওদেরকে বাঁচাতে আপনি মিথ্যা বলছেন।
ম্যাডাম, আপনি তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহার করার তাগিদ দিচ্ছেন বারংবার, আপনার বক্তব্য তরুণরা বোঝে, মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনায় আপনি সাহস পেয়েছেন, তরুণরা ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই আপনি নির্বাচনে জিতবেন। গুড আইডিয়া, ম্যাডাম আর একটা কথা বলবেন কি তরুণদের? আপনি বললেই ওরা (তরুণরা) শুনবে আমি নিশ্চিত। সেটা হলো, একাত্তরে কারা কারা এই বাংলাদেশ স্বাধীনের বিপক্ষে ছিলো। এই মুজাহিদ, নিজামী, সাঈদী আর গোলাম আজম তখন কোন সেক্টরে কাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলো? সেটা পাওয়ার পর আপনিই নেটে বসেই আন্দোলনের ডাক দিন। আপনাকে আর মাঠে নামতে হবে না।
ফেসবুক মার্চ করলেই আমরাও সাড়া দিবো। আমি তো ভেবেছিলাম পরবর্তী নির্বাচনে আপনাকে ভোট দিবো। কিন্তু সে সুযোগটা আপনি আজীবন হারালেন, আমার কাছে পরিষ্কার আপনিও যুদ্ধাপরাধী। জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু আপনার মন প্রাণ এখনো সেই পাকিস্তানিদের জন্য টানে। আমাদের উচিত আপনি একাত্তরে কোথায় ছিলেন সেটা জানা।
তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে। ও, একটা কথা, আপনি দলিল দস্তাবেজ নিয়ে কোর্টে আসুন, প্লিজ সেখানেই প্রমাণ করুণ দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধ নেই, তাহলেই কেবল আশা থাকতে পারে অন্যথায় আপনি আমাদের সামনে মিথ্যা বললে আমরা কেন পরবর্তী প্রজন্মও আপনাকে ক্ষমা করবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।