রাজবাড়ীতে আটাশ জন বাউলের চুল ও দাড়ি কেটে নেয়া হয়েছে। দেশের প্রগতিশীল সমাজ এ নিয়ে সরব হয়েছে। সাধারন মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে বলতে চাইছেন,বাউল বলে কি তাদের গাজা সেবন বৈধ?অবশ্যই না। সরকার অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পারে,তবে এক্ষেত্রে যেসব মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী সমাজের জন্য বড় হুমকি এবং যারা শক্তিশালী তাদের বিরুদ্ধে আগে অ্যাকশন নিতে হবে।
এবং বাউলরা যদি গাজা সেবন করেও থাকে তবু তাঁরা স্পষ্টতই দেশের আইন শৃঙ্খলার জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। মাইজ ভান্ডারীর অনুসারীরাও তো তাদের মজলিসে গাজায় বুদ হয়ে থাকে,কারো বুকের পাটা থাকলে আগে তাদের মজলিসে হানা দিক। দুর্বলের উপর আইন প্রয়োগ করে কক্ষনো আইনের শাসন কায়েম হয় না। এদেশে তো পাচ হাজার টাকা ঋন খেলাপের দায়ে অনেকে জেল খাটে। তাই বলে কি দেশে ঋণখেলাপের সংস্কৃতি বন্ধ হয়েছে?
রাজবাড়ীর ঘটনা আর দশটা সাধারন ঘটনার মত নয়।
শুধুমাত্র গাজা খাওয়ার অপরাধে যদি এদের শাস্তি দেয়া হত তাহলে তা এত গুরুত্ব পেত না। এর ডাইমেনশন অনেক। হাইকোর্টের ফতোয়াবিরোধী রায়ের পরও একজন মোল্লা ফতোয়া দেয়ার সাহস দেখিয়েছে। এই আক্রোশ কিন্তু শুধুমাত্র কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়,এই আক্রোশ ভিন্ন মতের বিরুদ্ধে,বাউলিয়ানার বিরুদ্ধে এবং এর উৎস ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। নগর পোড়লে দেবালয় এড়ায় না।
আজকে যদি আমরা ওদের না থামাই তাহলে,কাল ওরা ইসলামের দোহাই দিয়ে গান বাজনা বন্ধ করবে,পরশু সর্টস পরে ফুটবল খেলা বন্ধ করবে,এরপর বহুবিবাহ চালু করবে,বউকে শাসন করার নামে বউ পিটানোর বৈধতা চাইবে। তখন আর এদের থামানো যাবে না। তখন এরা দেশের নাম “Peoples’ Republic of Bangladesh” থেকে বদলে করবে “Islamic Republic of Bangladesh”। আমাদের আগে নিজের সাথে বোঝাপড়া সারতে হবে। আমাদের আগে জানতে হবে আমরা কী চাই,“Peoples’ Republic of Bangladesh” নাকি “Islamic republic of Bangladesh”।
যদি “Peoples’ Republic of Bangladesh” নামটাকে ভালবেসে থাকি তাহলে এখনই ওদের রুখতে হবে। আর যদি মনের গহীনে “Islamic republic of Bangladesh” এর বাসনা থেকে থাকে তাহলেও বসে থকার সুযোগ নেই, সেই ফতোয়াবাজ মোল্লার পাশে দাঁড়ানো তাদের ঈমানী দায়ীত্বের মধ্যেই পড়বে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।