আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে শান্তিবাগের রমনা আবাসিক ও বসুন্ধরা সংলগ্ন শ্যামলীতে!

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

চট্টগ্রামে আগ্রাবাদ থেকে অ্যাক্সেস রোড দিয়ে হালিশহরের দিকে যেতে হাতের ডান দিকে পুলিশ লাইন সংলগ্ন একটা এলাকা পড়ে; এলাকাটির নাম শান্তিবাগ। শান্তিবাগের কিছু দূর ভেতরে রঙ্গিপাড়ার দিকে না গিয়ে বাম দিকে ঢুকে গেলে একটি আবাসিক এলাকা পাওয়া যায়। সেটার নাম শ্যামলী। শ্যামলীর সাথে লাগোয়া এলাকার নাম গুলো আরও ইন্টারেস্টিং! একটার নাম বসুন্ধরা, আরেকটার রমনা! এই এলাকা গুলোকে যিনি বা যারা নামকরণ করেছেন তার বা তাদের প্রচেষ্টায়, সৃষ্টিশীলতায় আমি মুগ্ধ! ঢাকার কিছু এলাকার নামের সাথে যে নাম গুলো মিলে গেছে সেটা নিছক কাকতালীয় বলে আমার ধারণা। তাছাড়া জায়গার নামের এই আঁকালে এত বিশাল একটা দেশের অগণিত শহরের কিছু জায়গার নাম মিলে যেতেই পারে।

তাই বলে এতে নামকরণ-কারীদের চেষ্টাকে খাটো করে দেখার কিছু নাই। হালিশহরের দিকে নাকি আরও একটা শ্যামলী আছে! আবারও কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে... মাথামোটা লোকজন সব! সে যাহোক, শান্তিবাগ, শ্যামলীর শেষপ্রান্তে অবস্থিত যে দালানটিতে আমার বাসা, সেটার দখিন দিকটা দেখার মত। ধানের দিনে বারান্দা দিয়ে নিচে তাকালে চোখে পড়তে পারে, মৃদু বাতাসে ধানের শিষ কেমন আনমনে দোলে। খুব সকালে বারান্দায় গিয়ে জোড়ে তালি দিলে দেখা যায় ধানক্ষেতে খাবারের খোঁজে ব্যস্ত পাখির দল চমকে গিয়ে কেমন একসাথে একটা চাঁদর হয়ে কিছুদূর উড়ে গিয়ে, পলকেই ভয় কাটিয়ে পুনরায় ফিরে এসে বসে ধান গাছের কোলে। কে তাদের চমকে দিল তার খোঁজে ঘাড় কাত করে এদিক ওদিক তাকায় আর দোল খায়।

শীতকালে লাল-শাকে রক্ত-লাল হয়ে থাকে ক্ষেতটি। সরিষা যখন বোনা হয়, তখন ক্ষেতের চারিদিকে উজ্জ্বল হলুদ রঙ সূর্যের আলোয় ঠিকরে পড়ে। আর ঋতুর বিরতিতে, বর্ষার পানি নেমে গেলে, লাগামহীনভাবে সবুজ হয়ে উঠে। এই মাঠে নিয়মিত রঙ লাগায় এক কৃষক। সকাল নেই, বিকাল নেই তাঁর; সারাদিন সে মাঠে।

কখনো বীজ রোপে, কখনও সার ছেটায়, কখনো কি একটা মেশিন দিয়ে কীটনাশক দেয়। মাঝে মাঝে তাঁকে দেখতাম মাঠের মাঝখানে এমনিতেই চুপ করে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে থাকতে; তার রঙ করা মাঠে আগাছারা আবার বাগড়া দেয় কিনা। দু একটা চোখে পরলেই চোখের নিমিষে উঠিয়ে পাশের আইলে নিয়ে জমায়। ধান পেকে গেলে সেলাই-মেশিনের মত দেখতে একটা মেশিন কোত্থেকে জোগাড় করে এনে সে ও তাঁর দু এক জন সহযোগী যখন চরকা ঘুরিয়ে ধান ভানে, সেটা একটা দেখার মত দৃশ্য। শহরের মাঝখানে পাকা দালানের বারান্দায় রাখা চেয়ারে বসে পা দুলিয়ে এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ কজন পায়? শুনেছি জমিটা নিয়ে কোর্টে মামলা আছে বলেই দালানকোঠা না হয়ে এমন চমৎকার পড়ে আছে।

মামলা না থাকলে কেঁদেকেটেও এমন একটা জমি কৃষক পেত না*। এই বেঁচে যাওয়া জমিটির মামলা তো ভূমি-মালিকদের মালিকানার অধিকারের মামলা। মামলা যেই জিতুক, প্রথমেই মাঠ খাবে। কৃষক, মাঠ, ফসল, পাখিরা, এরা অধিকার দাবী করে কোনদিন মামলা করতে পারবে? সব শেষ হয়ে গেলে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.