আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিবিয়ান বর্ডারের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও আমার অভিজ্ঞতা।

পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/

গরীব হয়ে জন্ম নেয়া আসলেই মনে হয় পাপ। তা না হলে গাদ্দাফির গদিনিয়ে টানাটানিতে কেন গরীব বাংলাদেশীদের পেটে আঘাত লাগবে? মিসরের সাল্লুম বর্ডারে লিবিয়া থেকে ফেরত আসা আটকে পরা বাংলাদেশীদের ১৫ দিন জীবন অতিবাহিত করার দৃশ্য দেখে বনের পাখির চোখেও পানি এসে যাবার কথা। একে তো ক্ষুধার জ্বালা তারপর প্রচন্ড শীত, তার থেকেও বড় চিন্তা তারা আদৌ দেশে ফিরতে পারবে কি না। তার থেকেও বড় বিপদ দেশে ফিরে কি করবে? দেনার টাকা বাকি রয়ে গেছে অনেক।

জমি বন্ধক, গয়না বন্ধক, গরু বিক্রির টাকা যে আর ফেরত এল না। আছে ভয়াল দালালেরও ভয়। এই সমস্ত অভিযোগ শুনতে শুনতে হৃদয় আমার পাথর সম। আর ভাল লাগে না। পৃথিবির কোন বিচার নেই।

মানুষের কোন ইনসাফ নেই। মানবতার অর্থ কেবলই চোখের জল। বাকি সব ধান্দা বা পলিটিক্স। কিছু লোক কিছু মানুষের নামে ধান্দা করে কিছু মানুষকে কিছু দেয় আবার কিছু লোক কিছুই দেয় না। যেমন আইওএম।

পর হয়েও আপনের মত। আবার বাংলাদেশ সরকার, আপন হয়েও পরের মত। আইওএম যখন সমস্ত বাংলাদেশীদের দেশে পাঠানোর সিডিউল চুড়ান্ত করে ফেলল ঠিক তখনই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসে এয়ারপোর্টে সকলের হাতে খেজুরের একটা টুপলা ধরিয় দিয়ে সমস্ত ক্রেডিট নিয়ে গেল। অবুঝ আত্নাগুলো সমস্ত দুঃখ ভুলে গিয়ে অবনত মস্তকে মন্ত্রীকে নমস্কার করতে করতে চলে গেল। এটাকে আপনি কি বলবেন? গরিবের প্রতি ভালবাসা না কি গরীবদের নিয়ে পলিটিক্স? আমি কিছুই বলব না, কারন আমি গরিব মানুষ।

আমিও নম নম করার দলেরই লোক। একজন প্রশ্ন করে বললঃ আমাদের রেমিটেন্সের টাকায় বাংলাদেশে ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করে বিশ্বকাপ আয়োজন করা হচ্ছে। অথচ এই আমরাই যখন বিপদে পড়েছি তখন সরকার আমাদের জন্য কত টাকা খরচ করেছে তার স্পষ্ট হিসেব চাই। -- কে দিবে হিসেব? আরেকজন প্রশ্ন করে বললঃ সারে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নাম পরিবর্তন করা হলো, কিন্তু ৮০ হাজার বাংলাদেশী যখন বিপদে তখন সরকার আমাদের জন্য কিছুই করল না। শুধু আমরা পরের দিকে চেয়ে রইলাম।

আরেকজন প্রশ্ন করে বললঃ সামান্য অযুহাতে বিরোধী দল হরতাল ডেকে থাকে কিন্তু আমাদের উদ্ধার করার জন্য তারা সরকারের উপর কোন চাপই দেয় নি, নেয়নি কোন কর্মসুচিও। কি হবে এসব বলে? প্রতিকার যখন সম্ভব নয় তখন চুপ থাকাই মনে হয় ভাল। --- সাল্লুম বর্ডারে গত ২০ দিনে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশী এসেছিল। তাদের প্রায় সকলেই চলে যেতে সক্ষম হয়েছে। আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে ৩০০ জনের মত অবশিষ্ঠ আছে।

হয়ত আগামীকাল একটি ফ্লাইটে সবাই চলে যেতে পারবে। এখনো প্রতিদিন ৩০-৪০ জন করে প্রতি রাত্রে বর্ডারে এসে উপস্থিত হচ্ছেন। তবে যেহেতু এখনো আইওএমের প্রতিনিধি আছে সেহেতু তারাও ফিরে যেতে পারবে। সেচ্ছা সেবক ছাত্ররাও সেখানে অবস্থান করছে। আশাকরি যারা নতুন আসবে তাদের তেমন কষ্ট পোহাতে হবে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।