তক
কথায় আছে, হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে! মারছেও।
নয়তো কেন আর জিম্বাবোয়ের অনামী কোচ অ্যালান বুচারও তুলে আনবেন গত রাতের ম্যাচ? যাদের শেষ আটে থাকারই কথা নয়, সবাই প্রায় খরচের খাতায় নাম তুলে দিয়েছে, সেই টিমের কোচ কি না বলে দিচ্ছেন, “ব্যাটিং নিয়ে ভাবছি। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ১১৬-০ ছিলাম। সেখান থেকে ১৮৮ রানে ধসে যায় টিম। তবে ভারতের মতো ফেভারিট টিম যদি ২৯ রানে ন’টা উইকেট খোয়াতে পারে, তা হলে আর আমার ব্যাটসম্যানদের দোষ দিই কী করে? ”
আর শাহিদ আফ্রিদি? পাকিস্তান অধিনায়ক তো ভারতকে ‘হাতি’ বলেই মানছেন না।
অবধারিত ভাবে পাল্লেকেলের স্টেডিয়ামে আফ্রিদির দিকে প্রশ্ন ছুটে এল, “২৯ রানে ন’টা উইকেট গেল ভারতের। ২৬৮-১ থেকেও কাল ম্যাচ বার করতে পারল না। ভারতকে তো ফেভারিট ধরা হচ্ছিল...”
কপালের ঘাম মুছতে মুছতে প্রবল অবহেলার সঙ্গে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকালেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তারপর কেটে কেটে বললেন, “ফেভারিট? হুমম্, দেখলাম কাল। ভারতও তা হলে হারে! আমি তো প্রথম দিন থেকেই বলছি, বিশ্বকাপে ফেভারিট বলে কিছু হয় না।
যে দিন যে টিম ভাল খেলবে, সে ম্যাচ নিয়ে চলে যাবে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে একটা খারাপ ম্যাচ মানেই শেষ। ফেভারিট আবার কী? হাস্যকর!
কালকের পাকিস্তান-জিম্বাবোয়ে ম্যাচে কী হবে, তা নিয়ে খুব বেশি জল্পনার অবকাশ নেই। জিতলেই পাকিস্তানের শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত এবং অঘটন না ঘটলে সেটাই হওয়ার কথা। বরং পাল্লেকেলের স্টেডিয়ামে বারবার উঠে এল গত রাতের নাগপুর! মিডিয়া সেন্টারের স্বেচ্ছাসেবক বলুন বা শ্রীলঙ্কার ’৯৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য রবীন্দ্র পুষ্পকুমার, ভারতীয় সাংবাদিক দেখলে সবারই এক প্রশ্ন।
“শেষ ওভারটা কেন হরভজনকে দিল না আপনাদের ক্যাপ্টেন?”
নাগপুরের কাটাছেঁড়া বাদ দিয়ে এই ম্যাচের দিকে তাকালে জিম্বাবোয়েকে দেখে যে কোনও ক্রিকেটপ্রেমী ঢুকে পড়বে মন খারাপের দেশে। দেশটার ক্রিকেটীয় ঐতিহ্য একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। হাউটন বা ট্রাইকসের জমানা ছেড়ে দিলাম, বাদ দিচ্ছি ফ্লাওয়ার ভাই কিংবা হিথ ষ্ট্রিককেও। কিন্তু একটা হেনরি ওলোঙ্গা বা মেরিলিয়ার্সও তো এই টিমে নেই। টিমটিম করে জ্বলছেন ব্রেণ্ডন টেলর আর তাতেন্দা তাইবু।
তাইবু একটা ম্যাচে ৯৮ করেছেন, কিন্তু ব্যাটসম্যান বলতে ওই টেলরই। তিনি গেলেই টিম তাসের ঘরের মতো ভেঙে চুরচুর হয়ে যাচ্ছে। আর বোলিং? থাক!
পাকিস্তান শিবিরের খবর বলতে কামরান আকমলই দাঁড়াচ্ছেন উইকেটের পিছনে, খেলবেন ভাই উমরও। বসানো হতে পারে ওপেনার আহমেদ শাহজাদকে। তার জায়গায় আসবেন আসাদ রফিক, যিনি ব্যাট করবেন তিন নম্বরে আর কামরানকে ওপেনও করতে হবে।
শোয়েব আখতারকে বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে কালকের ম্যাচে, তাঁর জায়গায় উমর গুলের সঙ্গী হবেন ওয়াহাব রিয়াজ। আফ্রিদি সাফ জানাচ্ছেন, কোনও রকম পরীক্ষানিরীক্ষার রাস্তায় পাকিস্তান নেই। যখন বলছিলেন, “জিততে তো হবেই, ইনসাল্লা নেট রানরেটটাও কাল দেখে নিতে হবে। তার পর তো সামনে অষ্ট্রেলিয়া ম্যাচ আসছে,” গলায় ধরা পড়ছিল আত্মবিশ্বাস।
তবে পাকিস্তান বলে কথা।
এই ভাল তো এই খারাপ, এই আকাশ তো পরক্ষণেই পাতাল। কখন কী হবে, কেউ জানে না! শুধু ২৮ রানে ন’উইকেট যে কাল আফ্রিদিদের যাবে না, তা নিয়ে স্বচ্ছন্দে বাজি ধরা যায়।
***লেখাটি আনান্দবাজার প্রত্রিকার
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।