অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলোর জোট জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন শেষে সিরিয়ায় অভিযান চালানোর বিষয়ে সংগঠনের নেতারা ‘দ্বিধাবিভক্ত’ হয়ে পড়েছেন। কিছু দেশ চায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে সিরিয়ায় শাস্তিমূলক অভিযান চলুক, কিছু দেশ চায় না। ভারতও এ অভিযানের বিপক্ষে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে জি-২০-এর দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়েছে। আজ এতে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চায় না ভারত।
সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় হিসেবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা উল্লেখ থাকলেও শেষ পর্যন্ত সিরিয়াই সম্মেলনের মুখ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
গতকাল প্রথম দিনের বৈঠক শেষে নৈশভোজে যোগ দেন বিশ্ব নেতারা। ভোজ শেষে ইতালির প্রধানমন্ত্রী এনরেকো লেতা তাঁর টুইটারে লিখেছেন, মাত্র নৈশভোজ শেষ হয়েছে। আর এই ভোজের সময় সিরিয়ার বিষয়ে দ্বিধাবিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মার্কিন দূত সামান্থা পাওয়ার রাশিয়াকে দোষারোপ করে বলেন, তারা বারবার সিরিয়া-বিষয়ক প্রস্তাবের বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি করে রেখেছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে সিরিয়ার জবাবদিহির জন্য নিরাপত্তা পরিষদে এখন আর জুতসই কোনো পথ নেই।
গত ২১ আগস্ট সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রান্তীয় এলাকায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর বিষাক্ত গ্যাস হামলায় এক হাজার ৪২৯ জন নিহত হয়েছে বলে মার্কিন সরকার অভিযোগ করেছে। এ হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদ ও বিদ্রোহীরা একে অপরকে দায়ী করেছে।
যুক্তরাজ্যও জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা কাপড় ও মাটির নমুনা পরীক্ষা করে সেখানে সারিন গ্যাস ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের আনা প্রস্তাবে রাজি হতে অসম্মতি জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া।
জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের হামলা চালানো ‘অবৈধ’ হবে বলে মনে করে দেশ দুটি।
অন্যদিকে সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমত ফ্রান্স।
নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে পাওয়ার বলেন, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলেও রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি করে রাখছে এবং আন্তর্জাতিক দায়দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সিরিয়ার মানুষ এবং আমরা যা জানলাম, তা হচ্ছে সংকট মোচনে যে নিরাপত্তা পরিষদের প্রয়োজন, সেই নিরাপত্তা পরিষদ আমাদের নেই। ’ বিবিসি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালানোর সমর্থনে আন্তর্জাতিক জোট গঠনের চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে রাশিয়ার সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্ভাচেভ বিবিসিকে জানিয়েছেন, সিরিয়ার বিষয়ে সমাধান খুঁজতে ওবামা ও পুতিন বৈঠকে বসবেন। আর তাঁদের এ আলোচনা সম্পর্কের উভয় দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাবে এবং এখন যা হচ্ছে তা বন্ধ করবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।