আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে বিপ্লব ঘটিয়ে ইংরেজ বধ বাঙালির :কলকাতার প্রত্রিকা হতে

তক

একাশি বছর আগের এক ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে এক ঝাঁক বাঙালি তরুণ নাড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্রিটিশদের। সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ, গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল। এই নামগুলো আজও ইতিহাসের অর্ন্তগত হয়ে গিয়েছে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য। চট্টগ্রামের মাটিতে সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে ব্রিটিশদের হারালেন এগারো জন বাঙালি। ক্রিকেট মাঠে।

সূর্য সেনদের লড়াই পুরোপুরি সফল হয়নি একাশি বছর আগের এপ্রিলে। ২০১১র মার্চে কিন্তু মহমদুল্লা, সফিউল ইসলামের চোয়াল চাপা লড়াই ব্রিটিশদের মাথা নিচু করে দিল। অবিশ্বাস্য! অলৌকিক! কী ভাবে বর্ণনা করা যায় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইংরেজ-হারানোর ম্যাচকে? ২২৫ রান তাড়া করে একটা সময় বাংলাদেশ ১৬৯-৮। গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে হাহাকার ও বিষণ্ণতার ছায়া। সবুজ-লাল পতাকা হাতে, মুখে জাতীয় পতাকার রং মেখে যে তরুণীরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকের চোখে আগুন মুছে জল।

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্তদের উত্তরসূরিরা যেন পারলে মাঠে নেমে পড়েন ইংরেজদের হারাতে। ওই দমবন্ধ অবস্থা থেকে বাংলাদেশ তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় আনল। ইংরেজদের স্তম্ভিত করে দিয়ে। মহমদ্দুলা (২১ নট আউট), সফিউল (২৪ নট আউট) হারা ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন। বাংলাদেশের অন্য ক্রিকেটাররা তখন দৌড়ে ঢুকে পড়েছেন মাঠে।

অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলছিলেন, “বাকি ম্যাচগুলোয় ভাল খেলার জন্য বাড়তি তাগিদ পেয়ে গেলাম। তবে দেখতে চাই, ওয়েস্ট ইণ্ডিজের বিরুদ্ধে ইংল্যাণ্ড কী করে। ” পরাজিত ইংল্যাণ্ড অধিনায়ক ষ্ট্রস। — রয়টার্স আটান্ন রানে অলআউট হতে হয়েছে এক ম্যাচ আগেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের বাড়িতে হয়েছে হাঙ্গামা।

ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের বাসে ছোঁড়া হয়েছে পাথর। সাকিব বনাম প্রাক্তন ক্রিকেটারদের তরজায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কলাম লেখা। এ ক’দিন একেবারে বিস্ফোরণের মুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। আজ ইংল্যাণ্ডকে ২ উইকেটে হারানোর পরে আবার রাত জাগছে গোটা দেশ। শুধু চট্টগ্রাম নয়, ঢাকার রাজপথেও জনজোয়ার।

আনন্দের সঙ্গে উদ্বেগের হিসেবনিকেশ, অঙ্ক। বাংলাদেশ কি পারবে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে? হেরে গেলেও ইংল্যাণ্ড ভাল জায়গায়। ওয়েস্ট ইণ্ডিজকে হারালেই তারা চলে যাবে শেষ আটে। বাংলাদেশের কাজটা এখনও কঠিন। দুপুর থেকে রাত ম্যাচটা আশা-নিরাশায় দোলাল বাংলাদেশকে।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে তুবড়ে দেওয়ার পর এই ম্যাচে নিঃসন্দেহে এগিয়ে শুরু করেছিল ইংল্যাণ্ড। এ দিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের নেন সাকিব। লো বাউন্স উইকেটে ম্যাচে চার স্পিনার খেলিয়েছিলেন সাকিব। আর সেই পরিকল্পনাটা খেটে যায় দারুণ ভাবেই। নইম ইসলাম (২-২৯), আব্দুর রজ্জাক (২-৩২), মহমদুল্লা (১-৩০) ও অধিনায়ক সাকিবের (২-৪৯) স্পিনের মোকাবিলা করতে হিমশিম খান ষ্ট্রসরা।

পিটারসেন ও ব্রডের অভাবটাও এ দিন টের পাওয়া গিয়েছে বার বার। শেষ পর্যন্ত ট্রট (৬৭) ও মর্গ্যানের (৬৩)-র সৌজন্যে ২২৫ রান তুলতে পারে তারা। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ প্রথম উইকেটে ৫২ রান তোলে। তার পরেই নড়ে যায়। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল (৩৮) ও ম্যাচের সেরা ইমরুল কাইস (৬০) ছাড়া সে ভাবে দাগ কাটতে পারেননি কেনও ব্যাটসম্যানই।

জুনেদ সিদ্দিকি (১২) কিংবা রকিবুলদের(০) ব্যর্থতার দিনে দলকে কিছুটা হলেও লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান (৩২)। সূর্য সেনের চট্টগ্রাম নতুন করে জাগিয়ে দিল বাংলাদেশকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.