আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনাগাজীতে মহিলার লাশ উদ্ধরের সাড়ে তিন মাস পর প্রেমিক পুলিশ কনস্টবলের আদালতে স্বীকারোক্তি

mamun.press@gmail.com

আবদুল্লাহ আল-মামুন, ফেনী ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের অধিবাসী পুলিশ কনস্টবল জাহাঙ্গীর আলম (২৬) গত ১ মার্চ আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে তার প্রেমিকা নিলুফা আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। গত ২৮ ফেব্র“য়ারী তাকে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১১ নভেম্বর রাতে নিলুফা আক্তারকে নৃসংশ ভাবে হত্যার পর লাশ সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের খোদাইনগর (গুনক) গ্রামের ধান েেত ফেলে রাখা হয়। পরদিন সোনাগাজী থানা পুলিশ বিকৃত চেহারার পরিচয়হীন লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠায়। অজ্ঞাত পরিচয় হিসাবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম তার লাশ দাফন করে।

সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আরশাদ জানায়, ১২ নভেম্বর সোনাগাজী থানা পুলিশ বগাদানা ইউনিয়নের খোদাইনগর (গুনক) গ্রামের ধান তে থেকে এক অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার করে। ২৮ দিন পর ওই স্থান থেকে স্থানীয় লোকজন একটি ভ্যানেটি ব্যাগ খুঁজে পায়। সে ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে পাওয়া একটি ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে ওই মহিলার ভাই জামাল উদ্দিন তার বোনের নিরুদ্দেশ হওয়ার কথা জানায়। পরে জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

তার বোনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসেটটি পাওয়া যায়নি। পুলিশ নিলুফা আক্তারের হত্যাকান্ডের আগে তার মোবাইল ফোনে কাদের সাথে কথা বলেছে সে ধরনের একটি কল লিস্ট সংগ্রহ করে। তাতে ১১ নভেম্বর বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক বার একটি নম্বরে কথা হয়েছে দেখতে পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর আলম,পিতা লকিয়ত উল্লাহ, গ্রাম- অলিপুর, উপজেলা ও জেলা -ফেনী এবং পুলিশ কনস্টবল হিসাবে নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় কর্মরত। গত ২৮ ফেব্র“য়ারী তাকে সেনবাগ থানা থেকে গ্রেপ্তার করে সোনাগাজী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার প্রেমিকা নিলুফা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ১ মার্চ সে ফেনীর বিচারিক হাকিম ইয়াছির আরাফাতের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। আদালতে জাহাঙ্গীর আলম জানায়, চট্টগ্রামে চাকুরী করার সময় পাহাড়তলী আমবাগান এলাকার সিরাজ মিয়ার মেয়ে নিলুফা আক্তরের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় বদলী হয়ে যাওয়ার পর পারিবারিক ভাবে তার বিয়ে হয়। অপর দিকে নিলুফা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।

গত ১১ নভেম্বর বিকেলে নিলুফা চট্টগ্রাম থেকে ফেনীর লালপুল এসে পোঁছে। তারপর তাকে সন্ধ্যায় সোনাগাজীর গুনক ঈদগা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। নিলুফা তাকে বার বার বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে এবং ওই স্থানের পাশে জাহাঙ্গীরের বাড়ী যেতে চায়। জাহাঙ্গীর তাকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করতে চায়। কিন্তু সে তাতে রাজী হয়নি।

পরে স্থানীয় তিন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীকে ডেকে নিলুফাকে হত্যা করা হয়। তার মুখমন্ডলের মাংশ কেটে চেহারা বিকৃত করা হয়। তার কাপড় চোপড় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যেন কোন ভাবেই নিলুফার নাম পরিচয় প্রকাশ না পায়। আদালতে জাহাঙ্গীর আলম তিন ভাড়াটে সন্ত্রাসীর নাম প্রকাশ করলেও তদন্তেও স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজী হয়নি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।