আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাম্পাসে গাড়ী ভাংচুর বন্ধ হোক: আমাদের সন্মান এধরনের ঘটনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে না

নিজেকে উপলব্ধি করো। দেখবে কখন যেন ইশ্বর স্বয়ং এসে তোমার পাশে দাঁড়িয়েছেন

এই পোস্টটা একদমই অনর্থক। ভালোমানুষি কথায় দেশের মানুষের ওপর সুপ্রভাব পড়ার দিন অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। তাই দুরাশা করি না। আমার টার্গেট খুবই সামান্য: ব্লগে নিয়মিত পাঠক ঢাবির অনূজদের মধ্যে একটা জিনিস নিয়ে কিছুটা সচেতনতা তৈরী করা।

গতকাল রাতে মতিঝিলে একটা ঘটনায় বাস-শ্রমিকদের সাথে ঢাবির কিছু ছাত্রদের মারামারি হয়। এর ঘটনায় রাতেই আরবী বিভাগের একজন ছাত্র আহতাবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে এঘটনায় আমি শোকার্ত। ঘটনার শেষ এখানে নয়। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে অফিসের পথে খেয়াল করলাম মোটরযান ঢুকতে পুলিশ বাধা দিচ্ছে।

বুঝলাম ঘটনা সুবিধার না। পরে খবরে পড়লাম ছাত্ররা (অথবা ছাত্র নামধারীরা) ঢাবি এলাকায় ৩০-৩৫ টির মত গাড়ি (বাস বা ট্রাক নয়) ভাংচুর করেছে। কি কারনে এবং কি আশায় এটা করা হলো বুঝলাম না। এখন আমার প্রশ্ন এখানেই। এমনিতেই অন্য কোন মানুষের অর্থসম্পদের ক্ষতি সাধারন মানুষের কাম্য হতে পারে না।

ক্যাম্পাসের ভেতর এর আগেও অনেক গাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে, পোড়ানো হয়েছে বিভিন্ন ইস্যুতে। সেগুলোর যুক্তি হিসেবে বহিরাগত গাড়ি দ্বারা ঘটিত দুর্ঘটনাকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু এবার? কোথায় মারামারি হলো, আর ভাংচুর হলো কোথায়? ঘটনাটা একদমই একদল এচোঁড়ে পাকা ছেলে অন্যপাড়ায় শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কাছে মার খেয়ে ফিরে অক্ষম ক্রোধে নিজ পাড়ারই বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভাঙ্গার মতো হয়ে গেলো না? ঢাবির ছাত্রদের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার শুরু আজকে থেকে না। এর পেছনে কতটুকু অবদান আসল ছাত্রদের, আর কতটুকু দায়ী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সেটা ছাত্র থেকে সচেতন নাগরিক সবাই জানেন। এবং আমার ধারনা এই ধরনের ভাংচুরের ঘটনার পেছনেও দায়ী বহুলাংশে ঐ অছাত্র দলটাই।

ছাত্র একদমই নেই তা বলবো না, তবে খুব বেশি বলে আমার মনে হয় না। অন্তত ভালো বিভাগসমুহের মেধাবী ছাত্ররা এর মধ্যে নেই একথা আমি মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু দায়ী যারাই হোক না কেন, দোষ এবং কলঙ্কটা হচ্ছে ঢাবির ছাত্র থেকে শুরু করে উপাচার্য সবারই। ব্লগে অনেককেই আমি দেখেছি ঢালাওভাবে ঢাবি ছাত্রদের ইনডিরেক্টলি গুন্ডা-মাস্তান বলে চালিয়ে দিতে চেষ্টা করার। আমরা জানি আসল দৃশ্যপট অনেক ভিন্ন।

বেশিরভাগ ছাত্রই নিরীহ এবং পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত। কিন্তু এধরনের ঢালাও লেবেলিং প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে শুনতে ভালো লাগে না। গায়ে লাগে, অপমানিত বোধ করি। সিচুয়েশন চেঞ্জ করতে হবে। এবং করবে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা।

ঢাবিতে অনেক বড় বড় পরিবর্তন করেছে তারা। এই গাড়ি/জান-মাল নষ্ট করার কালচারও পরিবর্তন করা সম্ভব। শুধু সবাই একজোট থাকলেই হবে এবং সরব হতে হবে। যারা এধরনের কাজ করে তাদের কিছু যায় আসে না। তারা আজ ঢাবি, কাল জাবি, পরশু রাবিতে গিয়ে গুন্ডা মস্তানি করে খাবে।

কিন্তু যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট অবলম্বন করে জীবিকা পালন করবে তাদের গরজ আছে। পোস্টারিং করে, দেয়াল লিখন দিয়ে অনেক কাজ হয়। ছাত্রাবস্থায় মানুষের মৌলিক গুনগুলো সচল থাকে। বড় ধরনের আচারগত পরিবর্তনও করা সম্ভব এই সময়ে। আর বহিরাগত যারা আছে তাদের প্রতিহত করুন, মুষ্টিময় কয়েকজন পলিটিকাল ক্যাডারের চেয়ে ছাত্রদের কালেকটিভ ঐক্য অনেক বেশি কার্যকরী।

বিশ্বাস না হলে ঢাবির শেষ কয়েকটি ছাত্রআন্দোলনের কথা মনে করে দেখুন। বেশি আগে যেতে হবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.