চাকাগুলো ঘুরে ঘুরে সাইকেল চলে যায়
বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ অতিরিক্ত ঘামের যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন। হাত, পা, মুখ, বগল ঘামাকে ডাক্তারি ভাষায় হাইপারহিডরোসিস বা মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বলা হয়। এটি এমন এক রোগ যা অনিয়ন্ত্রিত স্নায়ুপদ্ধতির জন্য হয়ে থাকে। এর ফলে আমরা প্রায়ই অনুষ্ঠান, পরীক্ষাসহ কোনও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় খুব সমস্যায় পড়ি। প্রতিদিনের কাজকর্ম যেমন কম্পিউটার ব্যবহার, সঙ্গীতের যন্ত্রপাতি ব্যবহার, গাড়ি চালানো ইত্যাদি কাজ করতে গিয়ে বেশ বিপত্তি ঘটে।
প্রাকৃতিক উপায়ে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আসুন আমরা প্রথমে প্রাকৃতিক উপায়গুলো জেনে নিই :
* ভিটামিন বি-১২র অভাবে এই রোগ হয়। তাই ভিটামিন বি-১২ যেসব খাদ্যে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় সেসব খাদ্য গ্রহণ করুন ।
* ভিটামিন বি পরিবার যেমন, বি-১, বি-২, বি-৩, বি-৫যুক্ত খাদ্য অথবা ভিটামিন বি ট্যাবলেট গ্রহণ করুন।
* আয়োডিনযুক্ত খাবার যেমন, এসপারাগাস, ব্রকোলি, টারকি, গরুর মাংস, যকৃৎ, সাদা পেয়াজ, খাবার লবণ প্রভৃতি থেকে এটি হয়ে থাকে ।
তাই এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
* বেশি বেশি পানি পান করুন। পানি দিয়ে মুখ, হাত, পা বারবার ধুয়ে ফেলুন।
* শারীরিক দুর্বলতা থেকে এটি হয়ে থাকে। তাই পুষ্টিকর খাবার, শাকসবজি, ফলমূল বেশি পরিমাণে খান।
* চায়ের মধ্যকার টনিক এসিড প্রাকৃতিক ঘামবিরোধী ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তাই দেড় লিটার পানির মধ্যে পাঁচটি চায়ের ব্যাগ মিশিয়ে সেটার মধ্যে ১০-১৫ মিনিট হাত-পা ভিজিয়ে রাখুন। তাছাড়া সবুজ চা পান করুন। এতেও উপকার পাবেন।
* হাতে-পায়ে কোনও ধরনের পাউডার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন ।
কারণ এটি ঘাম দূর করার পরিবর্তে আরো বাড়িয়ে দেবে।
* ক্যাফেইন পান, ধূমপান প্রভৃতি পান থেকে বিরত থাকুন কারণ এগুলো অতিরিক্ত ঘাম উৎপন্ন করে।
এভাবেও যদি কাজ না হয় তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে কোনও একটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
ঘামের বিরক্তিকর অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে চিকিৎসাবিজ্ঞান মেডিসিনিকল এবং সারজিকল দু উপায়েই চেষ্টা করে কিছু ঘামবিরোধী ক্রিম, ইনজেকশন, ইলেকট্রিক থেরাপি ও ড্রাইসল বের করেছে। সারজিকল চিকিৎসা হিসেবে অতিরিক্ত ঘাম উৎপাদনকারী স্নায়ুর বিশেষ অংশ কেটে ফেলে দেওয়া হয়।
স্থায়ীভাবে ঘাম দূরীকারক এই পদ্ধতিটি তেমন সুবিধার নয়। কারণ অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত এবং অপারেশন-পরবর্তী ওষুধে যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তাদের জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই অতিরিক্ত ঘাম থেকে রক্ষা পেতে সাময়িক উপশমকারী ড্রাইসল বা অ্যালুমিনিয়াম কোরাইড হেক্সাড্রেট এলকোহোলিক সলুশনজাতীয় (ড্রাইসল) ওষুধ অনেক কার্যকর।
আসুন এবার এসব ওষুধের কিছু ব্যবহার বিধি জেনে নিই :
* এই ওষুধ আপনি ঘুমাতে যাবার আগে শুষ্ক বগলে মাখুন। সকালে উঠে স্বাভাবিক পানি দিয়ে এটি ধুয়ে ফেলুন।
দিনে গন্ধনাশক পদার্থ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এলুমিনিয়াম কোরাইডে আপনার বগলের ত্বক চুলকাতে পারে। সেজন্য আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবহার করুন। যতদিন ঘাম থেকে মুক্তি না পান ততদিন এটি ব্যবহার করে যান। ঘাম থেকে মুক্তি পাবার পর আপনি দিনে গন্ধনাশক পদার্থ বা ডিওডারান্ট ব্যবহার করতে পারবেন।
* ঘুমাতে যাবার সময় হাতের তালুর পাতলা চামড়ায় এটি মাখুন। শুকানোর পর প্লাস্টিকের গ্লাভস পড়–ন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। ১০-১৪ দিন ব্যবহারে আপনি এটির ফল বুঝতে পারবেন।
* পায়ের তালুতে এটি মাখুন এবং শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন ।
পায়ের তালুর আকারের মতো প্লাস্টিকের ব্যাগ পড়ে ঘুমান। সকালে উঠে স্বাভাবিক পানি দিয়ে পায়ের পাতা ধুয়ে ফেলুন। এক থেকে দু সপ্তাহের মধ্যে আপনি সুফল পাবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।