জীবনের প্রত্যেক প্রবাহ অমৃত চায়।
আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের জন্মদিন ১০ অক্টোবর। অর্থাৎ ১৪৯২ খ্রীষ্টাব্দের ১০ অক্টোবর কলম্বাসের বাহমা দ্বীপে অবতরনের তারিখটিই হলো আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের জন্মদিন। কলম্বাস আসলে আমেরিকা আবিষ্কার করেন নি, বরং এ কথা বলাই শ্রেয় - তিনি আক্রমন করেছিলেন আমেরিকায় । কলম্বাস আবিষ্কার করেছিলেনঃ আদিবাসীদের সম্পদ আছে কিন্তু মারণ-প্রযুক্তিতে ওরা হীন ও দুর্বল।
আর লুন্ঠন করতে হলে দুর্বলকেই আঘাত করতে হয়। লুন্ঠনের চাইতে লাভজনক কিছু নেই। লুন্ঠন বজায় রাখতে হলে মারণ প্রযুক্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব প্রয়োজন।
কলম্বাসের ঐ মহান আবিষ্কার (?) আজও বিশ্বের লুন্ঠনকারীদের জীবনদর্শন। কলম্বাসের বাহামা দ্বীপে অবতরনের সময় অর্থাৎ, আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের জন্মলগ্নে আধুনিক বিজ্ঞান বিকাশ লাভ করতে শুরু করেছে মাত্র।
তখনও প্রযুক্তিবিদ্যার সঙ্গে তাত্ত্বিক বিজ্ঞানের আত্মিক সম্পর্ক প্রগাঢ় হয়ে গড়ে ওঠেনি। কালের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সে সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়েছে।
প্রযুক্তির প্রগতির মানদন্ড একটিইঃ অপরকে বঞ্চনা করা এবং শোষন করার ক্ষমতা। সুতরাং, প্রযুক্তির সঙ্গে তাত্ত্বিক বিজ্ঞানের আত্মিক বন্ধন বিজ্ঞানের পক্ষে শুভ হয় নি। শুভ হয়নি মানুষের পক্ষেও।
সে জন্যই আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের মানুষ অর্থাৎ অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন মানুষেরা কখনোই প্রযুক্তিবিদ্যা এবং তার পরম আত্মীয় তাত্ত্বিক বিজ্ঞানকে বন্ধু হিসাবে গ্রহন করতে পারে নি। এই গ্রহন করতে অক্ষমতার জন্য শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন দেশের জনসাধারনই দায়ী নয়, সাম্রাজ্যাবাদের জন্মলগ্ন থেকেই শোষক দেশগুলো এ ব্যাপাবে এক দুর্ভেদ্য বর্মে তাদের ‘বঞ্চনার নীতি’কে সুরক্ষিত করেছিল। আমাদের সংগ্রাম জীবন সংগ্রাম, আর ওদের সংগ্রাম আমাদের শোষন করার অধিকারের জন্য সংগ্রাম। সে সংগ্রামে মারণ প্রযুক্তিতে শ্রেষ্টত্ব যেমন গুরুত্ববহ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিকারকে যথাসম্ভব অজ্ঞ রাখা।
অনেকে মনে করেন প্রযুক্তিবিদ্যা এবং বিজ্ঞানের কোনো জাতি নেই, কোনো বন্ধু নেই, কোনো শত্রু নেই।
এরা বারবনিতার মতো। যথোচিত মূল্য পেলে এরা যে কোনো প্রেমিককে সেবা করতে প্রস্তুত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।