আধুনিক জলদস্যু
জলদস্যুদের বিবরন দিতে গেলে কয়েক শতাব্দি পেছনে তাকাতে হবে। আরো নির্ভূল ভাবে বলতে গেলে ১৩ শতাব্দির দিকে তাকাতে হবে। জলদস্যুরা ছিল এমন কিছু দল যারা ছিল সমাজের জন্য হুমকি স্বরুপ। বিশ্বাস করি আর নাই করি তারা এখনো সমাজের জন্য হুমকি। সংবাদ মাধ্যম, টেলিভিশন, চলচিত্র শুধুমাত্র জলদস্যুদের দস্যুতাই দেখায়না, যার কারনে আমরা অনেক সময় মনে করি জলদস্যুতা হচ্ছে কিছুটা অতীত, নায়কচিত, বুদ্ধিমান অপরাধি।
তারা মুক্ত জীবন যাপন করে, ভারি আহার করে এবং শ্রেষ্ট সুরা পান করে। তারা তাদের বাহিনী নিয়ে বসেথাকে স্বর্ন ও প্রাচুর্যের শিখরে।
সর্বপরি এটা হচ্ছে জলদস্যুদের দারুন শিহরন মূলক একটি ছবি। অনেকটা বাধাই করা চিএ কর্মের মত। কিন্তু বাসত্মবিক অর্থে জলদস্যুদের জীবন মোটেই এই রকম নয়।
এখানে কোন নায়কচিত ব্যাপার ছিলনা। তারাছিল নোংরা চোরের মত, অপুষ্টিতে ভোগা। কোন শহরে ধরাপরলে তাদেরকে ফাঁশিতে ঝোলান হতো। জলদস্যুরা ছিল অত্যাচারি, লুটেরা এবং তারা সহজেই নিরঅপরাধ সাধারন মানুষকে হত্যা করত। তারা নিরঅপরাধ মানুষকে চরম অত্যাচার করত যতক্ষননা তাদের মৃত্যু হয়।
জলদস্যুরা কখনই ভাববিলসী (ফগমৃসটহ)) ছিলনা এবং এখনো নেই।
প্রথম দিকের জলদস্যুদের ভেতর ভাইকিংরা অন্যতম। বলাহত ভাইকিংরা ছিল শামত্ম ও ভদ্রলোক। তারা কৃষিকাজ করা পছন্দ করত যখন গ্রীন ল্যান্ড সবুজ ছিল তার উর্বরা জমি কৃষিকাজের জন্য সহায়ক ছিল। কিন্তু দিনে দিনে ঠান্ডা এবং অতিরিক্ত বরফ জমার কারনে তারা আর দীর্ঘ সময় ফসল ফলাতে পারতনা।
তাই টিকেথাকার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠল, তারা ঘুরে দারাল জলদস্যুতা এবং উন্নতির দিকে।
ভাইকিংরা সমগ্র ইউরোপের সমসত্ম উপকুলে আক্রমন করেছে। ইংল্যন্ড থেকে ব্লাক সী এবং পারসিয়ার সবধরনের নৌযানে এরা আক্রমন করেছে। তাদেরকে জনগনের ভয় হিসেবে বিবেচনা করা হত। এটা বলতে পারি যে সত্যিকার অর্থে ইউরোপের ঐ পরিমান ক্ষমতা ছিলনা যে তারা ভাইকিংদের হাত থেকে ইউরোপের সমসত্ম উপকুলিয় শহরগুলো প্রতিরক্ষা করবে।
এটা ছিল ভাইকিংদের সবচেয়ে বড় সুবিধা। জলদস্যুতার জন্য যে শুধু ভাইকিংরাই দায়ি তা নয়। এটা ছরিয়ে পরেছিল সমগ্র পৃথিবীতে, আফ্রিকা হতে ভারত এমনকি চায়নাতে।
১৯ শতকের দিকে জলদস্যুরা মধ্যপ্রাচ্যে উন্নতি করতে লাগল। তাদের প্রধান নিশানা ছিল চাইনিজ মালবাহী জাহাজগুলি।
তখন তারা নিজেদের অনেক শক্তিমান মনেকরতে লাগল এবং উপকুলীয় গ্রামগুলি থেকে কর দাবি করতে থাকল।
যখন আমরা জলদস্যুদের ব্যাপারে চিমত্মা করি তখন সাধারনত চায়না এবং পূর্ব ইউরোপের কথা চিমত্মা করিনা। আমরা চিমত্মা করি ক্যারিবিয়ান সাগরের কথা। যদিও এটা আরেকটা জায়গা যেখানে জলদস্যুরা অনেক সফল। আমরা ভাবি ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্রো- এর কথা যদিও এটা শধুত্র একটা ডিজনি চরিত্র মাত্র।
বর্তমান সময়ের জলদস্যুরা বাঁকা তলোয়ার ও কামান ভরা জাহাজ নিয়ে যুদ্ধ করেনা। এখন তাদের আছে স্প্রীড বোট, ভারি মেশিন গান। তারা জাহাজ ও এর অবস্থান সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানে, জাহাজ ডাকাতি করে কোথায় নিয়ে রাখবে তাও আগেথেকে ঠিক করা থাকে।
অনেক সময় জলদস্যুরা জাহাজে বাহিত মাল গ্রাহ্য করেনা তারা জাহাজকে নিরাপদ যায়গায় নিয়েযায় এবং টাকা দাবি করে। কখনো জাহাজের নাবিকদের হত্যা করে কোন বন্দরে জাহাজটি বিক্রি করে দেয়।
সেখানে জাহাজটি রংকরে নতুন নাম দিয়ে ও ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে আবারো বিক্রি করা হয়। অনেক সময় জাহাজের নাবিকদের জিম্মি করে মুক্তিপন দাবি করা হয়। কিন্তু বাসত্মবিক অর্থে তারা দ্রুত টাকা চায়।
বর্তমান জাহাজে আক্রমন করা খুবই সহজ। কারণ জাহাজে যে নাবিকরা কাজ করে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে এমনকি তাদের অস্ত্র চালানোরও কোন প্রশিক্ষন নেই।
তাই নাবিকদের জন্য প্রতিঘাত করা কঠিন হয়ে পরে।
বর্তমান সময়ে সংবাদ মাধ্যমে জলদস্যুতার খবর খুব বেশী শেনাযায়না। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে অন্যকথা। ১৯৯০ সালে প্রায় ১০০ জলদস্যুতার বিবরন পেশ করা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর ২০০ এরও বেশী জলদস্যুতার খবর নথিভূক্ত করা হয়।
জলদস্যুতার সমস্যা আগেছিল এখনও আছে এবং প্রতি বছর এরসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু এ ব্যপারে তেমন কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে অবাক হই !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।