চাই একটি সুন্দর বসুন্ধরা
মিডিয়া বা প্রচার মাধ্যমগুলোর মুসলিম আক্রমণের সেরা অস্ত্র- "মুসলমানরা মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী"
১ম র্পবের পর শেষ র্পব
৪. 'মৌলবাদ' (Fundamentalism) শব্দের আভিধানিক অর্থ-
ওয়েবষ্টার ডিকশনারি অনুযায়ী 'মৌলবাদ' হল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আমেরিকার প্রোটেষ্ট্যান্ট মতবাদী খ্রিষ্টানদের একটি আন্দোলনের নাম। এটি ছিল আধুনিকতাবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া, বাইবেলের অকাট্যতার উপর একটি জোর প্রচেষ্টা। তা শুধু বিশ্বাস ও শিক্ষা সক্রান্ত ব্যাপারে নয় বরং সাহিত্য ও ঐতিহাসিক তথ্যাদি সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও। এই আন্দোলন বাইবেলকে আক্ষরিক অর্থে 'গড'-এর বাণী বলে বিশ্বাস করার উপর জোর দেয়। যা হোক 'মৌলবাদী' এমন এক শব্দ যা সূচনায় খ্রিষ্টানদের একটি দলের বিশ্বাস ও ও র্কমের জন্যে ব্যবহৃত হয়েছিল।
যারা বিশ্বাস করতো যে বাইবেল আক্ষরিক অর্থেই 'গড'-এর বাণী যাতে কোন ভূল নেই। অক্সফোর্ড ডিকশনারি র্পূবের র্ভাসনে 'মৌলবাদী' শব্দের অর্থ বলা হয়েছে যে, "মৌলবাদী হল একজন ব্যক্তি, যে কোন র্ধমের প্রাচীন শিক্ষা বা মতবাদকে কঠোরভাবে অনুসরণ করে। " তবে অক্সফোর্ড ডিকশনারি নতুন সংস্করণে পাবেন- "মৌলবাদী হল একজন ব্যক্তি, যে কোন র্ধমের প্রাচীন শিক্ষা বা মতবাদকে কঠোরভাবে অনুসরণ করে, বিশেষ করে ইসলাম। " এখানে শেষে উদ্দেশ্যমূলকভাবে 'বিশেষ করে ইসলাম'-এটা নতুন করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে 'Fundamentalism' (মৌলবাদ)- এর অর্থ দেওয়া হয়েছে- "যেকোন র্ধম বিশেষ করে ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধান এবং নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলা।
"
৫.মুসলমানদের সন্ত্রাসী অপবাদ-
আজকে মুসলমানদের বলা হচ্ছে সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসের সহজ সাধারণ সংজ্ঞা হল- "যে লোক অন্যকে সন্ত্রস্ত করে। উদাহরণস্বরুপ, একজন অপরাধী পুলিশ দেখলে সন্ত্রস্ত বোধ করে, তাহলে এই অপরাধীর জন্যে পুলিশ হলো সন্ত্রাসী। এভাবে দেখলে আমি বলবো সকল মুসলমানের সন্ত্রাসী হওয়া উচিত, তবে সমাজ ও মানবতা বিরোধী ও অপরাধীদের জন্যে। যখনই কোন অপরাধী, কোন র্ধষক, কোন ডাকাত কোন মুসলিমকে দেখবে, সে তখন সন্ত্রস্ত হবে।
আর এ কথাই বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে-
"যারা আল্লাহর শত্রু এবং তোমাদের শত্রু তাদেরকে সন্ত্রস্ত রাখার জন্যে তোমরা সাধ্য অনুযায়ী তোমাদের অস্ত্র ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখ। " {সূরা আনফাল, আয়াত ৬০}
যারা মানবতার বিরুদ্ধে তাদের সর্ম্পকে এই আয়াত প্রযোজ্য। তাদের সর্ম্পকে কোরআন বলছে তাদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করো। আমি জানি সাধারণ অর্থে 'সন্ত্রাস' শব্দটার অর্থ- নিরীহ মানুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করা। সেই অর্থে কোন মুসলমানেরই উচিত হবে না নিরীহ মানুষকে হত্যা করা, ভীত সন্ত্রস্ত করা।
এটি নিষিদ্ব। এখানে কোরআন শুধু তাদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করতে বলেছে, যারা আল্লাহর শত্রু ও মানবতা বিরোধী।
৬. একই ব্যক্তিকে বিভিন্ন খেতাবে ভূষিত-
একই ব্যক্তিকে একই কাজের জন্যে বিভিন্ন বিশেষণে ভূষিত করা হয়েছে, যেমন- দেশপ্রেমিক ও সন্ত্রাসী। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, পাকিস্তানীদের কাছে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, যারা স্বাধীনতার জন্যে সংগ্রাম করেছিল, তাদেরকে তারা সন্ত্রাসী মনে করত। কিন্তু আমাদের কাছে তারা (মুক্তিযোদ্ধারা) ছিল দেশ প্রেমিক।
একই ব্যক্তি; কিন্তু দুটি বিষেশণ। এভাবে একই ব্যক্তিকে র্কাযাবলীর জন্য বিভিন্ন লেবেল বা উপাধি দেওয়া হয়। কাজেই কোন ব্যক্তি সর্ম্পকে ভালো-মন্দ মন্তব্য করার আগে তার কথা শুনে নিতে হবে। পক্ষে-বিপক্ষে সব যুক্তিই শুনে নিতে হবে। অবস্থা অনুসারে বিশ্লেষণ করতে হবে, হুট করে কাউকে সন্ত্রাসী বলা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উদ্দেশ্য, লক্ষ ও তার র্কাযাবলীর কারণ সামনে রেখে সে অনুসারে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে।
৭. পরিশিষ্ট: ইসলাম অর্থ শান্তি-
'ইসলাম' শব্দটি 'সালাম' শব্দ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ 'শান্তি'। ইসলাম শান্তির র্ধম যার মূলনীতিসমূ তার অনুসারীদের সমগ্র বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার শিক্ষা দেয় এবং তা বজায় রাখার জন্য কাজ করে যেতে বলে। অতএব প্রত্যেকটি মুসলিমকে মৌলবাদী হতে হবে অর্থাত- শান্তির র্ধম ইসলামের মূলনীতিসমূহ তাকে যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। সমাজ বিরোধী, মানবতা বিরোধী শক্তিগুলোর জন্যে সে হবে আতংক সৃষ্টিকারী (শাব্দিক অর্থে সমাজ ও মানবতা বিরোধীদের কাছে সন্ত্রাসী), তাহলেই সমাজে শান্তি ও ন্যায়-ইনসাফ ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পাবে এবং এ বৃদ্ধির ধারা বজায় থাকবে।
মূলঃ ডা. জাকির নায়েক।
সমাপ্ত
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।