আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোটের লড়াই জোটের লড়াই

সিলেট
আরিফের ইশতেহার, কামরানের পক্ষে মাঠে নাসিম
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নগর উন্নয়নে ১১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করলেন সিলেট সিটি নির্বাচনে ১৮ দল সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়র নির্বাচিত হলে এ ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিনি গড়ে তুলবেন আধুনিক মডেল নগরী, এমন প্রতিশ্র“তিই দিয়েছেন। অন্যদিকে কামরানকে বিজয়ী করার আহŸান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে কামরানের পক্ষে সমর্থন দিতে তিনি সিলেটবাসীর প্রতি আহŸান জানান। জিন্দাবাজারের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।

সম্মিলিত নাগরিক জোটের আহŸায়ক অধ্যাপক আতাউর রহমান পীর তা ঘোষণা করেন। ঘোষিত দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরাতন কারাগারের জায়গায় সাইবার সিটি গড়ে তোলা, পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের গৃহীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ছড়া-খাল উদ্ধার ও খনন, যানজট ও পরিবহন সংকট দূরীকরণে টাউন বাস সার্ভিস সম্প্রসারণ, বিআরটিসি বাস ও ট্যাক্সিক্যাব চালু, শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারে নগর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, বস্তিতে বস্তিতে ছিন্নমূল শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে স্যাটেলাইট ক্লিনিক, বস্তিবাসীর সেবায় ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু, পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে বর্জ্য অপসারণে লোকবল ও যানবাহন বৃদ্ধি, বর্জ্য থেকে সার ও বায়োগ্যাস উৎপাদন, প্রবাসীদের নানা সমস্যা সমাধানে নগর ভবনে প্রবাসী সেবাকেন্দ্র স্থাপন ও ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সম্মিলিত নাগরিক জোটের সদস্যসচিব আবুল কাহের শামীম প্রমুখ। এদিকে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে সৎ ও ভদ্র ব্যক্তি উল্লেখ করে তাকে বিজয়ী করার আহŸান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। নগরীর তেলিহাওরে কামরানের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে গতকাল তিনি এ আহŸান জানান।

নাসিম বলেন, ‘কর্মগুণে কামরান বার বার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সিলেটের মানুষ কমিশনার থেকে পৌর চেয়ারম্যান এবং পরে মেয়র পদে তাকে দুবার নির্বাচিত করেছেন। উন্নয়নের জন্য কামরানকে ফের নির্বাচিত করা উচিত। ’ তিনি বলেন, ‘কামরানের রাজনৈতিক অবস্থান তাকে আরও ওপরে নিয়ে যেতে পারত। কিন্তু তিনি সিলেটবাসীর খেদমতের জন্য এখানে পড়ে আছেন।

তাই সিলেটবাসীর উচিত তাকে বঞ্চিত না করা। কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে এবারও নগরবাসী পাশে থেকে কামরানকে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী। ’ এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগ নেতা ইমরান আহমদ এমপি, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি, মতিউর রহমান চৌধুরী এমপি, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, আবু জাহিদ এমপি প্রমুখ।
কামরানের গণসংযোগ : নগরীর ছড়ারপার, কামালগড়, কুয়ারপার, বাগবাড়ী, কানিশাইল ও দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর বিসিক শিল্প এলাকায় কাল গণসংযোগ করেন কামরান। এ সময় তিনি বলেন, মানুষ সন্ত্রাস আর অরাজকতার রাজত্ব চায় না।

তাই নগরবাসী এবারও সন্ত্রাস আর অপশক্তির বিরুদ্ধে রায় দেবেন।
আরিফের গণসংযোগ : আরিফ গণসংযাগ চালান নগরীর উপশহর, শাহজালাল উপশহর হাইস্কুল, শাহজালাল আদর্শ হাইস্কুল, বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী স্টাফ কোয়ার্টার ও জালালাবাদ গ্যাস অফিসে। এ সময় তিনি বলেন, ‘একটি পরিকল্পিত নগরী গড়ার লক্ষ্যেই আমি প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনের আয় দিয়ে সিলেটে নগর বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলব। ’
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম নয় : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী বলেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি করে ওয়ার্ডে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হলেও এ পদ্ধতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজে লাগানো হবে না।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নীতিমালায় ভোট গ্রহণ পদ্ধতিতে ইভিএমের কথা উল্লেখ না থাকায় তা সম্ভব হবে না। সিলেটের আলমপুরে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ৬২টি কেন্দ্রে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ।

 
রাজশাহী
কঠোর অবস্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত, ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা
ইসিতে অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজশাহীতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। প্রচারণার জোয়ারে প্রার্থীরা ভুলে যাচ্ছেন আচরণবিধির কথা। তবে এসব পরিস্থিতিকে কোনোমতেই ছাড় দিচ্ছেন না ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দু-একটি অর্থদণ্ডের ঘটনা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী ১৪ দল সমর্থিত এ এইচ এম খায়রুজ্জামান চৌধুরী লিটন ও ১৮ দল সমর্থিত মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এমনকি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তুলেছেন তারা। সর্বশেষ রবিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বুলবুলের তিন কর্মী ও লিটনের এক সমর্থককে জরিমানা করেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বুলবুলের পথসভা বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে এক কর্মীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

এ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের মতে, প্রতিপক্ষের নির্দেশে তাদের ভালো অবস্থানকে নস্যাৎ করার জন্যই এমনটা করা হচ্ছে। এ নিয়ে একই দিন বুলবুল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে লিটনও কম ক্ষুব্ধ নন। তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে ঠিক।

তবে বহু প্রতীক্ষিত গ্যাস সংযোগের পর জনগণ আনন্দ মিছিল করবে এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য কাউকে ধরে নিয়ে হয়রানি করা ঠিক হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, গত সপ্তাহ থেকে প্রার্থীদের আচরণবিধি ভাঙার মাত্রা বেড়ে গেছে। বুধবার বুলবুলের নির্বাচনী অফিসে সিডি বাজানোর অভিযোগে কর্মী মামুন হোসেনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। একই দিন একাধিক মাইক ব্যবহারের অভিযোগে বুলবুলের কর্মী আনোয়ার হোসেনকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট মাপের চেয়ে বড় ডিসপ্লে বোর্ড লাগানোর অভিযোগে লিটনের এক কর্মীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ইসিতে বিএনপি এমপিদের নালিশ : রাজশাহীতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রতিকার চেয়েছেন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির এমপিরা। দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে সাতজন সংসদ সদস্য গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের সঙ্গে দেখা করে তাদের অভিযোগ জানান। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এ সাক্ষাৎ নয় বলে জানান খোকন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে তারা এ অভিযোগ জানিয়েছেন।

  শুক্রবার  পেট্রোবাংলার  চেয়ারম্যান রাজশাহী নগরীর গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ উদ্বোধন করেন। বিদায়ী  মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান চৌধুরী লিটনের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি ছিল গ্যাস সংযোগ। হাবিবুরের ২৯ দফা : নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে ২৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করলেন রাজশাহী সচেতন নাগরিক সমাজ মনোনীত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।
 
বরিশাল
মরিয়া দুই জোট বিরামহীন প্রচার প্রচারণা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে শেষমুহূর্তের বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা চলছে।

কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে গণসংযোগ করছেন মেয়র প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে জয়-পরাজয় পুরো বিভাগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে- সে কারণে দুই জোটই মরিয়া। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের সমর্থনে আনারস প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন আহসান হাবিব কামাল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের প্রতীক টেলিভিশন। হিরণের পক্ষে গতকাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ ও আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়েদুল হক রাসেল।

আগে থেকেই গণসংযোগ করে চলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ছাড়াও জেলা ও উপজেলা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এসে সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিরণের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের প্রার্থী কামালের পক্ষে কয়েক দিন ধরে গণসংযোগ করছেন বিএনপির তিন ভাইস চেয়ারম্যান। তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ-আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম ও বেগম সেলিমা রহমান। কেন্দ্রীয় যুবদলের ১২ সদস্যের একটি দলও বরিশালে এসেছে বলে জানান সংগঠনের নেতা আবদুল খালেক হাওলাদার।

আহসান হাবিব কামাল গতকাল দিনভর নগরীর কাশীপুর চৌমাথা, দিয়াপাড়া ও মানিক মিয়া মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন। শওকত হোসেন হিরণ ২, ৪ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। বিকালে তিনি অশ্বিনী কুমার হলে শিক্ষক সম্মেলনে অংশ নেন। ওদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুন বিএম কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচার চালান। নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আজ বেলা ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, সিটি নির্বাচনের ফল যেদিকে যাবে, সেই জোটই নিয়ন্ত্রণ করবে এ অঞ্চলের রাজনীতি। ফলে প্রধান দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা লাগাতার অবস্থান করে গণসংযোগ করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনে তৃণমূল নেতা-কর্মী ও প্রার্থীরাও মানসিকভাবে চাঙ্গা হয়েছেন। জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক আহŸায়ক অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, ‘সিটি নির্বাচন অরাজনৈতিক হলেও নির্দলীয় নয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রচারে পাঠিয়েছে।

বিভাগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্ব-স্ব মেয়র প্রার্থীকে বিজয়ী করতে তারা মরিয়া। এ নির্বাচনের ফলাফল সংসদ নির্বাচনেও অনেকাংশে প্রভাব ফেলবে। ’ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি বলেন, ‘হিরণকে ১৪ দলসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। বিগত মেয়াদে উন্নয়নের কারণে সব দল-মতের লোক তার পক্ষে। ’ ইউনুস বলেন, ‘১৪ দল এই নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে, তাই বলে মরিয়া নয়।

’ তার মতে, ‘নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে তেমন প্রভাব ফেলবে না। ’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপি বলেন, ‘দেশের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। এমন সময় সরকার চার সিটিতে নির্বাচন দিয়ে দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে চাইছে। তবে আন্দোলনের অংশ হিসেবেই বিএনপি রাজপথ ছেড়ে নির্বাচনের মাঠে। ’ তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও বরিশালে আনারস মানে ধানের শীষ আর টেলিভিশন মানে নৌকা প্রতীক হয়ে গেছে।

এ নির্বাচন একটি টেস্ট কেস। ফল যেদিকে যাবে, তারাই জাতীয় নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। ’ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কামালের বিজয় সুনিশ্চিত দাবি করে তার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী সরোয়ার বলেন, ‘কোনো ধরনের কারচুপি হলে আমাদের রাজপথে যেতে সময় লাগবে না। ’
 
খুলনা
খালেকের বাধা জাতীয় পার্টি, মনি চলছেন জোট গুছিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা
ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের শক্ত বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু। তবে মনিরুজ্জামান মনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ১৮টি দলেরই সমর্থন পেয়েছেন।

তার পক্ষে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিগত নির্বাচনের চেয়ে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে পারেন সদ্য বিদায়ী মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পরই দলের সমর্থন নিয়ে মাঠে নামেন শফিকুল ইসলাম মধু। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরাও জোরেশোরে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। স্থানীয় নেতারা নগরীতে তাদের যে ভোটব্যাংক আছে, তা কাজে লাগাতে চান।

বিশেষ করে শিল্পাঞ্চল খ্যাত খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানা এলাকার কলকারখানার শ্রমিকদের ভোট পক্ষে নেওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। মেয়র প্রার্থী মধু একসময় পাটকলের শ্রমিকদের নেতৃত্বে ছিলেন। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির প্রয়াত নেতা এসএমএ রবের ভক্তদেরও মধুর পক্ষে মাঠে নামানোর চেষ্টা চলছে। এসব কারণেই খালেকের জন্য শক্ত বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে মধুকে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী প্রায় ৪০ হাজার ভোট পান।

শুরুতে ১৮-দলীয় জোটের শরিক জামায়াত ১০ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে। কিন্তু সে লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় জামায়াত বেশ নাখোশ ছিল। এ নিয়ে টানাপড়েনের পর সম্প্রতি মীমাংসা হয়েছে। জামায়াতের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা গত ৮ জুন যৌথ বিবৃতি দিয়ে মনির পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নামার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন। জামায়াতের পাশাপাশি এখন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরাও তার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।

মনির সমর্থনে গঠিত ঐক্যবদ্ধ নাগরিক ফোরামের সমন্বয়কারী বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। জোটের সব দল সর্বশক্তি দিয়ে একাট্টা হয়ে মনির পক্ষে কাজ করছে। ’
মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুল গফফার বিশ্বাস বলেন, ‘১৪ দলের শরিক হলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শফিকুল ইসলাম মধু মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। জাতীয় পার্টির শক্তি-সামর্থ্য যে ফুরিয়ে যায়নি, নির্বাচনে তার প্রমাণ হবে। ’
তবে ১৪-দলীয় জোটের সমন্বয়কারী খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘জাতীয় পার্টি জোটের শরিক দল হিসেবে এখনো আছে।

কেসিসি নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচন। এদিকে তালুকদার আবদুল খালেকের পক্ষে কালো টাকা ব্যবহার ও ভোট কেনার অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষের নেতারা। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীও কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।