গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি।
আবার এল নির্বাচন নির্বাচন খেলা। বাঙ্গলাদেশীদের স্বল্প বিনোদনের নিস্তরঙ্গ জীবনে উৎসবের পরশ নিয়ে এল নির্বাচন। এটা বড়দের খেলা (দু-চার জন খেলে আর বাকিরা ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মত দু-এক ফুটা দুধ পেয়ে নাচানাচি করে)। ছোটবেলায় আমরা ভোট ভোট খেলতাম।
নিজেরাই ভোটে দাড়িয়ে কলম দিয়ে এঁকে পোস্টার বানিয়ে ভাত দিয়ে সেটে রাখতাম।
এবার অবশ্য নানা রকম কারনে খেলোয়াড়রা আগের মত দাপাতে পারবে না। এ খেলা এদেশের মানুষদের জীবনে বড় ধরনের কোন ইতিবাচ পরিবর্তন আনতে পারে না। পাচঁ বছর ধরে চেপে বসা জগদ্দল পাথর গুলো এ সময় ঘাড় থেকে নেমে নানা রঙে সেজে আসে, তাদের সাথে যোগ দেয় নতুন কিছু পাথর। আমরা এর একটাকে পাঁচ বছরের জন্য ঘাড়ে তুলে নেই।
এভাবেই চলে। পাথরগুলোকে এড়িয়ে আগাবার কোন পথ নেই। আমরা কোনটা বেশি ভাল সেটা হিসেব করে নির্বাচন করি না, বিবেচনা করি কোনটা কম খারাপ। কিন্তু প্রতি বার-ই উপলব্ধি করি ইশ্ ভুল হয়ে গেল।
এবার একটা ভোটের গান শুনুন।
গানটি গেয়েছেন হেমন্ত মুখপাধ্যায়। -
ভোট দিয়ে যা, আয় ভোটারআয়। ।
মাছ কুটলে মুড়ো দেব, গাই বিয়োলে দুধ দেব,
দুধ খাবার বাটি দেব, সুদ দিলে টাকা দেব,
ঘি দিলে ওকিল হব, চাল দিলে ভাত দিব।
মিটিঙে যাব না, অবসর পাব না,
কোন কাজে লাগব না:
যদুর কপালে আমার ভোট দিয়ে যা।
।
ভোট দিয়ে যা, আয় ভোটার আয়। ।
আমি ভোটেরও লাগিয়া ভিখারী সাজিনু
ফিরিনু গো দ্বারে দ্বারে। ।
আমি ভিখারী না শিকারী গো?
ওরে হা ছাড়া কেউ না বলিল না,
ক্যানভাস করিনু যারে।
সব হা করেই যে রইল দাদা,
আমি কার হা বুজাই কিসে!
সব হা করেই যে রইল দাদা...
যত ক্যানভাসারের ভাষা, তাতেও পাইনু আশা, ।
বলে সেন্ট পার্সেন্ট ভোট পাব।
আমি তাহাতে ডিনাই করি দুহাতে ডিলাই করি
করি অভিনয় অভিনব।
আমি নেতা কি অভিনেতা, হেতা মালুম করিবে কে তা?
আমি এই রূপে গত বারে ফিরেছিনু দ্বারে দ্বারে,
পেয়েছিনু এই রূপই হোপ গো।
মোরে ভুলাইয়া প্রলোভনে ভোট দিল অন্য জনে
মোর ডিপোজিট মানি হল লোপ গো। ।
আমার মান গেল মানিও গেল
আসমান হতে পড়লাম দাদ,
আমার আশা মান, দু-ই চুর্ণ হল।
মান গেল মানিও গেল....
আমি ভোটার পিরীতি রীতি বুঝিতে নারি
দিনু সন্দেস চড়াইনু মোটর গাড়ী।
দিনু উপড়ি গুজিয়া কিছু পকেটে আদর
বলি রাখো যদি রাখো দাদা, মার তো মার।
হাতে ব্যালট পেপার দিল পোলিং অফিসার,
দেখি কার খেয়ে কার প্রেমে করে অভিসার।
মোরে ভোট তো দিয়েছ দাদা বুঝিনু আসি
দেখি ধীরে ধীরে চলে যায় মুচকি হাসি,
কেহ বাহির করিল কেবল দন্ত পাটি।
শেষে বুঝিলাম করিয়াছে দিনে ডাকাতি।
আমায় মেরেই যে দিল রে।
ঠেলে নিয়ে চড়লে মোটর
মেরেই যে দিল রে...
প্রেত যদি হব মোরে, শোন হে ভোটার,
ভোট যে দিবে না তার মটকাব ঘাড়।
মেরে দিব আমায় মারলে,
যদি আশা থাকে, প্রাণে বাচবার যদি আশা থাকে....
যে জন সুজন ভোট দিবে মোর জন্যে
অর্ধেক রাজত্ব দিব, দিব রাজকন্যে।
দেখে নিও, তোমরা দেখে নিও,
আমর কথার খেলাপ হবে না,
আগে চারা দিয়ে মোরে খাড়া কর
পরে দেখে নিও...
ভোটানন্দ দাস বলে কিন যারে খেল রে
গাছেতে কাঠাল গোঁফে দাও তেল রে।
এমন ফল তো আর পাবে না,
পরের মাথায় ভাংতে হলে এমন ফল তো আর পাবে না।
একটা ফল তো হবেই হবে,
উর্দ্ধ ফল নয় ডাউনফল, একটা ফল তো হবেই হবে........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।